Ravan wife: রাবণের মৃত্যুর পর কী হয়েছিল স্ত্রী মন্দোদরীর ? স্বামীর মৃত্যুর পরেও কীভাবে সধবা ছিলেন তিনি ?

রামায়ণ। একজন মা কেমন হওয়া উচিত, বাবা কেমন হওয়া উচিত, সন্তান কেমন হওয়া উচিত, দাদা বা ভাই কেমন হওয়া দরকার। সেই শিক্ষা দেয় এই মহাকাব্য। প্রাচীন ভারতীয় সংস্কৃতির ধারক-বাহক রামায়ণ। রাম-সীতা-লক্ষ্মণ শুধু চরিত্র নয়, ভারতবাসীর কাছে ভগবান। আর সেই ভগবানকে নিয়ে ছেলেখেলা কিছুতেই মেনে নেয় না ভারত। তাই প্রবল পতনের মুখে ‘আদিপুরুষ’ সিনেমা। সহ চরিত্র তো দূরের কথা, রাম-সীতা-লক্ষ্মণকে ঠিকমতো ফুটিয়ে তোলা হয়নি। ব্যবসার দিক থেকে ভীষণভাবে মার খাচ্ছে ‘আদিপুরুষ’। এই প্রতিবেদনে রামায়ণের এমন একটি চরিত্র নিয়ে আলোচনা হবে, যিনি প্রধান চরিত্রদের মহিমার মাঝে চাপা পড়ে গিয়েছিলেন। তুলে ধরব রাবণের স্ত্রী মন্দোদরীর (Ravan wife) কথা। রাবণের মৃত্যুর পরও কীভাবে সধবা ছিলেন তিনি ?

স্বর্গের অপ্সরা মন্দোদরী

লঙ্কাপতি, পরাক্রমশালী রাবণের স্ত্রী ছিলেন মন্দোদরী। এত বিক্রমশালীর স্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও তাঁর মধ্যে কোনও অহংকার ছিল না। বরং নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করতেন তিনি। রাবণের ব্যক্তিত্বকে ভয় না পেয়ে নিজের মত প্রদান করতেন। প্রথম থেকেই সীতা হরণের বিরোধী ছিলেন তিনি। চেয়েছিলেন রাবণ সম্মানের সঙ্গে সীতাকে রামের কাছে ফিরিয়ে দিক। কিন্তু তা হয়নি। পুরাণ অনুযায়ী, মন্দোদরী ছিলেন স্বর্গের অপ্সরা মধুরা। তিনি ছিলেন শিবভক্ত। এদিন কৈলাসে মহাদেবকে দর্শন করতে গিয়ে দেখেন পার্বতী সেখানে নেই। তখন তিনি মহাদেবকে প্রসন্ন করার চেষ্টা করেন। পার্বতী কিছুক্ষণ পর ফিরে আসেন। এসে দেখেন মধুরা তখনও সেখানে আছেন। আর তাঁর গায়ে মহাদেবের ভস্ম লেগে।

এই দেখে পার্বতী খুব রেগে যান। তিনি মধুরাকে অভিশাপ দেন। দেবীর অভিশাপে মধুরা ব্যাঙে পরিণত হয়। পার্বতী বলেছিলেন, এইভাবে তাঁর ১২ বৎসর কাটবে। তারপর ভাগ্য ফিরবে। ১২ বছর একটি কূপের ব্যাঙ হয়ে থেকে ছিলেন মধুরা। একদিন রাক্ষসরাজ মায়াসুর ও তাঁর স্ত্রী সেখানে আসেন। ব্যাঙকে দেখে নিজের প্রাসাদে নিয়ে আসেন। তখন অভিশাপ মুক্ত হয়ে মধুরা ব্যাঙ থেকে মন্দোদরীতে পরিণত হন। কন্যা সন্তান হিসেবে তাঁকে আপন করে নেয় মায়াসুর। একদিন রাবন মায়াসুরের সঙ্গে সাক্ষাৎতে এসে মন্দোদরীকে দেখতে পেয়ে অভিভূত হয়ে যান। তিনি বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু মায়াসুর সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়। তখন মন্দোদরীকে অপহরণ করেন রাবন। ফলে দুপক্ষের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। ক্রমশ পরাজিত হতে থাকে মায়াসুর। মন্দোদরী দেখেন তাঁর বাবার প্রাণ সঙ্কটে। তিনি তখন বিয়েতে সম্মতি জানান।

আশীর্বাদ দিয়েছিলেন রাম

রামায়ণে আছে, রাবণের মৃত্যুর পর রাম আশীর্বাদ করেছিলেন মন্দোদরীকে। তিনি বলেছিলেন, তোমাকে কোনওদিন বৈধব্য জ্বালা সহ্য করতে হবে না। সিঁথির সিঁদুর অক্ষুন্ন থাকবে। তাই বিশ্বাস রাবণের চিতা আজও জ্বলছে। আবার অন্য গল্প অনুসারে, রামের নির্দেশে বিভীষণকে বিয়ে করেছিলেন মন্দোদরী। এরভাবে তিনি চির সধবা থেকে যান।

No comments:

please do not enter any spam link in the comment box

Powered by Blogger.