অবৈধ সন্তানের মা হয়ে জীবনে কঠিন লড়াই, কেউ পাশে ছিল না। অভিনেত্রী নীনা গুপ্তার (Neena Gupta) কাহিনী

সদ্য দ্বিতীয়বার বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন মাসাবা গুপ্তা। অভিনেত্রী নীনা গুপ্তা (Neena Gupta) এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটার ভিভিয়ান রিচার্ডসের মেয়ে মাসাবা। সমাজের চোখে ‘অবৈধ’ মেয়ে। এখন ‘অবৈধ’ শব্দের ব্যাখ্যা কি ? তা নিয়ে নানা ধরণের মতামত শোনা যেতে পারে । তবে এটা ঠিক সন্তান কখনও অবৈধ হয় না। ভালোবাসা কোনদিন বৈধতার দাবি করে না। তাই মাসাবা অভিনেত্রী নীনা গুপ্তা (Neena Gupta) এবং ভিভিয়ান রিচার্ডসের ভালোবাসার সন্তান । কিন্তু সেই সন্তান যখন পৃথিবীতে আসে তখন ভারত এত অগ্রগতি করেনি । টেকনোলজির যুগ আসেনি। সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান লাভের পদ্ধতি জনপ্রিয়তা পায়নি। সময়টা ১৯৮০ যুগ । ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটারের সঙ্গে অভিনেত্রীর প্রেম নিয়ে পত্র পত্রিকাতে চর্চা চলছিল। তখনই জানা গেল, ভিভিয়ান রিচার্ডসের সন্তানের মা হয়েছেন নীনা গুপ্তা (Neena Gupta) । তখনও অভিনেত্রী হিসেবে ততটা জনপ্রিয়তা পাননি তিনি। কিন্তু অবৈধ মেয়ের মা হয়ে রাতারাতি বিখ্যাত, বলা ভালো কুখ্যাত হয়ে গেলেন নীনা। চারিদিকে ছিঃ ছিঃ রব উঠল। বিয়ে না করে সন্তান জন্ম দেওয়া ! সমাজ কোনদিন এটা মেনে নিতে পারে না। নীনা গুপ্তাকে রীতিমতো ‘ বেশ্যা’ তকমা দিয়ে দেওয়া হয় । নীনার সঙ্গে সম্পর্ক যখন গড়ে ওঠে তখন ভিভ বিবাহিত ছিলেন। প্রেমিকা গর্ভবতী জেনে পাশে থাকার আশ্বাস ছাড়া আর কিছুই দিতে পারেননি। বাধ্য হয়ে একা ছেড়ে যান। এদিকে মেয়ে বিয়ে না করে বাচ্চার জন্ম দিতে চলেছে শুনে বাড়ি থেকে প্রবল আপত্তি ওঠে। নিজেই নিজের পাশে দাঁড়িয়ে সন্তানকে পৃথিবীতে আনার জেদ ধরে ছিলেন নীনা।

অবৈধ সন্তানের মা হয়ে জীবনে কঠিন লড়াই, কেউ পাশে ছিল না। অভিনেত্রী নীনা গুপ্তার (Neena Gupta) কাহিনী
এখন নীনার মেয়ে মাসাবা সুপ্রতিষ্ঠিত ফ্যাশন ডিজাইনার। ‘বাবা’ ভিভিয়ান রিচার্ডসের প্রতি তাঁর কোন রাগ নেই। খুব ছোট বেলায় মা নীনা সব কথা তাঁকে জানিয়ে জীবনে সৎ থাকার পরামর্শ দেন। সেই মতোই জীবনে চলছেন মাসাবা। মায়ের সিদ্ধান্তকে যেমন তিনি শ্রদ্ধা করেন , ঠিক তেমনই বাবা ভিভকে সম্মান করেন । বাবা ক্রিকেটের ধারাভাষ্য দেওয়ার জন্য নানা দেশে ঘুরতেন। স্কুল ছুটি থাকলে সঙ্গে মাসাবাকে নিয়ে যেতেন । বাবার আদর এইভাবে পেয়েছিলেন ছোট্ট মাসাবা। এখন সৎবাবা বিবেক মেহেরা, মা নীনার সঙ্গে থাকেন তিনি। প্রথম বিয়ে টেকেনি। ফের অদিতি রায় হারদারির প্রাক্তন স্বামী সত্যদীপ মিশ্রকে বিয়ে করে দ্বিতীয়বার সংসার পাতলেন মাসাবা। তাঁকে আশীর্বাদ দিতে সদূর অ্যান্টিগা থেকে ছুটে এসেছেন ‘বাবা’ ভিভিয়ান রিচার্ডস। বিয়ের অনুষ্ঠানে ছিলেন মা নীনা গুপ্তা ও সৎ বাবা বিবেক মেহেরা। সবাইকে বেশ হাসিখুশি মেজাজেই দেখা গিয়েছে।

অবৈধ সন্তানের মা হয়ে জীবনে কঠিন লড়াই, কেউ পাশে ছিল না। অভিনেত্রী নীনা গুপ্তার (Neena Gupta) কাহিনী
Some unknown facts about actress Neena Gupta


জন্ম- ১৯৬৯ সালের ৪ জুন (বৃহস্পতিবার)

বাবা- আর এন গুপ্তা, মা- শকুন্তলা গুপ্তা, ভাই- পঙ্কজ গুপ্তা

স্কুল- দ্য লরেন্স স্কুল, সানোয়ারা, সোলান, হিমাচল প্রদেশ

শিক্ষাগত যোগ্যতা – এম ফিল (সংস্কৃত )

প্রেম- অলোকনাথ, সারাংদেব (পণ্ডিত যশরাজের ছেলে), ভিভিয়ান রিচার্ডস , বিবেক মেহেরা

বিবাহ- প্রথম বিয়ে মাত্র ১৬ বছর বয়সে। কলকাতার এক ব্যবসায়ী পরিবারে বিয়ে হলেও মাত্র দুবছর সেই বিয়ে টিকে ছিল।


দ্বিতীয় বিয়ে ২০০৮ সালে বিবেক মেহেরাকে।

· ১৯৮২ সালে ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা থেকে তিন বছরের কোর্স করেন ।

· ১৯৮২ সালে হিন্দি সিনেমা ‘সাথ সাথ’ দিয়ে অভিনয়ের জগতে পা রাখেন নীনা। পরে ‘গান্ধী’ (১৯৮২), মান্ডি (১৯৮৩), জানে ভি দো ইয়ারো (১৯৮৩), রিহাই (১৯৮৮), স্বর্গ (১৯৯০) এবং দৃষ্টি (১৯৯০) মতো ছবিতে অভিনয় করেন ।

· স্যার রিচারড অ্যাটন ব্যুরোর ছবি গান্ধিতে অভিনয় করে ১০,০০০ টাকা পেয়েছিলেন তিনি।

· ১৯৮৫ সাল থেকে টিভি সিরিয়ালেও অভিনয় করতে শুরু করেন নীনা গুপ্তা। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ড্যাডি, দৃষ্টি, জিনা ইসিকা নাম হ্যায়, শাঁস ইত্যাদি।

· খলনায়ক (১৯৯৩) ছবিতে মাধুরী দিক্ষীতের সঙ্গে ‘ চোলি কে পিছে ক্যায় হ্যায়’ গানে নেচে ছিলেন নীনা।


· ১৯৯৭ সালে তাঁর পপ অ্যালবাম গো টু কোর্ট রিলিজ করে । বিরাট ফ্লপ করে এই অ্যালবাম।

· ১৯৯৯ সালে ‘শাঁস’ নামের টিভি সিরিয়ালের মাধ্যমে পরিচালক হিসেবে অভিষেক হয় নীনা গুপ্তার। পুরষ্কৃত হয় তাঁর কাজ।

· অভিনয়ের দ্বিতীয় ইনিংসে বেশ সফল তিনি। যার মধ্যে ২০১৮ সালের ‘বাধাই হো’ ছবিতে নীনার অভিনয় দর্শকের পাশাপাশি সমালোচকদেরও ভালো লাগে। এই ছবি দেখে নীনাকে ব্যক্তিগতভাবে চিঠি লিখে শুভেচ্ছা জানান অমিতাভ বচ্চন।
অবৈধ সন্তানের মা হয়ে জীবনে কঠিন লড়াই, কেউ পাশে ছিল না। অভিনেত্রী নীনা গুপ্তার (Neena Gupta) কাহিনী

No comments:

please do not enter any spam link in the comment box

Powered by Blogger.