সুরের জাদুকর বাপ্পি লাহিড়ির প্রয়াণ দুই বছর অতিক্রান্ত। তিনি নেই, কিন্তু তাঁর সুর বা গান চির অমর হয়ে থাকবে। সুরে বা গায়িকীতে নিজস্ব বৈশিষ্ঠ্য ছিল বাপ্পি লাহিড়ীর। তেমনি ছিলেন স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্বের অধিকারী। সোনার প্রতি ছিল বিশেষ আকর্ষণ। গা ভর্তি সোনার গয়না পরতেন তিনি। সেটাই ছিল তাঁর স্টাইল স্টেটমেন্ট। কিন্তু শুধু কি স্টাইলের জন্য গয়না পরতেন বাপ্পি লাহিড়ী ? গায়ক-সুরকার বাপ্পি লাহিড়ীর কাছে কয়েকশো গ্রাম সোনার গয়না ছিল। গানের রেকর্ডিং হোক বা কোনও অনুষ্ঠান, গা ভর্তি গয়না ছাড়া তাঁকে কেউ কোনওদিন দেখেনি। গলাতে মোটা মোটা সোনার চেইন ঝুলত। হাতে ছিল প্রচুর ব্রেসলেট এবং আংটি। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর গয়নার সংখ্যা বেড়েছে।
কেন পরতেন সোনার গয়না ?
খুব ছোটবেলা থেকেই সোনার প্রতি বাপ্পি লাহিড়ীর আকর্ষণ। সোনাকে তিনি ভগবান মনে করতেন। খুব ছোটবেলায় ‘হরে কৃষ্ণ হরে হরে’ লেখা সোনার লকেট তাঁকে তাঁর মা পরিয়ে দিয়েছিলেন। বিয়ের পর বালাজি দর্শনে গিয়ে বিগ্রহের পায়ে একটি সোনার গয়না রাখেন। পরে সেটিও পরেছিলেন। এছাড়া একবার তিনি স্বপ্নে ভগবান গণেশের দর্শন পেয়েছিলেন। তারপর থেকে গণেশের একটি লকেট গলায় পরতে শুরু করেন। এছাড়াও হ্নুমাঞ্জীর মূর্তি এবং তাঁর গুরুদেবের ছবির লকেট রয়েছে। ‘বি’ অক্ষর লেখা একটি লকেট তাঁর খুব প্রিয় ছিল। কারণ, সেটি স্ত্রীর কাছ থেকে উপহার পেয়েছিলেন। আসলে বাপ্পি লাহিড়ী মনে করতেন, সোনা তাঁর জন্য খুব শুভ। তাই যেকোনো শুভ অনুষ্ঠানে তিনি সোনা কিনতেন। ঈশ্বরে বিশ্বাসী বাপ্পি লাহিড়ী সোনাকে লাকি ভাবতেন। তিনি মনে করতেন, সোনা তাঁর জীবনে সৌভাগ্য ডেকে এনেছে। শরীরে যত সোনার গয়না ছিল সব ঠাকুরের পায়ে ছুঁয়েই তবে পরিধান করতেন।মোট ৭৫৪ গ্রামের সোনার গয়না ছিল বাপ্পি লাহিড়ীর কাছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৩৮ লক্ষ ৭১ হাজার ৭৯০ টাকা। বাপ্পি লাহিড়ীর মৃত্যুর পর তাঁর যাবতীয় গয়নার মালিক হয়েছেন দুই সন্তান বাপ্পা এবং রিমা। তাঁদের কাছে ওই গয়নাগুলি বাবার শেষ স্মৃতি।
No comments:
please do not enter any spam link in the comment box