সিনেমা থেকে বিদায় নিতে চান সব্যসাচী চক্রবর্তী (Sabyasachi Chakraborty) ? কিন্তু কেন ? কিসের অভিমান ?
অভিনয় থেকে বিদায় নিতে চান সব্যসাচী চক্রবর্তী (Sabyasachi Chakraborty) । টলিউডের বেণুদা। কিন্তু কেন ? কিসের অভিমান ? দীর্ঘ তিন দশকের অভিনয় জীবন। সিনেমার পাশাপাশি নাটক, ধারাবাহিকে চুটিয়ে কাজ করেছেন । বাংলার পাশাপাশি হিন্দি, তামিল ভাষার ছবিতেও দাপটের সঙ্গে অভিনয় । এত সাফল্য , তা সত্ত্বেও রিল লাইফ থেকে বিদায় নিয়ে রিয়েল লাইফে ফিরতে চান সব্যসাচী চক্রবর্তী (Sabyasachi Chakraborty) । সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি নিজের ইচ্ছার প্রকাশ করেছেন । মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ‘ জে কে-১৯৭১’ রিলিজ করেছে বাংলাদেশে। ছবিটি নিয়ে খুবই আলোচনা চলছে। এই সিনেমায় পাকিস্তানি পাইলটের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সব্যসাচী চক্রবর্তী । এই নিয়ে সাক্ষাৎকারের ফাঁকে তিনি বলেন , আমি আর অভিনয় করতে চাই না। এবার অবসর নিতে চাই।
একাধিক বাংলা সিনেমায় অভিনয়ের পর হিন্দিতেও পা রাখেন তিনি। প্রথম ছবি ছিল ‘দিল সে’। বিপরীতে ছিলেন শাহরুখ খান, মনীষা কৈরালা। ‘দিল সে’ সিনেমায় কীভাবে সুযোগ এল, তার পিছনেও আছে একটি গল্প । সব্যসাচী চক্রবর্তী তখন ‘কুয়াশা যখন’ সিরিয়ালে কাজ করছেন । কলকাতায় কোন একটি কাজে এসেছিলেন পরিচালক মণিরত্নম। টিভিতে তিনি সব্যসাচীর অভিনয় দেখেন। তাঁর অভিনয়ের ধরণ দেখে খুবই পচ্ছন্দ হয় । নিজেই যোগাযোগ করেন। সরাসরি অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। এইভাবে সব্যসাচী চক্রবর্তী হিন্দি সিনেমার জগতে পা রাখেন। তারপর তাঁকে আমরা ২০০৪ সালে ‘খাকি’, ২০০৮-এ ‘পরিণীতা’, ‘ফ্যান্টম’, এবং ‘তিন’ ছবিতে দেখা গিয়েছে। হিন্দির পাশাপাশি তাঁর কাছে দক্ষিনী ছবির অফার আসতে থাকে। একাধিক তামিল, তেলেগু, মালায়লম ছবিতে কাজ করেছেন সব্যসাচী চক্রবর্তী । ১৯৮৬ সালে তিনি বিয়ে করেন অভিনেত্রী মিঠু চক্রবর্তীকে । যিনি বাংলা টিভি সিরিয়াল জগতের অত্যন্ত পরিচিত একজন মুখ। দুই ছেলে গৌরব এবং অর্জুন চক্রবর্তী বাংলা সিনেমা-ওয়েবসিরিজের নামী অভিনেতা।
Sabyasachi Chakraborty: ‘আমি শিল্পী নই’
এত ব্যস্ততা, হাতে এত কাজ থাকা সত্ত্বেও কেন সব কিছু ছেড়ে দিতে চাইছেন? উত্তরে সব্যসাচী চক্রবর্তী (Sabyasachi Chakraborty) বলেন , আর ভালো লাগছে না। জীবনে অনেক কিছু করার বাকি আছে। সেগুলি করতে চাই। ভালো ভালো খাবার খেতে চাই। দেশ-বিদেশে বেড়াতে যেতে চাই। অনেক বই পড়ার বাকি আছে, সেগুলি পড়তে হবে। কিন্তু একজন শিল্পী তো নিজের কাজের মধ্যেই বেঁচে থাকতে চান ? আপনি কেন সব কিছু ছাড়তে চাইছেন? এর উত্তরে তিনি জানান, কে বলেছে আমি শিল্পী ? আমি শিল্পী নই । আমাকে জোর করেই অভিনয়ে নিয়ে আসা হয়েছে । আমার আসল জগত যন্ত্রপাতি। আমি আসলে একজন মিস্ত্রি । ওই নিয়েই থাকতেই আমার ভালো লাগে। অভিনয় আমার জন্য নয় । প্রায় ৩০ বছরের অভিনয় জীবনের পর কেন এই উপলব্ধি ? পিছনে কি কোন অভিমান ? সব্যসাচী বাবু জানান, না, কোন অভিমান নেই। আমি অনেক সম্মান পেয়েছি। ফেলুদা হিসেবে কাজ করা আমার জীবনে সবথেকে বড় পাওনা। বয়স হয়ে গিয়েছে। কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলাম। ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়ছি। আর পারছি না। এবার অবসর নিতে চাই।Sabyasachi Chakraborty: প্রথম জীবন
১৯৫৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে জন্ম। বাবা জগদীশ চন্দ্র চক্রবর্তী এবং মা মণিকা চক্রবর্তী আদর করে ছেলের নাম রাখেন ‘ বেণু’। পরবর্তীকালে সিনেমা জগতে তাঁকে এই নামেই ডাকা হতো। দিল্লির অ্যান্ড্রু কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন । পরে বিখ্যাত হংসরাজ কলেজ থেকে বিএসসি ডিগ্রি পান। ১৯৭৮ সালে তিনি দিল্লিতে এএমআই পরীক্ষায় পাস করেন । প্রথম অভিনয় জোছন দস্তিদারের টেলিসিরিয়াল ‘ তেরো পার্বণ’। এর ধারাবাহিক তাঁকে ঘরে ঘরে পরিচিতি দিয়েছিল। এরপর তিনি দূরদর্শনের পর্দায় ‘রুদ্রসেনের ডায়েরি’ ধারাবাহিকে প্রথমবার গোয়েন্দা হিসেবে অবতীর্ণ হন । তবে বাঙালি তাঁকে ‘ ফেলুদা’ হিসেবে সবথেকে বেশি গ্রহণ করেছিল । সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের পর তিনিই ছিলেন সবথেকে বেশি জনপ্রিয় ফেলুদা। প্রথমে টিভিতে ‘বাক্স রহস্য’ টেলিফিল্মে ফেলুদা হিসেবে সব্যসাচী চক্রবর্তীকে দেখা যায় । তারপর বেশ কয়েকটি ফেলুদা টিভি সিরিজে তিনি অভিনয় করেন । এরপর বড় পর্দায় ‘ বোম্বাইয়ের বোম্বেটে’ সিনেমায় ফেলুদা সব্যসাচী চক্রবর্তী প্রথমবার আসেন।
Sabyasachi Chakraborty: কুয়াশা যখন সিরিয়াল থেকে দিল সে
একাধিক বাংলা সিনেমায় অভিনয়ের পর হিন্দিতেও পা রাখেন তিনি। প্রথম ছবি ছিল ‘দিল সে’। বিপরীতে ছিলেন শাহরুখ খান, মনীষা কৈরালা। ‘দিল সে’ সিনেমায় কীভাবে সুযোগ এল, তার পিছনেও আছে একটি গল্প । সব্যসাচী চক্রবর্তী তখন ‘কুয়াশা যখন’ সিরিয়ালে কাজ করছেন । কলকাতায় কোন একটি কাজে এসেছিলেন পরিচালক মণিরত্নম। টিভিতে তিনি সব্যসাচীর অভিনয় দেখেন। তাঁর অভিনয়ের ধরণ দেখে খুবই পচ্ছন্দ হয় । নিজেই যোগাযোগ করেন। সরাসরি অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। এইভাবে সব্যসাচী চক্রবর্তী হিন্দি সিনেমার জগতে পা রাখেন। তারপর তাঁকে আমরা ২০০৪ সালে ‘খাকি’, ২০০৮-এ ‘পরিণীতা’, ‘ফ্যান্টম’, এবং ‘তিন’ ছবিতে দেখা গিয়েছে। হিন্দির পাশাপাশি তাঁর কাছে দক্ষিনী ছবির অফার আসতে থাকে। একাধিক তামিল, তেলেগু, মালায়লম ছবিতে কাজ করেছেন সব্যসাচী চক্রবর্তী । ১৯৮৬ সালে তিনি বিয়ে করেন অভিনেত্রী মিঠু চক্রবর্তীকে । যিনি বাংলা টিভি সিরিয়াল জগতের অত্যন্ত পরিচিত একজন মুখ। দুই ছেলে গৌরব এবং অর্জুন চক্রবর্তী বাংলা সিনেমা-ওয়েবসিরিজের নামী অভিনেতা।
Sabyasachi Chakraborty: বাংলা সিনেমা
শ্বেত পাথরের থালা (১৯৯৪)
তোমার রক্তে আমার সোহাগ (১৯৯৫)
কাকাবাবু হেরে গেলেন ? (১৯৯৬)
রক্তনদীর ধারা (১৯৯৬)
দামু (১৯৯৭)
বিয়ের ফুল (১৯৯৭)
আত্মীয় স্বজন (২০০০)
এক যে আছে কন্যা (২০০০)
বোম্বাইয়ের বোম্বাটে (২০০৩)
ওয়ারিশ (২০০৪)
সংঘর্ষ (২০০৪)
হারবাট (২০০৬)
দ্য নেমশেক (২০০৬)
কৈলাসে কেলেঙ্কারি (২০০৭)
ভালোবাসা ভালোবাসা (২০০৮)
টিনটোরেটর যীশু (২০০৮)
অংশুমানের ছবি (২০০৯)
শুকনো লঙ্কা (২০১০)
ল্যাবরেটরি (২০১০)
রয়েল বেঙ্গল রহস্য (২০১১)
ভূতের ভবিষ্যৎ (২০১২)
ডবল ফেলুদা (২০১৬)
যকের ধন (২০১৭)
No comments:
please do not enter any spam link in the comment box