Satyajit Roy and Suchitra Sen Devi Chaudhurani bengali movie: কেন সত্যজিৎ রায়ের ‘ দেবী চৌধুরানী’-এর অফার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন সুচিত্রা সেন ?

১৯৭৪ সালে দীনেন গুপ্ত তৈরি করেন ‘ দেবী চৌধুরানী’ (Devi Chaudhurani )। নাম ভূমিকায় ছিলেন সুচিত্রা সেন (Suchitra Sen) । ব্রজেশ্বরের চরিত্রে রঞ্জিত মল্লিক। ছবিটি তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। তার অনেকগুলি কারণ ছিল। সবথেকে বড় কারণ, রঞ্জিত মল্লিকের তুলনায় তখন বয়সে অনেক বড় লেগেছিল। ছবির মেকিংও তেমন ভালো ছিল না। তবে সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ১৯৭৪ নয়, ১৯৬০-এর শুরুতেই ‘দেবী চৌধুরানী’ হিসেবে পর্দায় আসতেন সুচিত্রা সেন (Suchitra Sen) । পরিচালনার দায়িত্বে থাকার কথা ছিল সত্যজিৎ রায়ের (Satyajit Roy) । কিন্তু কেন হল না ? উত্তম কুমারের সঙ্গে ‘নায়ক’ হলেও কেন মহানায়িকার সঙ্গে ছবি করা হল না সত্যজিৎ রায়ের ?

READ MORE: সুপারস্টার খান-দান, বাড়ির সদস্যরা কে কতদূর পড়াশোনা করেছেন, জানলে অবাক হবেন  

সেই সময়ের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখা থেকে জানা যায়, অস্কারজয়ী পরিচালক মহানায়িকাকে একটি বড় শর্ত দিয়েছিলেন। যা মানতে পারেননি সুচিত্রা সেন (Suchitra Sen) । তখন ‘পথের পাঁচালী’, ‘অপুর সংসার’ তৈরি করে সারা বিশ্বে বন্দিত সত্যজিৎ রায় (Satyajit Roy) । বাংলা কেন, হিন্দিতেও অভিনেতা-অভিনেত্রীরা তাঁর সঙ্গে কাজ করার জন্য মুখিয়ে থাকতেন। স্বাভাবিক ভাবেই সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে কাজ করতে চাইছিলেন সুচিত্রা সেন (Suchitra Sen) । তিনি তখন মহানায়িকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। ‘পথে হল দেরী’, ‘সাগরিকা’, ‘দীপ জ্বেলে যাই’-এর মতো সিনেমা তাঁকে এক নম্বর আসনে বসিয়েছিল। হাতে প্রচুর ছবির অফার। অন্যদিকে, সত্যজিৎ রায় (Satyajit Roy) দেবী চৌধুরানীর চিত্রনাট্য লিখে ফেলেছেন। নায়িকা হিসেবে প্রথমেই তাঁর মাথায় আসে সুচিত্রা সেনের কথা। দেবী চৌধুরানীর যে ব্যক্তিত্ব তা একমাত্র সুচিত্রা সেন ছাড়া কেউ ফোটাতে পারবেন না।

ছবির অফার নিয়ে মহানায়িকার সঙ্গে দেখা করলেন সত্যজিৎ রায়। তিনি তো এক কথাতেই রাজি। কিন্তু তারপর সত্যজিৎ রায় যে শর্ত দিলেন, তা তখন মানা সম্ভব নয় তার পক্ষে। সত্যজিৎ রায় বলেছিলেন, যে ক’দিন দেবী চৌধুরানীর কাজ চলবে, ততদিন অন্যকোন সিনেমায় হাত দিতে পারবেন না। শর্ত শুনে বেঁকে বসেন সুচিত্রা সেন। কারণ তাঁর হাতে তখন প্রচুর ছবি। শুধুমাত্র একটি ছবির জন্য সব ছেড়ে দিতে তিনি প্রস্তুত ছিলেন না। পালটা মহানায়িকাও বিরাট পারিশ্রমিক চেয়ে বসেন। তখন একটি সিনেমার জন্য এক লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক নিতেন সুচিত্রা সেন। সত্যজিৎ রায়ের ছবির বাজেট অতো ছিল না। ফলে দুজনেই হাত তুলে নেন। সুচিত্রা সেনকে না পেয়ে দেবী চৌধুরানীর কাজ বন্ধ রাখেন তিনি। আর কোন দিনই দেবী চৌধুরানী বাস্তবায়িত হয়নি।

১৯৭৪ সালে এসে পরিচালক দীনেন গুপ্ত ‘দেবী চৌধুরানী’ বানান। নাম ভূমিকায় সুচিত্রা সেন। অন্যান্য চরিত্রে বসন্ত চৌধুরী, সুমিত্রা মুখোপাধ্যায় এবং রঞ্জিত মল্লিক। পড়ন্ত বেলায় এই ছবির হাত ধরে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন সুচিত্রা সেন। কিন্তু তা আর হয়নি। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ক্লাসিক উপন্যাস বড় পর্দায় অবতরণ করতে গেলে যে পরিমাণ বাজেট দরকার, তা দীনেন গুপ্তর ছিল না। পরিচালনা ও চিত্রনাট্য নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। সর্বোপরি সুচিত্রা সেনকে অনেকটাই বয়স্ক লেগেছিল।

অনেক পড়ে দূরদর্শনের পর্দায় ‘ দেবী চৌধুরানী’ সিরিয়াল হয়েছিল। নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন মুনমুন সেন। সেই প্রোডাকশনের কাজও ছিল অত্যন্ত নিম্নমানের।

No comments:

please do not enter any spam link in the comment box

Powered by Blogger.