দিন কয়েক আগে সোশ্যাল সাইটে ইংরেজিতে লাইন লিখতে গিয়ে বানান ভুল লিখেছিলেন শুভশ্রী (
Subhashree Ganguly) । প্রশ্ন উঠেছিল তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে। যদিও শুভশ্রী এখন টলিউডের সবথেকে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেত্রী। শুধু শুভশ্রী কেন, শ্রাবন্তী থেকে ঋতুপর্ণা সবাই তাঁদের সময়ে বাংলা সিনেমায় রীতিমতো রাজত্ব করেছেন। লেখাপড়ার দৌড় কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি। অভিনয়ে সবাই সেরা। কিন্তু পড়াশোনেতে কেউ কেউ রীতিমতো গোল্লা। আবার কেউ উচ্চশিক্ষিত। চলুন জেনে নিন টলিউড (
Tollywood) সুন্দরীদের লেখাপড়ার দৌড় কতদূর ?
শুভশ্রী
২০০৬ সালে আনন্দলোক ট্যালেন্ট হান্টে অংশ নিয়ে বিচারকদের মন জিতেছিলেন শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় (
Subhashree Ganguly)। তাঁকে প্রথম সুযোগ দিয়েছিলেন প্রভাত রায়। তাঁর ‘পিতৃভূমি’ (২০০৭) ছবিতে। সেই শুরু, তারপর থেকে ধীরে ধীরে হয়ে গ্যালেন ইন্ডাস্ট্রির সেরা অভিনেত্রী। বর্ধমানের মেয়ে শুভশ্রী অত্যন্ত সাধারণ পরিবার থেকে উঠে এসেছিলেন। বাবা ছিলেন কেরানি। লেখাপড়া করেছেন বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল গার্লস স্কুল থেকে। ওই পর্যন্ত। স্কুলের গণ্ডি পেরলেও কলেজ আর তিনি যাননি।
শ্রাবন্তী
খুব ছোট বয়সে অভিনয় জগতে ঢুকে পড়েন শ্রাবন্তী (
Srabanti Chatterjee)। ১৯৯৭ সালে শিশুশিল্পী হিসেবে প্রথম ছবি ‘মায়ার বাঁধন’। ক্লাস নাইন পর্যন্ত পড়ার পর পরিচালক রাজীব বিশ্বাসকে বিয়ে করেন। ফিরে আসেন ২০০৭ সালে ‘চ্যাম্পিয়ন’ ছবিতে। তারপর থেকে একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন। সিনেমার থেকে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন বেশি চর্চিত হয়েছে। একাধিক বিয়ে করে খবরের শিরোনামে থাকেন তিনি। শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় স্কুলের গণ্ডি পেরননি।
মিমি চক্রবর্তী
জলপাইগুড়ির মেয়ে মিমি কেরিয়ার শুরু করেছিলেন ছোট পর্দা দিয়ে। শিলিগুড়ির স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন। পরে কলকাতায় এসে আশুতোষ কলেজ থেকে ইতিহাস নিয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ‘গানের ওপারে’ সিরিয়াল থেকেই সবার নজরে পড়েন মিমি (
Mimi Chakraborty) । প্রথম ছবি ২০১২ সালে ‘বাপি বাড়ি যা’। ২০১৯ -এ যাদবপুর কেন্দ্র থেকে সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হন।
নুসরত জাহান
বিতর্কিত নায়িকা নুসরত জাহান (
Nusrat Jahan) আওয়ার লেডি কুইন অব দি মিশন স্কুল থেকে পাশ করার পর ভবানীপুর কলেজ থেকে স্নাতক হন। আদপে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা তাঁর পরিবার ব্যবসা সূত্রে কলকাতায় থাকতে শুরু করেন। প্রথম ছবি ছিল ২০১১ সালে ‘শত্রু’। নায়ক ছিলেন জিত(
jeet)। কলেজ পাশ করার আগেই তিনি অভিনয় জগতে ঢুকে পড়েন। এখন তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ।
কোয়েল মল্লিক
মেয়েকে কলেজ পাশ করিয়ে তবেই অভিনয় করার অনুমতি দিয়েছিলেন বাবা রঞ্জিত মল্লিক। কোয়েলের প্রথম ছবি ২০০৩ সালে ‘নাটের গুরু’। নায়ক জিত। প্রথম ছবি থেকেই হিট কোয়েল (
Koel Mallick)। ২০০৪-এ পরপর রিলিজ করে দেবীপক্ষ, শুধু তুমি, বাদশা, বন্ধন। কোয়েলের স্কুল ছিল ভবানীপুরের মডান গার্লস হাইস্কুল। সাইকোলজি নিয়ে গোখেল মেমোরিয়াল গার্লস কলেজ থেকে বিএসসি ডিগ্রি পান।
স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়
মাত্র ১৮ বছর বয়সে রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী সাগর সেনের ছোট ছেলে প্রমিত সেনকে বিয়ে করেছিলেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় (
Swastika Mukherjee) । যদিও সেই বিয়ে সুখের হয়নি। তাই স্কুলের পড়াশোনা শেষ করা হয়নি স্বস্তিকার। তাঁর প্রথম স্কুল ছিল কারমেল স্কুল। পরে গোখেল মেমোরিয়াল স্কুল থেকে পাশ করেন। সন্তু মুখোপাধ্যায়ের মেয়ে স্বস্তিকার প্রথম অভিনয় ইটিভি বাংলার সিরিয়াল ‘দেবদাসী’তে। প্রথম ছবি ২০০১ সালের ‘হেমন্তের পাখি’। শিক্ষাগত যোগ্যতা তেমন না থাকলেও অভিনয়ের জোড়ে আজ তিনি বলিউডেরও প্রতিষ্ঠিত।
রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়
সিটি কলেজ থেকে স্নাতক হয়েছিলেন ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় (
Rachana banerjee) । কলেজের সেকেন্ড ইয়ারেই তিনি ১৯৯৪ সালে মিস কলকাতা জিতেছিলেন। তারপর সিনেমায় সুযোগ পেতে অসুবিধা হয়নি। আসল নাম ঝুমঝুম বন্দ্যোপাধ্যায়। সুখেন দাস তাঁর নাম পালটে রচনা রাখেন। প্রথম ছবি ‘দানপ্রতিদান’। বাংলার পাশাপাশি ওড়িয়া ফিল্ম জগতেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত
১৯৮৯ সালে ডিডি বাংলার সিরিয়াল ‘ শ্বেত কপোত’ দিয়ে অভিনয় শুরু করেছিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত (
Rituparna Sengupta)। ছোট থেকেই শিল্প মাধ্যমের প্রতি তাঁর আগ্রহ ছিল। তিনি ছবি আঁকা শেখার পাশাপাশি নাচও শিখেছিলেন। কারমেল স্কুল থেকে পাশ করার পর লেডি ব্রাবোন কলেজ থেকে স্নাতক হয়েছিলেন। ইতিহাস নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু অভিনয় জগতে প্রবেশের পর আর সেটা শেষ করা হয়নি। প্রথম ছবি ১৯৯২ -এর ‘শ্বেত পাথরের থালা’। প্রসেনজিতের সঙ্গে প্রথম ছবি ‘নাগপঞ্চমী’ (১৯৯৪)।

No comments:
please do not enter any spam link in the comment box