১৯৯৫ সাল। বাংলা টেলিভিশনে এল বিপ্লব। শুরু হল মেগা ধারাবাহিক (Bengali mega serials)। জননী। সুপ্রিয়া দেবী প্রধান চরিত্রে। হিন্দিতে অবশ্য আগে থেকেই শুরু হয়েছিল। সেই শুরু। তারপর বাংলা সিরিয়ালে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন এসেছে। প্রথম মেগা ছিল সাহিত্য নিয়ে। কিন্তু তারপর পারিবারিক গল্পের নামে গরু গাছে কেন, তালগাছে উঠতে শুরু করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সিরিয়ালের গল্প বা চিত্রনাট্য নিয়ে মাঝে মাঝে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। কারণ, পারিবারিক গল্পের নামে শুধুমাত্র কূটকাচালি ছাড়া আর কিছু দেখানো হয় না। শুধু তাই নয়, বাড়ির ছেলের পরকীয়া, মায়ের আগের পক্ষ, বাবার আগের বিয়ে, শাশুড়ি-বউমার ঝগড়া আরও কতকিছু। আর এইসব ন্যূনতম জিনিস দর্শক দেখতে চাইছেন না। বিভিন্নভাবে বিরক্তি প্রকাশ করছেন। টিভি রেটিং বলছে, দিন দিন দর্শক সংখ্যা কমছে। এর পিছনে পাঁচটি কারণ আছে। এই প্রতিবেদনে সেগুলি তুলে ধরব।
1. গল্পের অভাব
বাংলা সিরিয়াল তো নয়, যেন সার্কাস চলছে। কী না দেখানো হচ্ছে গল্পের নামে। নতুনত্ব কিছু নেই। আইআইটি পাশ ছেলে বিয়ে করছে কাজের মেয়েকে, বাবার দুটো বিয়ে, মায়ের আগের পক্ষের ছেলে ভিলেন হয়ে হাজির হয়ে যাচ্ছে, বাড়ির কুচুটে পিসিমা দিনরাত মুখ বেঁকিয়ে চোখ নাচিয়ে কূটকাচালি করে যাচ্ছে। এই একই গল্প মোটামুটি সব সিরিয়ালের বিষয়। সাহিত্য থেকে সিরিয়াল হলে সেখানেও কূটকাচালি ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শেষ সাহিত্য নির্ভর ভালো সিরিয়াল ছিল ‘সুবর্ণলতা’।2. খারাপ কনটেন্ট
বাংলা সিরিয়ালের টার্গেট দর্শক বাড়ির মহিলা ও অবসরপ্রাপ্তরা। যাঁদের অনেকক্ষণ টেলিভিশনের সামনে বসিয়ে রাখা যাবে। কিন্তু সেই সংখ্যাও দিন দিন কমছে। টিভি চ্যানেলগুলির ধারণা গল্প যদি জটিল হয় বা জ্ঞান দেওয়া হয়, তাহলে দর্শক দেখবে না। তাই সহজ পন্থা হল, কূটকাচালি দেখানো। একাধিক বিয়ে দেখানো বা স্বামীর পরকীয়া। অত্যন্ত খারাপ থেকে খারাপ কনটেন্ট গল্পে নিয়ে আসা হচ্ছে। এখন আর সিরিয়ালে গান তৈরি হয় না। হিন্দি গান ব্যবহার হচ্ছে। যা আরও খারাপ।3. মহিলাদের অপমান
সিরিয়ালের গল্প মহিলাদের নিয়ে হলেও মহিলাদের অপমান করা হচ্ছে। কোনও প্রতিবাদী বা প্রগতিশীল নারী দেখানো হয় না। বরং শাশুড়ির হাতে অত্যাচারিত হয়েও মুখ বুজে সব সহ্য করেন বা স্বামীর একাধিক সম্পর্ক জেনেও কর্তব্য করে যান, তাঁকেই আদর্শ বউ দেখানো হয়। আবার অনেকে দিনরাত কূটকাচালি করেও ডাক্তার, শিক্ষক বা পাইলট হয়ে যাচ্ছেন। কীভাবে সম্ভব ?4. বাস্তবতার অভাব
বাংলা মেগা ধারাবাহিকে এখন বাস্তবতার ভীষণ অভাব। গ্রামের গল্প দেখানো হয়। অথচ বর্তমানের গ্রামের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। গ্রামের মেয়ে মানেই হাঁটু পর্যন্ত কাপড় আর মাথায় ফিতে বাঁধা। যুগ পাল্টে গিয়েছে। সেটা লেখকরা দেখতে পান না। গ্রামের মাটির গন্ধ তাঁরা পান না। গ্রাম সম্পর্কে কোনও ধারণাই নেই।READ MORE: বিবাহিত হয়েও পরকীয়া, বউ পিটিয়ে জেলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল ঋষি কাপুরের
No comments:
please do not enter any spam link in the comment box