৩৭ বছরের অভিনয় জীবন। কাজ করেছেন ২০০টির বেশি সিনেমায়। প্রথমদিকে বেশ কিছু ছবিতে তিনি নায়িকা ছিলেন। কিন্তু বয়স ৩০ হতে না হতেই টাইপকাস্ট হয়ে গেলেন। মায়ের চরিত্র ছাড়া আর কিছুর অফার আসত না। বয়সে বড় প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের মা হতে হয়েছে একাধিক ছবিতে। তাতে আক্ষেপ নেই। কিন্তু কেন বাংলা ছবির পরিচালকরা তাঁকে অন্য কিছুতে ভাবলেন না, সেটাই অভিমান হয়ে ঝড়ে পড়ছে লাবনী সরকারের গলায়। সিনেমা, সিরিয়াল থেকে যাত্রা। বিনোদনের নানা মাধ্যমে তিনি সিদ্ধহস্ত। সম্প্রতি পা রেখেছেন ওয়েব সিরিজেও। সেখানেও তাঁকে মা-মাসি ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারছেন না ডিরেক্টররা। একঘেঁয়ে চরিত্রে তাঁকে দেখে দর্শক যেমন ক্লান্ত, তেমনি লাবনী সরকার নিজেও বিরক্ত। মাঝে ভেবেছিলেন অভিনয় জগতকে বিদায় জানাবেন। কিন্তু রক্তে সিনেমা ঢুকে গিয়েছে। বের হতে পারেননি। তবে মেগা সিরিয়ালকে বিদায় জানাতে চান তিনি। হরনাথ চক্রবর্তী, স্বপন সাহারা তাঁকে মায়ের রোলে টাইপকাস্ট করে দিয়েছেন। একঘেয়েমি এলেও এটা ঠিক, ওই সব চরিত্র তাঁকে গ্রাম বাংলার মা-মাসীদের চোখে নয়নের মণি করে তুলেছে। তবে অভিনেত্রী লাবনী সরকার ঠিক করে নিয়েছেন, আর টাইপকাস্ট হবেন না। ভালো চরিত্র এলে তবেই অভিনয় করবেন। ধীরে ধীরে বিদায় জানাতে চান বাংলা সিনেমার ইন্ডাস্ট্রিকে।
জন্ম ১৯৬২ সালের ২৫ অক্টোবর কলকাতায়। যদিও অদিবাড়ি বাংলাদেশের বিক্রমপুরে। বাবার নাম মুকুল কান্তি সরকার। মা কৃষ্ণা সরকার। বিয়ে করেছেন অভিনেতা কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বিয়ে নিয়ে অবশ্য নানা বিতর্ক আছে। শোনা যায়, কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগের পক্ষের স্ত্রীকে অন্যায়ভাবে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। তিনি এখন একটি পাগলাগারদে থাকেন। লাবনী এবং কৌশিক ব্যানারজীর ছেলের নাম সুস্নাত বন্দ্যোপাধ্যায়। বাবা-মায়ের মতো তিনি অবশ্য অভিনয় জগতে আসেননি।
কেন ছাড়তে চান অভিনয় ?
দূরদর্শনে জোছন দস্তিদারের পরিচালনায় সিরিয়াল দিয়ে অভিনয়ে হাতে খড়ি হয় লাবনী সরকারের। সালটা ছিল ১৯৮৭। তখন জোছন দস্তিদারের সহকারী ছিলেন দেবাংশু সেনগুপ্ত। যিনি পরবর্তীকালে ‘মহাপ্রভু’, ‘রাজেশ্বরী’-এর মতো ধারাবাহিকের পরিচালক ছিলেন। দেবাংশু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাবনীকে আবিষ্কার করেন। বড়পর্দায় আসেন অপর্ণা সেনের হাত ধরে। ছবির নাম ‘সতী’(১৯৮৯)। তারপর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। কাজ করেছেন তরুণ মজুমদার, তপন সিনহা, ঋতুপর্ণ ঘোষ, বুদ্ধদেব দাশগুপ্তদের মতো পরিচালকের সঙ্গে। নায়িকা হয়েছেন ‘নবরূপা’, ‘ লেডি ডাক্তার’, ‘আপনজন’, ‘হুইল চেয়ার’, ‘সংঘর্ষ’ ইত্যাদি বেশ কিছু ছবিতে। সময় যত গড়িয়েছে, প্রথমে দিদি, তারপর বউদি, শেষে মা হিসেবে পর্দায় ফিরে ফিরে এসেছেন লাবনী। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইন্টার ন্যাশনাল রিলেশনশিপ নিয়ে স্নাতক হওয়ার পর অভিনয়কে পেশা হিসেবে বেছে নেন। লাবনী সরকারের কথায়, কোন কিছু ভেবে তিনি অভিনয়ে আসেননি। তখন মনে হয়েছিল, কোন কিছু হারানোর তার নেই। এখনও সেটাই বিশ্বাস করেন। অভিনয়ের সংখ্যা কমাতে চান কারণ তিনি বিশ্বাস করেন, পুরনোরা জায়গা না ছাড়লে নতুনরা উঠবে কী করে ? একটা সময়ের পর পুরনোদের নিজেদের স্থান ছাড়তে হয়। এত বছরের অভিনয় জীবনে অনেক ভালোবাসা, সম্মান তিনি পেয়েছেন। এবার ধীরে ধীরে বিদায় জানাতে চান। তবে ভালো রোল এলে অবশ্যই করবেন বলে জানিয়েছেন লাবনী সরকার।জন্ম ১৯৬২ সালের ২৫ অক্টোবর কলকাতায়। যদিও অদিবাড়ি বাংলাদেশের বিক্রমপুরে। বাবার নাম মুকুল কান্তি সরকার। মা কৃষ্ণা সরকার। বিয়ে করেছেন অভিনেতা কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বিয়ে নিয়ে অবশ্য নানা বিতর্ক আছে। শোনা যায়, কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগের পক্ষের স্ত্রীকে অন্যায়ভাবে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। তিনি এখন একটি পাগলাগারদে থাকেন। লাবনী এবং কৌশিক ব্যানারজীর ছেলের নাম সুস্নাত বন্দ্যোপাধ্যায়। বাবা-মায়ের মতো তিনি অবশ্য অভিনয় জগতে আসেননি।
Laboni sarkar filmography
সতী (১৯৮৯)
হুইল চেয়ার (১৯৯৪)
চরাচর (১৯৯৪)
প্রতিবাদ (২০০১)
কথা দেইথিলি মা কু (ওড়িয়া) (২০০২)
গুরু (২০০৩)
কালপুরুষ (২০০৫)
চাঁদের বাড়ি (২০০৮)
চ্যালেঞ্জ (২০০৯)
মা আমার মা (২০০৯)
নৌকাডুবি (২০১০)
চাঁদের পাহাড় (২০১৩)
আমাজন অভিযান (২০১৭)
No comments:
please do not enter any spam link in the comment box