গত সপ্তাহেই মুক্তি পেয়েছে ‘আদিপুরুষ’। একাধিক ইস্যুতে সিনেমাটি নিয়ে বিতর্ক বাড়ছে। হনুমানের মুখের ভাষা থেকে সাজসজ্জা সবকিছু বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। আরও একটি স্পর্শকাতর বিষয় এই সিনেমার হাত ধরে উঠে এসেছে। তা হল, সীতার জন্মস্থান (Sita birthplace) কোথায় ? ‘আদিপুরুষ’ সিনেমাতে সীতাকে ভারতের মেয়ে বলায় বেজায় চটে যান নেপালের বসবাসকারীরা। কারণ, নেপালের মানুষের বিশ্বাস সীতা মা বর্তমানের জনকপুরে জন্মছিলেন। তাই নাম জানকী। আবার রামায়ণ অনুসারে, হল কর্ষণের সময় মাটির ভিতর থেকে উঠে আসেন সীতা মা। তাঁকে কুড়িয়ে পেয়েছিলেন রাজা জনক। তাই সীতার আর এক নাম জানকী। তবে সীতা কী সত্যি ভারতের মেয়ে ছিলেন ? নাকি নেপালের ?
রামায়ণ অনুসারে, বিদেহ রাজ্যের জনকপুরের রাজা জনকের কন্যা সীতা। এখন ইতিহাসে এই বিদেহ রাজ্য কোথায় ছিল, তা নিয়ে বিতর্ক আছে। একটা সময় ভারত-নেপাল সব এক রাষ্ট্র ছিল। এখন সব আলাদা। তাই বিদেহ কোথায় অবস্থিত ছিল, তা নির্ণয় করা খুব ঝামেলার। পুরাণে বহুবার বিদেহ রাজ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়। কিন্তু ইতিহাস বলছে, বিদেহ রাজ্য হয় নেপালের জনকপুরে অবস্থিত ছিল নয়তো বিহারের মধুবনজেলার বালিরাজগড়ে। আবার পুরাণ তথ্য বলছে, বিদেহ রাজ্যের আর এক নাম ছিল মিথিলা। যার ভাষা ছিল মৈথিলী। এখনও বিহার ও নেপালের কিছু অংশের মানুষ মৈথিলী ভাষায় কথা বলেন। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, বিদেহ রাজ্যের সব রাজাকেই ‘জনক’ বলা হয়। অর্থাৎ সবাইকে সীতার পিতার মর্যাদা দেওয়া হত।
হল কর্ষণের সময় সীতাকে যেখান থেকে পাওয়া গিয়েছিল সেটা অনেকেই বিহারের সীতামারাহী বলে বিশ্বাস করেন। আবার সীতাকে বিয়ে করতে শ্রীরামচন্দ্র যে হরধনু ভঙ্গ করেছিলেন, সেই জায়গাটি নেপালের রঙ্গভূমি বলে অনেকে বিশ্বাস করেন। তাই নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়, ঠিক কোথায় সীতা জন্মগ্রহণ করেছিলেন। নেপালবাসীর বিশ্বাস, সীতা সেখানেই জন্মছিলেন। আদিপুরুষে যখন সীতাকে ভারতের কন্যা বলা হয়, তখন সিনেমাটি নেপালে নিষিদ্ধ করেন সেখানকার মেয়র। শুধু আদিপুরুষ নয়। সব বলিউডি ছবি নিষিদ্ধ করেন তিনি। পরে অবশ্য আদিপুরুষ-এর নির্মাতারা ক্ষমা চেয়ে ব্যাখা দেয়, অজান্তেই এই ভুল হয়েছে। নেপালবাসীদের দুঃখ দেওয়া তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল না।
No comments:
please do not enter any spam link in the comment box