মানুষের কাজের মধ্যে কি ফুটে ওঠে রাজনৈতিক মতাদর্শ ? প্রশ্নটা অনেক জটিল। কিন্তু মৃণাল সেনের (Mrinal Sen) ক্ষেত্রে সেটাই উত্তর । তিনি ছিলেন বামপন্থায় বিশ্বাসী একজন মানুষ। তবে কখনো কোন দলের ঝান্ডা ধরেননি। কোন দলের সদস্য পদও নেননি । যদিও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বা সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে বারবার রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন তিনি। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে একজন সচেতন নাগরিকের জন্য সমাজের প্রতি বা বলা ভালো একজন কমিউনিস্টের কর্তব্য কি এইটুকুতেই শেষ হয়ে যায় ? মৃণাল সেন সরাসরি কোন আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হননি ঠিকই তবে নিজের ভাষায় প্রতিবাদকে অন্য মাত্রা দিয়েছিলেন। আর সেই ভাষার নাম সিনেমা। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি ছবিতে সাধারণ অতি সাধারণ মানুষের কথা বলেছেন। তিনি যা বিশ্বাস করতেন সেটাই ছবির ভাষা হয়ে ফুটে উঠত।
সিনেমা নির্মাণের অনেক আগে থেকেই তা নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র নিয়ে ছিল গভীর আগ্রহ। নিয়মিত ফিল্ম সোস্যাইটিতে সিনেমা দেখতেন। পড়াশোনা, লেখালেখির পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ছবি দেখে আন্তর্জাতিক সিনেমার রকমারি ধারাকে নিজের মধ্যে আত্মীকরণ করতেন। তবে তাঁর উপর সবথেকে বেশি প্রভাব ফেলেছিল ষাটের দশকের ফরাসি সিনেমার নিউ ওয়েভ ধারা। সত্যজিৎ রায়ের (Satyajit Roy) উপর যেমন ছিল চল্লিশের দশকের নিও রিয়ালিজমের প্রভাব। মৃণাল সেনকে (Mrinal Sen) টেনেছিল তার দু’দশক পরে ফরাসি সিনেমার নিউ ওয়েব আন্দোলন।
প্রথমদিকে মৃণাল সেন যে ধরণের ছবি নির্মাণ করেছিলেন পরবর্তীকালে খুব সচেতনভাবেই সেখান থেকে সরে আসেন। গোদারের ছবির মতোই নিজের ছবির বিষয়বস্তু নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছেন তিনি। ভেঙেচুরে আবার নতুন করে গড়েছেন। নিজের ছবিতে সরাসরি রাজনৈতিক বার্তা দিয়েছেন তিনি। যা সত্তরের দশকের মতো উত্তাল সময়ে দাঁড়িয়ে মোটেই সম্ভব ছিল না। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছিলেন। ১৯৫৫ সালে মৃণাল সেনের প্রথম ছবি রিলিজ করে ‘রাতভোর’। অভিনয় করেছিলেন উত্তমকুমার (Uttam kumar)। যদিও তখন তিনি মহানায়ক দূরের কথা নায়ক হিসেবেও তেমন গণ্য হতেন না। সেই বছর আরও একটি কালজয়ী ছবি রিলিজ করে । সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’। পথের পাঁচালী যতটা সফল বা সমালোচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছিল, উল্টোদিকে ‘রাতভোর’ চূড়ান্ত ফ্লপ। মৃণাল সেন নিজেও এই ছবিকে জঘন্য বলেছিলেন । ১৯৫৯ সালে তাঁর দ্বিতীয় ছবি ‘নীল আকাশের নীচে’। ছবিতে আমরা দেখি এক চিনা ফেরিওয়ালা এদেশে ব্যবসা করতে এসে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তারপর ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে একাত্ম হয়ে যান । ছবির গান ছিল সুপারহিট।
১৯৬০ সালে ‘বাইশে শ্রাবণ’ ছবিতেও আমরা সেই ফেরিওয়ালা চরিত্র দেখি। তবে তিনি গ্রামবাংলার । দুর্ভিক্ষের সময়ের প্রেক্ষাপটে একটি পরিবারের কাহিনী ছিল ‘বাইশে শ্রাবণ’। পরের ছবি ‘পুনশ্চ’। এবার শহরের প্রেক্ষাপটে মৃণাল সেন দেখান পুরুষ প্রধান সমাজে নারী স্বাধীনতা এবং নারীর অর্থনৈতিক অধিকার কিভাবে খর্বিত হচ্ছে। ছবিটি তেমন চলেনি। ১৯৬৫ সালে মৃণাল সেন তৈরি করলেন ‘আকাশ কুসুম’। মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে অজয় সব বাধা টপকে বড়লোক হতে চায়। আর সেই লক্ষ্যে সে প্রেমে পড়ে বিত্তশালী একটি মেয়ের। কিন্তু যে প্রেমের মধ্যে স্বার্থ আছে তা কখনো সার্থক হতে পারে না। সেই সময়ে দাঁড়িয়ে টেকনিক্যালি ছবিটি অনেক উন্নত ছিল। এরপর কালিন্দীচরণ পানীগ্রাহীর কাহিনী নিয়ে তিনি নির্মাণ করলেন ওড়িয়া ছবি ‘মাটির মানুষ’। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে সামন্ততান্ত্রিক মানসিকতা কিভাবে একটি যৌথ পরিবারকে ভেঙে দেয়, সেটাই এই ছবিতে তুলে ধরেছেন তিনি। কৃষক ও কৃষি জমির অধিকারের প্রশ্ন নিয়ে তৈরি এই ছবি ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে অবশ্যই স্মরণীয় একটি ছবি।
সিনেমা নির্মাণের অনেক আগে থেকেই তা নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র নিয়ে ছিল গভীর আগ্রহ। নিয়মিত ফিল্ম সোস্যাইটিতে সিনেমা দেখতেন। পড়াশোনা, লেখালেখির পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ছবি দেখে আন্তর্জাতিক সিনেমার রকমারি ধারাকে নিজের মধ্যে আত্মীকরণ করতেন। তবে তাঁর উপর সবথেকে বেশি প্রভাব ফেলেছিল ষাটের দশকের ফরাসি সিনেমার নিউ ওয়েভ ধারা। সত্যজিৎ রায়ের (Satyajit Roy) উপর যেমন ছিল চল্লিশের দশকের নিও রিয়ালিজমের প্রভাব। মৃণাল সেনকে (Mrinal Sen) টেনেছিল তার দু’দশক পরে ফরাসি সিনেমার নিউ ওয়েব আন্দোলন।
প্রথমদিকে মৃণাল সেন যে ধরণের ছবি নির্মাণ করেছিলেন পরবর্তীকালে খুব সচেতনভাবেই সেখান থেকে সরে আসেন। গোদারের ছবির মতোই নিজের ছবির বিষয়বস্তু নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছেন তিনি। ভেঙেচুরে আবার নতুন করে গড়েছেন। নিজের ছবিতে সরাসরি রাজনৈতিক বার্তা দিয়েছেন তিনি। যা সত্তরের দশকের মতো উত্তাল সময়ে দাঁড়িয়ে মোটেই সম্ভব ছিল না। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছিলেন। ১৯৫৫ সালে মৃণাল সেনের প্রথম ছবি রিলিজ করে ‘রাতভোর’। অভিনয় করেছিলেন উত্তমকুমার (Uttam kumar)। যদিও তখন তিনি মহানায়ক দূরের কথা নায়ক হিসেবেও তেমন গণ্য হতেন না। সেই বছর আরও একটি কালজয়ী ছবি রিলিজ করে । সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’। পথের পাঁচালী যতটা সফল বা সমালোচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছিল, উল্টোদিকে ‘রাতভোর’ চূড়ান্ত ফ্লপ। মৃণাল সেন নিজেও এই ছবিকে জঘন্য বলেছিলেন । ১৯৫৯ সালে তাঁর দ্বিতীয় ছবি ‘নীল আকাশের নীচে’। ছবিতে আমরা দেখি এক চিনা ফেরিওয়ালা এদেশে ব্যবসা করতে এসে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তারপর ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে একাত্ম হয়ে যান । ছবির গান ছিল সুপারহিট।
১৯৬৯ সালে মৃণাল সেন বনফুলের ছোট গল্প নিয়ে বানালেন ‘ভুবন সোম’। প্রধান চরিত্রে উৎপল দত্তের অসামান্য অভিনয় সিনেমাটিকে অন্যমাত্রায় পৌঁছে দেয় । সৎ অফিসার ভুবন সততা রক্ষা করতে চাকরি থেকে নিজের ছেলেকে বরখাস্ত করতে পারেন। কোন রকম দুর্নীতি তিনি প্রশয় দেন না। কিন্তু প্রত্যেক মানুষের থাকে দ্বিতীয় একটি সত্তা । যেখানে মানুষ ভেঙ্গে চুড়ে যায় । শিকার করতে গিয়ে এক নারীর যৌবনের শিকার হয়ে ভুবন দুর্নীতিকে প্রশয় দিতে পিছ পা হয় না। কারিগরি দিক থেকে এই ছবি অবশ্যই উল্লেখযোগ্য। ছবিটিতে নেপথ্য কণ্ঠে ছিলেন অমিতাভ বচ্চন।
সত্তরের উত্তাল দশকে পৌঁছে সিনেমার ভাষায় পরিবর্তন আনলেন মৃণাল সেন। ইন্টারভিউ (১৯৭১), কলকাতা ৭১ (১৯৭২), পদাতিক (১৯৭৩), কোরাস (১৯৭৪) এবং একদিন প্রতিদিন (১৯৭৫) তাঁর সবথেকে চর্চিত ছবি। এই সিনেমাগুলিতে তাঁর নির্দিষ্ট রাজনৈতিক চেতনা স্পষ্ট হয়েছে । একদিকে নকশাল বাড়ি আন্দোলন, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ছাত্র-যুবকের স্পর্ধাহীন আচরণ ক্রমশ সেই সময়কে জ্বলন্ত করে তুলেছিল। সেই আন্দোলন দমন করতে রাষ্ট্রের নির্মম অত্যাচার হয়তো মৃণাল সেনকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। সেটাই তাঁর পরবর্তী ছবিগুলিতে আমরা দেখতে পাই।
ইন্টারভিউ সিনেমায় এক যুবক স্যুট না পেয়ে চাকরি হারায়। তারপর পাথর হাতে হামলা করে স্যুট পরা মূর্তিতে । নতুন ভারতও যে ঔপেনিবেশিকতার পাঁকে জড়িয়ে আছে, সেই রাজনৈতিক বাস্তবতার উপস্থাপন ঘটে এই ছবিতে। এই ব্যবস্থা ভাঙতে আরও আন্দোলনের প্রয়োজন। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবোধ সান্যাল এবং সমরেশ বসুর তিনটি পৃথক গল্প নিয়ে তৈরি হয় ‘কলকাতা ৭১’। প্রথম গল্পে প্রবল বৃষ্টির রাতে এক বস্তিবাসীর জীবন সংগ্রাম , দ্বিতীয় গল্পে মধ্যবিত্ত পরিবারের অনটনের কাহিনী। আর তৃতীয়টিতে চাল পাচারকারীর কথা । তিনটি গল্পের মূল কথা , মূল্যবোধ বিসর্জন দিয়ে বেঁচে থাকার লড়াই করছেন মানুষগুলি। মৃণাল সেনের কলকাতা ট্রিলজির শেষ ছবি ‘পদাতিক’। পুলিশের ভ্যান থেকে পালানো রাজনৈতিক বন্দি আশ্রয়দাত্রী এক পাঞ্জাবী মহিলার সংস্পর্শে এসে হিংসা নয় , গণসমাবেশের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে । পরবর্তী ছবি ‘কোরাস’-এ সরাসরি রাজনীতির বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। আশির দশকে তাঁর একাধিক ছবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘মহাপৃথিবী’। সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙনের পর যে প্রশ্নগুলি উঠতে শুরু করে সেটাই এই ছবিতে তিনি তুলে ধরেন । এছাড়া ‘খণ্ডহর’, ‘একদিন আচানক’ , ‘আকালের সন্ধানে’ , ‘খারিজ’, ‘চালচিত্র কলকাতা’ এবং ‘মৃগয়া’ তেও তিনি সাধারণ মানুষের আটপৌঢ়ে জীবনের আড়ালে আসাধারণ সব গল্প উপস্থাপন করেছেন । সেই সব সাধারণ মানুষের সুখ দুঃখের মধ্যে মৃণাল সেনের রাজনৈতিক চেতনা বারবার প্রতিফলিত হয়েছে । ২০০২ সালে শেষ ছবি ছিল ‘আমার ভুবন’।
সিনেমা তাঁর রাজনৈতিক ভাষা হলেও কোনদিনই ছক বাঁধা গল্পের আশ্রয় তিনি নেননি । বারবার সিনেমার আঙ্গিক তিনি ভেঙেছেন । কলকাতা ট্রিলজিতে সেই উত্তাল সময়ের ক্ষোভ যন্ত্রণা যেমন ফুটে উঠেছে, তেমনই ভুবন সোম ছবিতে বুর্জোয়া মানসিকতার আসল চেহারাকে টেনে বের করেছেন । ভেঙে দিয়েছেন চেনা মানুষের চেনা চেহারাকে। তবে বামপন্থী মনোভাব থেকে তিনি কোনদিন সরে আসেননি। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত নিজের বিশ্বাসে অটুট থেকেছেন। তিনি নিজেকে মজা করে ‘প্রাইভেট মার্ক্সবাদী’ বলতেন ।
সত্তরের উত্তাল দশকে পৌঁছে সিনেমার ভাষায় পরিবর্তন আনলেন মৃণাল সেন। ইন্টারভিউ (১৯৭১), কলকাতা ৭১ (১৯৭২), পদাতিক (১৯৭৩), কোরাস (১৯৭৪) এবং একদিন প্রতিদিন (১৯৭৫) তাঁর সবথেকে চর্চিত ছবি। এই সিনেমাগুলিতে তাঁর নির্দিষ্ট রাজনৈতিক চেতনা স্পষ্ট হয়েছে । একদিকে নকশাল বাড়ি আন্দোলন, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ছাত্র-যুবকের স্পর্ধাহীন আচরণ ক্রমশ সেই সময়কে জ্বলন্ত করে তুলেছিল। সেই আন্দোলন দমন করতে রাষ্ট্রের নির্মম অত্যাচার হয়তো মৃণাল সেনকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। সেটাই তাঁর পরবর্তী ছবিগুলিতে আমরা দেখতে পাই।
ইন্টারভিউ সিনেমায় এক যুবক স্যুট না পেয়ে চাকরি হারায়। তারপর পাথর হাতে হামলা করে স্যুট পরা মূর্তিতে । নতুন ভারতও যে ঔপেনিবেশিকতার পাঁকে জড়িয়ে আছে, সেই রাজনৈতিক বাস্তবতার উপস্থাপন ঘটে এই ছবিতে। এই ব্যবস্থা ভাঙতে আরও আন্দোলনের প্রয়োজন। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবোধ সান্যাল এবং সমরেশ বসুর তিনটি পৃথক গল্প নিয়ে তৈরি হয় ‘কলকাতা ৭১’। প্রথম গল্পে প্রবল বৃষ্টির রাতে এক বস্তিবাসীর জীবন সংগ্রাম , দ্বিতীয় গল্পে মধ্যবিত্ত পরিবারের অনটনের কাহিনী। আর তৃতীয়টিতে চাল পাচারকারীর কথা । তিনটি গল্পের মূল কথা , মূল্যবোধ বিসর্জন দিয়ে বেঁচে থাকার লড়াই করছেন মানুষগুলি। মৃণাল সেনের কলকাতা ট্রিলজির শেষ ছবি ‘পদাতিক’। পুলিশের ভ্যান থেকে পালানো রাজনৈতিক বন্দি আশ্রয়দাত্রী এক পাঞ্জাবী মহিলার সংস্পর্শে এসে হিংসা নয় , গণসমাবেশের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে । পরবর্তী ছবি ‘কোরাস’-এ সরাসরি রাজনীতির বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। আশির দশকে তাঁর একাধিক ছবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘মহাপৃথিবী’। সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙনের পর যে প্রশ্নগুলি উঠতে শুরু করে সেটাই এই ছবিতে তিনি তুলে ধরেন । এছাড়া ‘খণ্ডহর’, ‘একদিন আচানক’ , ‘আকালের সন্ধানে’ , ‘খারিজ’, ‘চালচিত্র কলকাতা’ এবং ‘মৃগয়া’ তেও তিনি সাধারণ মানুষের আটপৌঢ়ে জীবনের আড়ালে আসাধারণ সব গল্প উপস্থাপন করেছেন । সেই সব সাধারণ মানুষের সুখ দুঃখের মধ্যে মৃণাল সেনের রাজনৈতিক চেতনা বারবার প্রতিফলিত হয়েছে । ২০০২ সালে শেষ ছবি ছিল ‘আমার ভুবন’।
সিনেমা তাঁর রাজনৈতিক ভাষা হলেও কোনদিনই ছক বাঁধা গল্পের আশ্রয় তিনি নেননি । বারবার সিনেমার আঙ্গিক তিনি ভেঙেছেন । কলকাতা ট্রিলজিতে সেই উত্তাল সময়ের ক্ষোভ যন্ত্রণা যেমন ফুটে উঠেছে, তেমনই ভুবন সোম ছবিতে বুর্জোয়া মানসিকতার আসল চেহারাকে টেনে বের করেছেন । ভেঙে দিয়েছেন চেনা মানুষের চেনা চেহারাকে। তবে বামপন্থী মনোভাব থেকে তিনি কোনদিন সরে আসেননি। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত নিজের বিশ্বাসে অটুট থেকেছেন। তিনি নিজেকে মজা করে ‘প্রাইভেট মার্ক্সবাদী’ বলতেন ।
No comments:
please do not enter any spam link in the comment box