যতদিন যাচ্ছে, ততই ক্ষুরধার হয়ে উঠছেন। সিনেমা, সিরিয়াল থেকে ওয়েব সিরিজ। সব মাধ্যমে নিজেকে বারবার প্রমাণ করেছেন। তবুও কাঙ্খিত স্থান কোনও দিন পেলেন না বাংলা সিনেমার অভিনেতা (Bangla cinema actor) টোটা রায় চৌধুরী। অবশ্য এখন আর তাঁকে শুধু বাংলা সিনেমার অভিনেতা বলা যায় না। হিন্দিতেও দাপট দেখাচ্ছেন রীতিমতো। কিছুদিন আগে বেরিয়েছে ‘রকি ওর রানি কি প্রেম কাহিনী’ সিনেমার ট্রিজার। করণ জোহরের এই ছবিতে তিনি আলিয়া ভাটের বাবা। তবে একটাই আফসোস। যুবক বয়সে ভালো রোল তিনি পাননি। টোটার কথায় টলিউডে নেপোটিজিমের শিকার তিনি। সহ অভিনেতা থেকে গেলেন তিনি। এখন মধ্য বয়সে পৌঁছে নিজেকে ঘষেমেজে আরও তৈরি করেছেন।
টোটা রায় চৌধুরী যখন অভিনয় শুরু করেন তখন তিনি কলেজে সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র। ইচ্ছা ছিল সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার। সেইমতো পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। অভিনয়ের প্রস্তাব পান পরিচালক প্রভাত রায়ের কাছ থেকে। প্রথম ছবি ‘দূরন্ত প্রেম’। সিনেমা মাঝারি মানের হিট হলেও টোটা নজরে পড়ে গেলেন। পরপর অফার আসতে লাগল। প্রস্তাব এল অঞ্জন চৌধুরীর কাছ থেকেও। ‘পূজা’, ‘মুখ্যমন্ত্রী’, ‘নাচ নাগিনী নাচ রে’ পরপর সিনেমা করলেন তিনি। এরপর সেনাবাহিনীর স্বপ্ন ছেড়ে পেশাদার অভিনেতা হওয়ার ইচ্ছা জেগে ওঠে মনে।
মূলত বাণিজ্যিক ছবিতে কাজ করেছেন তিনি। মাঝে ঋতুপর্ণ ঘোষের কাছ থেকে ‘শুভ মহরৎ’ ও ‘চোখের বালি’ ছবিতে কাজ করার প্রস্তাব পান। চোখের বালি সিনেমায় টোটা প্রমাণ করলেন তিনি কত বড় অভিনেতা। তারপর যে ধারাবাহিকতা আসার কথা ছিল, তা এল না। জীবনের মোড় তেমন ভাবে ঘুরল না। আর এর জন্য বাংলা সিনেমা জগতের গ্রুপবাজিকে দায়ী করেন তিনি। টোটার কথায়, ইন্ডাস্ট্রিতে কিছু অভিনেতা আছেন, যারা প্রথম থেকেই জাঁকজমক দেখাতে গিয়ে ঋণের ঝামেলায় জড়িয়ে যান। আর তখন নিজেকে বাঁচাতে কোনও গ্রুপে গিয়ে নাম লেখান। মেরুদণ্ড বিক্রি করে দেন।
টোটা রায় চৌধুরী একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি মেরুদণ্ড বিক্রি করে দেওয়ার দলে পড়েন না। তাই হয়ত শীর্ষে পৌঁছাতে পারেননি। নিজের মনের কথা শোনেন। মনের কথায় চলেন। কম খেয়ে, কম পরেও ভালো থাকা যায়। এটাই তাঁর জীবনের আদর্শ। সেটাই মেনে চলেন। মাথা উঁচু করে চলেন। স্পষ্ট কথা বলতে ভয় পান না। তাই কোনও দিন কোনও শিবিরের অংশ তিনি হতে পারেননি।
No comments:
please do not enter any spam link in the comment box