Bengali Maha nayika Suchitra Sen: কোন সমস্যায় পড়ে অভিনয়কে বিদায় জানিয়ে ছিলেন সুচিত্রা সেন ? কেন নিজেকে গৃহবন্দি করে নিয়েছিলেন ? জানালেন মেয়ে মুনমুন
উত্তম কুমার যদি বাংলা ছবির ‘মহানায়ক’ হন, তাহলে সুচিত্রা সেন ছিলেন ‘মহানায়িকা’। মৃত্যুর এক যুগ পরেও সুচিত্রা সেনকে নিয়ে রহস্য আজও কাটেনি। কেন তিনি সিনেমা জগতকে বিদায় জানিয়েছিলেন? কেন বা নিজেকে বাইরের জগত থেকে সম্পূর্ণ গুটিয়ে নিয়েছিলেন ? প্রশ্ন অনেক। কিন্তু উত্তর নিয়ে নানা মুনির নানা মত। বাংলা সিনেমার এযুগের দর্শকদের মধ্যে সুচিত্রা সেন একটা মিথ। উত্তম কুমারের মৃত্যুর পর সুচিত্রা সেন নিজেকে সম্পূর্ণভাবে গুটিয়ে নিয়েছিলেন। এই ঘটনা বাঙালিদের বিশাল আঘাত দিয়েছিল। অনেকেই মনে করেন, উত্তম কুমারের মৃত্যু সুচিত্রাকে সিনেমা জগতে একা করে দিয়েছিল। তাই তিনি অভিনয়কে বিদায় জানানোর পাশাপাশি নিজেকে বাইরের জগত থেকে আলাদা করে নিয়েছিলেন। ৭০ দশকের মাঝামাঝি অভিনয়কে বিদায় জানান সুচিত্রা সেন। টলিউড বা বলিউড সব ক্ষেত্র থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন। উত্তম কুমারের সঙ্গে অভিনয় করতে না পারা কী ছিল কারণ ? সত্যি কী তাই ?
এই প্রসঙ্গে কন্যা মুনমুন সেন জানান, ১৯৭০-এর দশকে ধীরে ধীরে বাংলা সিনেমার চিত্রনাট্য বদলাতে থাকে। নতুন ধরনের গল্পের সঙ্গে সুচিত্রা সেন মানিয়ে উঠতে পারছিলেন না। আর তাছাড়া সুচিত্রা সেন যে সকল পরিচালকের সঙ্গে কাজ করতে পচ্ছন্দ করতেন, তাঁরা একে একে মারা গিয়েছিলেন। উত্তম কুমার অবশ্য যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেকে বদলে নিয়েছিলেন। পারিবারিক ছবি থেকে অ্যাকশন নির্ভর সব ধরনের ছবিতে কাজ করতে থাকেন। কিন্তু সুচিত্রা সেন সেই পরিবর্তন মানতে পারেননি। তিনি মনে মনে ভাবতে শুরু করেন, কার সঙ্গে আর অভিনয় করবেন ? নায়ক কোথায় ? তাই অভিনয় থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।
সুচিত্রা সেনের অভিনয় ছেড়ে দেওয়ার পিছনে বেলুড় মঠের ভরত মহারাজ অবদান ছিল। ব্যক্তিগত জীবনে সুচিত্রা সেন ছিলেন ভীষণভাবে আধ্যাত্মিক। ভরত মহারাজের শিষ্যা। প্রায় মধ্যরাতে সুচিত্রা সেন বেলুড় মঠে যেতেন। সেখানে ভরত মহারাজের সান্নিধ্যে জীবনে শান্তি খোঁজার চেষ্টা করতেন। একসময় ভরত মহারাজ তাঁকে বলে ছিলেন, “মা জীবনে কোনওদিন অর্থের পিছনে ছুটে বেড়িয় না। শান্তি পাবে না। অর্থলোলুপ হয়ো না”। এই কথা সুচিত্রা সেনের জীবনধারায় পরিবর্তন আনে। তিনি অভিনয় ছেড়ে দিয়ে সম্পূর্ণভাবে আধ্যাত্মিক জগতে ডুবে যান। মেয়ে আর নাতনিদের নিয়ে জীবনের বাকি দিনগুলি কাটিয়ে দিয়েছেন বাংলার মহানায়িকা।
No comments:
please do not enter any spam link in the comment box