কোথায় হারিয়ে গেলেন ‘স্বামী বিবেকানন্দ’ (swami Vivekananda) অভিনেতা সর্বদমন বন্দ্যোপাধ্যায় (Sarvadaman D. Banerjee) ? জানেন এখন কোথায় থাকেন তিনি?
বড় পর্দা হোক বা ছোট পর্দা । স্বামী বিবেকানন্দ (swami Vivekananda) রূপে অবতীর্ণ হয়েছেন একাধিক অভিনেতা। তবে তাঁদের মধ্যে সবথেকে বেশি কে ভালো বিশ্বাসযোগ্য ছিলেন ? কাকে দেখে দর্শক স্বামীজী রূপে ভক্তিতে মাথা নত করেছে ? কার মধ্যে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে ভারতবর্ষের জাগ্রত চেতনার মহান আত্মাকে ? অনেকেই হয়তো ভাবতে বসবেন । তবে ৯০ দশকে যাঁদের ছেলেবেলা বা যুবক বয়স কেটেছে তাঁদের নিশ্চয় মনে থাকবে দূরদর্শনের অন্যতম জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘শ্রীকৃষ্ণ’-এর কথা । যেখানে বড় বয়সের কৃষ্ণ রূপে আমরা দেখে ছিলাম অভিনেতা সর্বদমন ডি বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Sarvadaman D. Banerjee)। আবার ১৯৯৮ সালের অন্যতম চর্চিত সিনেমা ‘স্বামী বিবেকানন্দ’তে স্বামীজীর ভূমিকায় অসাধারণ অভিনয় করেছিলেন । এই ছবিতে শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসের ভূমিকায় অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে জাতীয় পুরষ্কার পান মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakrobarty) । এখন দূরদর্শনের একাধিক ধারাবাহিকের অভিনেতা সর্বদমন বন্দ্যোপাধ্যায় কোথায় হারিয়ে গেলেন ? এখন কোথায় থাকেন তিনি ? জানেন কেমনভাবে কাটচ্ছে তাঁর দিন ?
১৯৯৮ সালের ১২ জুন সারা দেশে রিলিজ করে ‘স্বামী বিবেকানন্দ’ (swami Vivekananda)। সেই বছর ১৫ আগস্ট দূরদর্শনের পর্দায় প্রিমিয়ার হয় এই ছবি। সিনেমাটি তৈরি হতে প্রায় ১১ বছর সময় নিয়েছিলেন পরিচালক জি ভি আইয়ার। ১৯৯৪ সালে রিলিজের জন্য তৈরি হয়ে গেলেও নানা কারণ বশত কয়েক বছর পিছিয়ে যায় । বাণিজ্যিকভাবে সফল না হলেও সমালোচকদের প্রশংসা পেয়েছিল এই সিনেমা। স্বামীজী রূপে সর্বদমন ছাড়া অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেন মিঠুন চক্রবর্তী , মা সারদা রূপে দেবশ্রী রায়, মা ভবতারিণীর ভূমিকায় হেমা মালিনী। এছাড়া ছিলেন প্রদীপ কুমার, তনুজা , রাখি গুলজার, মীনাক্ষী শ্রেষাদ্রী, শাম্মি কাপুর, অনুপম খের, জয়া প্রদা, মামুথি, শশী কাপুর, শোভনা সহ একাধিক অভিনেতা। মিঠুন চক্রবর্তীর অভিনয় যেমন প্রশংসিত হয় , তেমনই স্বামীজী হিসেবে সর্বদমন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেও দর্শক ধন্য ধন্য করে ।
রাজা দুষ্মন্ত এবং বিশ্বামিত্র কন্যা শকুন্তলার ছেলের নাম ছিল ‘সর্বদমন’। রাজা হওয়ার পর জনগণ তাঁকে ‘ভরত’ নামে ডাকতে শুরু করে । যাঁর নাম অনুসারে দেশের নাম হয়েছিল ভারতবর্ষ । আমাদের সর্বদমন বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৬৪ সালের ১৪ মার্চ উত্তরপ্রদেশের উন্নাও জেলার মগরওয়া শহরে । পরিবার ছিল প্রবাসী ব্রাহ্মণ। ছোট থেকেই বাড়িতে ধর্মীয় পরিবেশ পেয়েছেন তিনি। দেশের পুরাণ, মহাভারত, রামায়ণ খুব টানত। পড়াশোনা করেন কানপুরের সেন্ট অ্যালয়সিয়াস স্কুলে। সিনেমার প্রতি ছিল বিশেষ আকর্ষণ । তাই কলেজের গণ্ডি শেষ করে পুনের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। সেখান থেকে পাশ করার পর ১৯৮৩ সালে প্রথম অভিনয়ের সুযোগ পান জি ভি আইয়ারের সংস্কৃত ভাষার ছবি ‘আদি শঙ্করাচার্য’ ছবিতে। প্রথমেই বড় সুযোগ। ছবিটি শ্রেষ্ঠ ছবি হিসেবে জাতীয় পুরষ্কার পেয়েছিল। তারপর তামিল, তেলেগু ভাষায় বেশ কয়েকটি ছবিতে পরপর কাজ করেন । যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘শ্রী দত্ত দর্শনম’, ‘ও প্রেম কথা’ , ‘স্বয়ংক্রুশী’, ‘বল্লভচার্যগুরু’। বেশিরভাগই ধর্মীয় ছবি। তবে নিজের অভিনয় প্রতিভার জোরেই ১৯৯৩ সালে ‘শ্রীকৃষ্ণ’ ধারাবাহিকে সুযোগ পান। পরিচালক রামানন্দ সাগরের প্রথম পচ্ছন্দ ছিলেন তিনি। প্রথমে সিরিয়ালটি রবিবার রাতে ডিডি মেট্রো চ্যানেলে দেখানো হতো। জনপ্রিয়তা বেড়ে যাওয়ায় রবিবার সকালে ন্যাশনাল চ্যানেলে দেখানো শুরু। বাংলাতে জনপ্রিয়তা পেয়েছিল ঠিকই । তবে সবথেকে বেশি হিট হয় উত্তরভারতে। মথুরা – বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ রূপে সর্বদমনের ছবি সর্বত্র লাগানো শুরু হয়েছিল ।
সিনেমায় অভিনয় করে বিপুল অর্থ রোজগার কোনদিনই করতে চাননি। বরং চেয়েছিলেন ভালো কাজ করতে । যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তাঁকে মনে রাখে। তাঁর ইচ্ছা পুরণ হয়েছে । এত বছর পরেও তিনিই ‘শ্রীকৃষ্ণ’ আবার তিনিই ‘বিবেকানন্দ’। তাঁর মধ্যে কৃষ্ণের প্রেম যেমন ছড়িয়ে পড়েছিল। তেমনই স্বামীজীর পৌরুষ উপলব্ধি করতে পেরেছিল দেশবাসী। দুটি চরিত্র তাঁকে শুধু দেশে নয় , বিদেশেও জনপ্রিয়তা দিয়েছিল ।
কেন হারিয়ে গেলেন ?
এখন প্রশ্ন উঠতে পারে এত জনপ্রিয়তা, এত প্রচার পাওয়া একজন অভিনেতা কেন আজ অন্তরালে ? কেন তিনি নিয়মিত অভিনয় করেন না ? এর কারণ হয়তো ধর্মীয় চরিত্রে টাইপকাস্ট হয়ে যাওয়া। ‘শ্রীকৃষ্ণ’ ধারাবাহিক যেমন তাঁকে দিয়েছে অনেক কিছু তেমনই কেরিয়ারে একটা দাগ ফেলে দিয়েছে। কৃষ্ণ রূপে ওভার এক্সপোজ বাধা দিয়েছিল অন্য চরিত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে। পরিচালকরাও তাঁকে নিয়ে অন্য কিছু ভাবেননি । দূরদর্শনে কয়েকটি ধর্মীয় ধারাবাহিকে কাজ করার পর ধীরে ধীরে সিনেমা জগত থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন তিনি। শেষ দেখা গিয়েছিল ‘এম এস ধোনি’ ছবিতে ধোনির কোচের ভুমিকায়। ছোট চরিত্র ছিল।
এখন কোথায় থাকেন সর্বদমন বন্দ্যোপাধ্যায় ?
অভিনয় থেকে বিদায় নিয়ে সমাজসেবাকে জীবনের মন্ত্র হিসেবে বেছে নেন তিনি। উত্তরাখণ্ডের ঋষিকেশের চিল্লা জঙ্গলের কাছে একটি গ্রামে পরিবার নিয়ে থাকেন সর্বদমন ডি বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর একটি এনজিও আছে। যেখানে দুঃস্থ শিশুদের শিক্ষাদান থেকে মহিলাদের স্বনির্ভর করা হয় । এইকাজে তাঁকে সঙ্গ দেন স্ত্রী অলঙ্কৃতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিও মেডিটেশন ও যোগ সাধনা শেখান। পাশাপাশি বৃক্ষরোপণকেও গুরুত্ব দেন দুজনে। অবসর সময় সন্তুর বাজিয়ে কাটান সর্বদমন বন্দ্যোপাধ্যায়। মিডিয়ার আলো থেকে অনেক দূরে এভাবেই দিন কাটছে ছোট পর্দার শ্রীকৃষ্ণর। তবে মানুষ তাঁকে আজও মনে রেখেছে। পৌঢ়ত্বে পৌঁছে যাওয়া সর্বদমন বাবুর কাছেই সেটাই প্রাপ্তি।
১৯৯৮ সালের ১২ জুন সারা দেশে রিলিজ করে ‘স্বামী বিবেকানন্দ’ (swami Vivekananda)। সেই বছর ১৫ আগস্ট দূরদর্শনের পর্দায় প্রিমিয়ার হয় এই ছবি। সিনেমাটি তৈরি হতে প্রায় ১১ বছর সময় নিয়েছিলেন পরিচালক জি ভি আইয়ার। ১৯৯৪ সালে রিলিজের জন্য তৈরি হয়ে গেলেও নানা কারণ বশত কয়েক বছর পিছিয়ে যায় । বাণিজ্যিকভাবে সফল না হলেও সমালোচকদের প্রশংসা পেয়েছিল এই সিনেমা। স্বামীজী রূপে সর্বদমন ছাড়া অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেন মিঠুন চক্রবর্তী , মা সারদা রূপে দেবশ্রী রায়, মা ভবতারিণীর ভূমিকায় হেমা মালিনী। এছাড়া ছিলেন প্রদীপ কুমার, তনুজা , রাখি গুলজার, মীনাক্ষী শ্রেষাদ্রী, শাম্মি কাপুর, অনুপম খের, জয়া প্রদা, মামুথি, শশী কাপুর, শোভনা সহ একাধিক অভিনেতা। মিঠুন চক্রবর্তীর অভিনয় যেমন প্রশংসিত হয় , তেমনই স্বামীজী হিসেবে সর্বদমন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেও দর্শক ধন্য ধন্য করে ।
রাজা দুষ্মন্ত এবং বিশ্বামিত্র কন্যা শকুন্তলার ছেলের নাম ছিল ‘সর্বদমন’। রাজা হওয়ার পর জনগণ তাঁকে ‘ভরত’ নামে ডাকতে শুরু করে । যাঁর নাম অনুসারে দেশের নাম হয়েছিল ভারতবর্ষ । আমাদের সর্বদমন বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৬৪ সালের ১৪ মার্চ উত্তরপ্রদেশের উন্নাও জেলার মগরওয়া শহরে । পরিবার ছিল প্রবাসী ব্রাহ্মণ। ছোট থেকেই বাড়িতে ধর্মীয় পরিবেশ পেয়েছেন তিনি। দেশের পুরাণ, মহাভারত, রামায়ণ খুব টানত। পড়াশোনা করেন কানপুরের সেন্ট অ্যালয়সিয়াস স্কুলে। সিনেমার প্রতি ছিল বিশেষ আকর্ষণ । তাই কলেজের গণ্ডি শেষ করে পুনের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। সেখান থেকে পাশ করার পর ১৯৮৩ সালে প্রথম অভিনয়ের সুযোগ পান জি ভি আইয়ারের সংস্কৃত ভাষার ছবি ‘আদি শঙ্করাচার্য’ ছবিতে। প্রথমেই বড় সুযোগ। ছবিটি শ্রেষ্ঠ ছবি হিসেবে জাতীয় পুরষ্কার পেয়েছিল। তারপর তামিল, তেলেগু ভাষায় বেশ কয়েকটি ছবিতে পরপর কাজ করেন । যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘শ্রী দত্ত দর্শনম’, ‘ও প্রেম কথা’ , ‘স্বয়ংক্রুশী’, ‘বল্লভচার্যগুরু’। বেশিরভাগই ধর্মীয় ছবি। তবে নিজের অভিনয় প্রতিভার জোরেই ১৯৯৩ সালে ‘শ্রীকৃষ্ণ’ ধারাবাহিকে সুযোগ পান। পরিচালক রামানন্দ সাগরের প্রথম পচ্ছন্দ ছিলেন তিনি। প্রথমে সিরিয়ালটি রবিবার রাতে ডিডি মেট্রো চ্যানেলে দেখানো হতো। জনপ্রিয়তা বেড়ে যাওয়ায় রবিবার সকালে ন্যাশনাল চ্যানেলে দেখানো শুরু। বাংলাতে জনপ্রিয়তা পেয়েছিল ঠিকই । তবে সবথেকে বেশি হিট হয় উত্তরভারতে। মথুরা – বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ রূপে সর্বদমনের ছবি সর্বত্র লাগানো শুরু হয়েছিল ।
সিনেমায় অভিনয় করে বিপুল অর্থ রোজগার কোনদিনই করতে চাননি। বরং চেয়েছিলেন ভালো কাজ করতে । যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তাঁকে মনে রাখে। তাঁর ইচ্ছা পুরণ হয়েছে । এত বছর পরেও তিনিই ‘শ্রীকৃষ্ণ’ আবার তিনিই ‘বিবেকানন্দ’। তাঁর মধ্যে কৃষ্ণের প্রেম যেমন ছড়িয়ে পড়েছিল। তেমনই স্বামীজীর পৌরুষ উপলব্ধি করতে পেরেছিল দেশবাসী। দুটি চরিত্র তাঁকে শুধু দেশে নয় , বিদেশেও জনপ্রিয়তা দিয়েছিল ।
এখন প্রশ্ন উঠতে পারে এত জনপ্রিয়তা, এত প্রচার পাওয়া একজন অভিনেতা কেন আজ অন্তরালে ? কেন তিনি নিয়মিত অভিনয় করেন না ? এর কারণ হয়তো ধর্মীয় চরিত্রে টাইপকাস্ট হয়ে যাওয়া। ‘শ্রীকৃষ্ণ’ ধারাবাহিক যেমন তাঁকে দিয়েছে অনেক কিছু তেমনই কেরিয়ারে একটা দাগ ফেলে দিয়েছে। কৃষ্ণ রূপে ওভার এক্সপোজ বাধা দিয়েছিল অন্য চরিত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে। পরিচালকরাও তাঁকে নিয়ে অন্য কিছু ভাবেননি । দূরদর্শনে কয়েকটি ধর্মীয় ধারাবাহিকে কাজ করার পর ধীরে ধীরে সিনেমা জগত থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন তিনি। শেষ দেখা গিয়েছিল ‘এম এস ধোনি’ ছবিতে ধোনির কোচের ভুমিকায়। ছোট চরিত্র ছিল।
এখন কোথায় থাকেন সর্বদমন বন্দ্যোপাধ্যায় ?
অভিনয় থেকে বিদায় নিয়ে সমাজসেবাকে জীবনের মন্ত্র হিসেবে বেছে নেন তিনি। উত্তরাখণ্ডের ঋষিকেশের চিল্লা জঙ্গলের কাছে একটি গ্রামে পরিবার নিয়ে থাকেন সর্বদমন ডি বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর একটি এনজিও আছে। যেখানে দুঃস্থ শিশুদের শিক্ষাদান থেকে মহিলাদের স্বনির্ভর করা হয় । এইকাজে তাঁকে সঙ্গ দেন স্ত্রী অলঙ্কৃতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিও মেডিটেশন ও যোগ সাধনা শেখান। পাশাপাশি বৃক্ষরোপণকেও গুরুত্ব দেন দুজনে। অবসর সময় সন্তুর বাজিয়ে কাটান সর্বদমন বন্দ্যোপাধ্যায়। মিডিয়ার আলো থেকে অনেক দূরে এভাবেই দিন কাটছে ছোট পর্দার শ্রীকৃষ্ণর। তবে মানুষ তাঁকে আজও মনে রেখেছে। পৌঢ়ত্বে পৌঁছে যাওয়া সর্বদমন বাবুর কাছেই সেটাই প্রাপ্তি।
No comments:
please do not enter any spam link in the comment box