Kate Winslet husband: স্বামীর সামনে পরপুরুষের সঙ্গে ফষ্টিনষ্টি ! লজ্জায় পড়েন ‘টাইটানিক’-এর নায়িকা

৪৭টি বসন্ত পার করে ফেলেছেন। তবুও এখনও তিনি সুন্দরী । তাঁর সৌন্দর্য দেখে মোহিত বিশ্বের তামাম পুরুষ। তিনি কেট উইন্সলেট (Kate Winslet)। ‘টাইটানিক’ ছবির রোজ । ২৫ বছর পূর্ণ করে ফেলেছে বিশ্বের সবথেকে হিট ছবি টাইটনিক। আর এই উপলক্ষে ফের রিলিজ হয়েছে জেমস ক্যামেরনের এই সিনেমা। ১৫ বছর বয়স থেকে অভিনয় করছেন কেট। জীবনে বহু ছবিতে তিনি সম্পূর্ণ নগ্ন হয়েছেন । আবার কোথায় চরম ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় করেছেন। হলিউডের একজন অভিনেত্রী হিসেবে এটা অত্যন্ত সাধারণ ব্যাপার। চিত্রনাট্যের প্রয়োজনে কত কিছু করতে হয় অভিনেতা-অভিনেত্রীদের। কিন্তু অস্কার জয়ী কেট একবার এমনই একটি দৃশ্য করতে গিয়ে চরম লজ্জায় পড়েছিলেন। কারণ সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন স্বামী। ভীষণ অস্বস্তির মধ্যেই অভিনয় করেছিলেন তিনি। সেটা কোন ছবি ? বিপরীতে কে ছিলেন ?

'টাইটানিক' ছবিতে কেটের সহ- অভিনেতা ছিলেন লিওনার্দো ডি ক্যাপিরিও। তারপর অনেক দিন কোন  ছবিতে একসঙ্গে দেখা যায়নি এই রোমান্টিক জুটিকে। ফের ২০০৮ সালে  একসঙ্গে অভিনয় করলেন ‘ রেভেলিউশনারি রোড’ ছবিতে। ১৯৬১ সালে রিচারড ইয়াটসের লেখা এই রোমান্টিক উপন্যাসের নির্দেশনা দিয়েছিলেন স্যাম মেন্ডেস। তিনি তখন কেট উইন্সলেটের স্বামী। ২০০১ সালে একটি থিয়েটারে কেটের সঙ্গে প্রথম দেখা মেন্ডেসের। তিনি সেখানে সহকারী ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেন । দেখা সাক্ষাৎ ক্রমে ভালোবাসায় পরিণত হওয়ার পর ২০০৩ সালে চার হাত এক হয়। কেটের অবশ্য প্রথম বিয়ে আগেই ভেঙে গিয়ে ছিল। দ্বিতীয় বিয়ের সময় তিনি তিন মাসের গর্ভবতী ছিলেন। ২০০৩ -এর ডিসেম্বরে কেট উইন্সলেট দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দেন। আগের পক্ষের মেয়ে এবং দ্বিতীয় সন্তান ছেলেকে নিয়ে মেন্ডেসের সঙ্গে ঘর বাঁধেন কেট। স্বামীর প্রযোজনা ও পরিচালনায় ‘ রেভেলিউশনারি রোড’ ছবিতে অভিনয় করেন। সেখানে ক্যাপিরিওর সঙ্গে একটি ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয়ের কথা ছিল। কিন্তু দৃশ্যায়নের সময় খুব বিব্রত বোধ করছিলেন কেট। ব্যাপারটি বুঝতে পেরে তাঁকে সহজ করার চেষ্টা করেন ক্যাপিরিও। স্যাম মেন্ডেসও স্ত্রীকে সাহসী হয়ে অভিনয় করতে বলেন। কিন্তু তাতেও চূড়ান্ত পেশাদার অভিনেত্রীর লজ্জা কাটেনি। দৃশ্যটি বেশ কয়েকটি টেকের পর 'ওকে' করেন পরিচালক স্যাম মেন্ডেস।

Kate Winslet: থালা হাতে খাবারের লাইনে দাঁড়াতেন ছোট কেট


'টাইটানিক'-এর ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে একটি সাক্ষাৎকারে জীবনের নানা দিক তুলে ধরেছেন কেট উইন্সলেট। সেখানেই তিনি ২০০৮ সালের এই ঘটনার কথা বলেছিলেন। ‘ রেভেলিউশনারি রোড’ ভালো ছবি হিসেবে একাধিক পুরস্কার জিতেছিল। কিন্তু ছবির মতো কেট- মেন্ডেসের সংসার বেশিদিন চলেনি। ২০১০ সালে তাঁরা পৃথক থাকার ঘোষণা করেন । ২০১১ তে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে পারিবারিক আত্মীয় এডওয়ার্ড এবেল স্মিথকে বিয়ে করেন। লন্ডনের কাছে বিপুল টাকা খরচ করে একটি বাগান বাড়ি কিনেছেন কেট। সেখানেই এখন স্মিথের সঙ্গে থাকেন তিনি। তাঁদেরও একটি পুত্র সন্তান হয়েছে। ২০১৫ সালে একটি সাক্ষাৎকারে কেট বলেছিলেন, শহরের কোলাহল থেকে দূরে থাকতে বেশ ভালো লাগছে। সন্তানদের দেখভালে অসুবিধা হবে বলে অনেক ছবির অফার তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন। একমাত্র বাচ্চাদের স্কুল যখন ছুটি থাকে, তখন শ্যুটিং করেন। আর পাঁচটা মায়ের মতো বাচ্চাদের টিফিন গুচ্ছিয়ে স্কুলে পাঠাতে তাঁর ভালো লাগে। আবার স্কুল ছুটি হলে তাদের আনতে যেতেও তিনি পচ্ছন্দ করেন।

১৯৭৫ সালের ৫ অক্টোবর কেট এলিজাবেথ উইন্সলেটের জন্ম। খুব সাধারণ পরিবারের মেয়ে ছিলেন তিনি। বাবা ছিলেন স্ট্রাগিলিং অভিনেতা। তাছাড়া তিনি মজদুরের কাজ করতেন পরিবারের জন্য। আর মা আয়ার কাজ করে কোন রকমে সংসার চালাতেন। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় বিনামূল্যে খাবার দেওয়া হতো । সেখানে লাইন দিয়ে বাড়িতে খাবার আনতেন কেট ও তাঁর ভাইবোন। কেটের যখন ১০ বছর বয়স তখন বাবা একটি দুর্ঘটনায় পায়ে আঘাত পান। পুরোপুরি শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। তখন বাড়িতে চরম অভাব দেখা দেয়। একটি এজেন্সির হাত ধরে লন্ডনে এসে বিভিন্ন জায়গায় অডিশন দিতে শুরু করেন কেট। তখন তাঁর ১১ বছর বয়স। বিজ্ঞাপনে কাজ দিয়ে শুরু। একই সঙ্গে থিয়েটার করতেন । ১৯৯১ সালে বিবিসির একটি কল্প বিজ্ঞানের টেলিভিশন সিরিজ ‘ডার্ক সিজিন’-এ প্রধান চরিত্র পান। সেটি হিট হওয়ার পর একাধিক টেলিভিশন সিরিজে তিনি অভিনয় করেন। ১৯৯৪ সালে ১৭৫ জন মেয়ের সঙ্গে অডিশন দিয়ে ‘ হেভেনলি ক্রিচার’ ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান। তারপর ১৯৯৭ সালে জেমস ক্যামেরনের ‘টাইটানিক’ তাঁর জীবন বদলে দিয়েছিল। আর পিছন ফিরে অভাবের সেই ভয়াবহ দিনগুলির দিকে তাকাতে হয়নি। তবে হলিউডের অন্যতম সেরা অভিনেত্রী কেট উইন্সলেট জীবনের সেইসব দিন কখনো ভুলতে পারেননি। একসময় লাইনে দাঁড়িয়ে থালা হাতে খাবার সংগ্রহ করতে হতো তাঁকে।

No comments:

please do not enter any spam link in the comment box

Powered by Blogger.