jagannath rath yatra: কেন রথের কাঠ কাটতে লাগে সোনার কুড়ুল, জেনে নিন রথযাত্রার এমন অজানা কাহিনী

jagannath rath yatra: কেন রথের কাঠ কাটতে লাগে সোনার কুড়ুল, জেনে নিন রথযাত্রার এমন অজানা কাহিনী
রথারূঢ়া গচ্ছন পথিমিলিত ভূদেবপটলৈঃ

স্তুতি প্ৰাদুৰ্ভাবং প্রতিপদমুপাকর্ণ্য সদয়ঃ।

দয়াসিন্ধুর্বন্ধু সকলজগতাংসিন্ধুসদয়ো

জগন্নাথঃ স্বামী নয়নপথগামী ভবতু মে॥

পঞ্জিকা অনুসারে, প্রতি বছর আষাঢ় মাসে শুক্ল দ্বিতীয়ায় দাদা বলরাম, বোন সুভদ্রাকে সঙ্গে নিয়ে মাসির বাড়ি যান প্রভু জগন্নাথ। মাসির বাড়ি অর্থাৎ রাজা ইন্দ্রদ্যুন্মের স্ত্রী গুন্ডিচা। এটাই হল জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা (jagannath rath yatra)। সেখানে সাতদিন কাটানোর পর আবার মন্দিরে ফিরে আসেন তিনি। যাকে উল্টোরথ বলা হয়। ভারতের ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে মহাধূমধামে রথযাত্রা পালিত হয়। এছাড়া ইস্কনের উদ্যোগে বিদেশের বিভিন্ন অংশে রথ টানা হয়। তবে ভারতের মধ্যে সবথেকে প্রসিদ্ধ ওড়িশার পুরীর রথযাত্রা। তিনটি সুসজ্জিত রথে প্রভু জগন্নাথ দেব যাত্রা করেন। আর তা দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে প্রচুর ভক্ত সমাগম হয়। দেশের অন্যতম বড় festival পুরীর রথ বিদেশীদের কাছে বিশেষ আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। জানেন, এই যাত্রার প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় সেই বৈশাখ মাস থেকে। অক্ষয় তৃতীয়ার দিন থেকে রথ নির্মাণ শুরু করেন শিল্পীরা।
jagannath rath yatra: কেন রথের কাঠ কাটতে লাগে সোনার কুড়ুল, জেনে নিন রথযাত্রার এমন অজানা কাহিনী

সোনার কুড়ুল দিয়ে কাটা হয় কাঠ

জগন্নাথ দেবের রথ তৈরি করতে দু’মাস সময় লাগে। প্রচুর নিয়ম মেনে সেটা প্রস্তুত হয়। প্রধান বিষয় হল, কাঠ নির্বাচন। রথ নির্মাণে কাটা কাঠ ও পেরেক ব্যবহার হয় না। কাঠ হতে হবে সোজা ও খাঁটি। রথ নির্মাণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারিগররা সেখানেই থাকেন। কোনও রকম আমিষ খাওয়া চলবে না। মন্দিরের প্রসাদ খেয়ে থাকবেন। কঠোর ব্রহ্মচর্য মেনে চলতে হবে। পরিষ্কার পোষাকে ও শুদ্ধ মনে রথ তৈরি করতে হয় কারিগরদের। তবে পরিবারে যদি কোনও মৃত্যু বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে, তবেই সেই কারিগর সরে আসতে পারবেন।
jagannath rath yatra: কেন রথের কাঠ কাটতে লাগে সোনার কুড়ুল, জেনে নিন রথযাত্রার এমন অজানা কাহিনী

অক্ষয় তৃতীয়ার দিন থেকে রথ নির্মাণ শুরু হয়ে যায়। রথের জন্য নিম ও হাঁসি গাছের কাঠ ব্যবহার করা হয়। জঙ্গল থেকে সংগ্রহ করা হয় সেই কাঠ। তারজন্য বন দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে মন্দির কমিটি। জঙ্গলের মধ্যে গাছ নির্বাচন করে খবর পাঠানো হয়। এরপর মন্দিরের পুরোহিতরা গিয়ে গাছের আগে পুজো দেয়। তারপর সোনার কুড়ুল দিয়ে শুরু হয় গাছ কাটা। তার আগে কুড়ুলটি জগন্নাথ বিগ্রহে স্পর্শ করানো হয়। মোট তিনটি রথ তৈরি হয়। জগন্নাথ, বড় ভাই বলভদ্র ও বোন সুভদ্রার জন্য। তিনটি রথের জন্য মোট ৮৮৪টি গাছের ১২-১২ ফুট কাণ্ড ব্যবহার হয়। কাণ্ডগুলি দিয়ে মূল কাঠামো তৈরি হয়।
jagannath rath yatra: কেন রথের কাঠ কাটতে লাগে সোনার কুড়ুল, জেনে নিন রথযাত্রার এমন অজানা কাহিনী

কীভাবে শুরু হয় রথযাত্রা

পুরাণ অনুযায়ী, শ্রীকৃষ্ণের আর এক রূপ জগন্নাথ। একবার বোন সুভদ্রা প্রভুর কাছে দ্বারকা ঘুরে দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। জগন্নাথ দেব তখন রথে চড়ে বোনকে দ্বারকা ঘুরিয়েছিলেন। সেই থেকে রথযাত্রার প্রচলন। ইতিহাস মতে, ঠিক কবে থেকে পুরীতে রথযাত্রা শুরু হয়েছে, তার নির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায় না। অনুমাণ, হাজারের বছরেরও বেশি সময় ধরে এই প্রথা চলছে। মাঝে ১৫৬৮ সালে পুরীর মন্দিরে হামলা করে লুঠপাঠ চালিয়েছিল বাংলার সুলতানের সেনাপতি কালাপাহাড়। সেই বছর থেকে ১৫৭৭ সাল পর্যন্ত রথযাত্রা বন্ধ ছিল।

No comments:

please do not enter any spam link in the comment box

Powered by Blogger.