৩০ বছর ধরে কেন স্বামীর থেকে আলাদা থাকেন অলকা ইয়াগ্নিক (Alka Yagnik) ? বিশ্বের অন্যতম সেরা গায়িকার জীবনের কথা
৯০ দশকে যাঁদের শৈশব বা যৌবন কেটেছে, তাঁদের কাছে প্রেমের অনুভূতি প্রকাশের অন্যতম ভাষা ছিল হিন্দি ছবির গান। প্রথম প্রেমে পড়া থেকে আঘাত পাওয়া প্রতিটি অনুভূতির সঙ্গে জড়িয়ে থাকত হিন্দি গান। আর সেই হিন্দি গান মানে কুমার শানু-অলকা ইয়াগ্নিক (Alka Yagnik)। এই জুটি কত শত শত যুবকের রাতের ঘুম উড়িয়েছেন তাঁদের গানের মধ্য দিয়ে। সদ্য যৌবনে পা রাখা তরুণ – তরুণীর চোখের জলের সঙ্গেও জড়িয়ে থেকেছে এই জুটি। ২০২৩ সালে এসে সেই অনুভূতি অনুভব করা সম্ভব নয়। তবে এটা ঠিক আজও গান মানে সেই ৮০ বা ৯০ দশকের মেলোডিতে ভরা মনমাতানো সেই সব হিন্দি গান। যা সৃষ্টি করে ছিলেন নদীম-শ্রবণ, যতীন- ললিত বা এ আর রহমান । সেই সব সুর নিজের কন্ঠ দিয়ে জীবন্ত করেছিলেন কুমার শানু, অলকা ইয়াগ্নিকরা। সুরের সেই সব জাদু এত বছর পরেও জীবন্ত। রিমিক্স বা জগাখিচুড়ি গানের দুনিয়ায় ৯০ দশকের সুরেলা গান আজও হিট। তাই তো ইউটিউবে বর্তমানের সবথেকে জনপ্রিয় গানের ব্যান্ড ‘বিটিএস’ এবং মার্কিন পপ স্টার টেলর সুইফটকে পিছনে ফেলে দিয়েছেন অলকা ইয়াগ্নিক (Alka Yagnik)। গিনেস বুক অব ওয়াল্ড রেকর্ডের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী , ২০২২ সালে ইউটিউবে অলকা ইয়াগ্নিকের গাওয়া গান বেজেছে ১ হাজার ৫৩০ কোটি বার। সেখানে বিটিএসের গান মানুষ দেখেছে ৭৯৫ কোটি বার। যা অলকার তুলনায় প্রায় অর্ধেক । এখন আর দোকান থেকে সিডি বা ক্যাসেট কেনার যুগ আর নেই। ইউটিউব বা বিভিন্ন গানের সাইটে টাকা দিয়ে গান ডাউনলোড করার রীতি। সেখানেও অলকা ইয়াগ্নিকরা এগিয়ে। এত বড় গায়িকার ব্যক্তিগত জীবন কিন্তু আর পাঁচজনের মতো সাধারণ ছিল না। বিয়ে করলেও সংসার হয়নি অলকার ।
১৯৮৯ সালে শিলংয়ের ব্যবসায়ী নীরজ কাপুরকে বিয়ে করেন অলকা। কিন্তু আর পাঁচটা গোছানো সংসারের মতো তিনি সবকিছু সাজিয়ে তুলতে পারেননি । কারণ ব্যবসার প্রয়োজনে নীরজ থাকতেন শিলংয়ে আর অলকা মুম্বাইয়ে। বিয়ের পর নিজের কাজের জগতের সঙ্গে কোন রকম কম্প্রোমাইজ করেননি তিনি। ব্যক্তিগত জীবনের ছায়া কাজের ক্ষেত্রে পড়তে দেননি । লং ডিস্টেন্স রিলেশনে সাধারণত সম্পর্ক ভেঙে যায় । কিন্তু অলকা- নীরজের ক্ষেত্রে তেমনটা হয়নি । এতটাই ভালো ছিল তাঁদের মধ্যে বোঝাপড়া। দুজনের প্রেমের শুরুটা অনেকটা রোমান্টিক ফিল্মের মতোই। একবার মায়ের সঙ্গে দিল্লি গিয়েছিলেন অলকা ইয়াগ্নিক। তাঁদের নিতে এসেছিলেন নীরজ। তিনি ছিলেন অলকার মায়ের বন্ধুর ছেলে। প্রথম দেখাতেই একটা ভালো লাগা তৈরি হয় । সেখান থেকে প্রেমে পৌঁছাতে সময় লাগেনি। ব্যবসার প্রয়োজনে নীরজ মুম্বাইয়ে এলে থাকতেন অলকার বাড়িতে। এইভাবেই প্রেম এগতে থাকে। বাড়িতে জানাজানি হয় । প্রবল আপত্তি ওঠে। কারণ, ব্যবসার প্রয়োজনে নীরজের পক্ষে মুম্বাই চলে আসা সম্ভব নয় । আবার গান ছেড়ে অলকার পক্ষে পাকাপাকি শিলং গিয়ে বসবাস করাও অসম্ভব । তাই এই বিয়ে টিকবে না। কিন্তু বাড়ির আপত্তি তাঁরা শোনেননি । সবাইকে ভুল প্রমাণিত করে ৩০ বছর ধরে স্বশরীরে পাশে না থেকেও পাশাপাশি আছেন নীরজ- অলকা ইয়াগ্নিক। তাঁদের একমাত্র মেয়ের নাম শ্রেশা কাপুর।
জন্ম- ১৯৬৬ সালের ২০ মার্চ , কলকাতায়
বাবা- ধর্মেন্দ্র শংকর, মা- শুভা ইয়াগ্নিক, ভাই- সমীর ইয়াগ্নিক
· ছয় বছর বয়স থেকেই অলকা অল ইন্ডিয়া রেডিও কলকাতায় গান গাওয়া শুরু করেন । ১০ বছর বয়সে মা শুভা তাঁকে মুম্বাই নিয়ে আসেন গানের কেরিয়ার উন্নত করার জন্য। কিন্তু বিভিন্ন অডিশনে তিনি রিজেক্ট হয়েছেন । কারণ তখন তাঁর গলা ছিল ফিনফিনে। আরো পরিণত হওয়ার জন্য সঙ্গীত পরিচালকরা অপেক্ষা করতে বলেন ।
· মা শুভা ইয়াগ্নিকও একজন প্রশিক্ষিত শ্রাস্ত্রীয় সঙ্গীত গায়িকা। প্রথম তালিম মায়ের কাছেই।
· প্রথম স্টেজে অনুষ্ঠান কলকাতার কলা মন্দিরে ।
· প্রথম সুযোগ ‘পায়েল কি ঝংকার’ ছবিতে। ত্রিরকত নয়ন গানটি গেয়েছিলেন তিনি।
· প্রায় প্রত্যেক কিংবদন্তী সঙ্গীত পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছেন । যেমন রাহুল দেব বর্মণ , কল্যাণজি-আনন্দজি, লক্ষ্মীকান্ত-প্যায়্যারেলাল, অন্নু মালিক, রাজেশ রোশন , নদীম- শ্রবণ , যতীন- ললিত, এ আর রহমান , শংকর-ইশান- লয় ইত্যাদি।
· প্রায় দেড় হাজার হিন্দি ছবিতে দু’হাজারের বেশি গান গেয়েছেন অলকা ইয়াগ্নিক।
· হিন্দি ছাড়া প্রায় প্রতিটি ভাষায় গানের রেকর্ড আছে তাঁর ।
· দুবার জাতীয় পুরস্কার , সাতবার ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কার সহ একাধিক সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
· ‘ চোলি কে পিছে’ গানের জন্য অলকা এবং ইলা অরুণিকে যৌথভাবে ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল ।
· ‘ চোলি কে পিছে’ গানটিকে অশ্লীল তকমা দিয়ে একাধিক রাজনৈতিক দল প্রতিবাদ জানায়। বিতর্কের জেরে গানটি দূরদর্শন এবং অল ইন্ডিয়া রেডিওতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ।
· গায়িকা অনুরাধা পড়োয়ালের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে গান ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন অলকা । এই নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয় । অলকার দাবি, তিনি ইন্ড্রাস্ট্রিতে নোংরা রাজনীতির শিকার হয়েছেন ।
· ১৯৮৮ সালের ‘ তেজাব’ ছবির ‘এক দো তিন’ গানটি ছিল অলকা ইয়াগ্নিকের জীবনের টারনিং পয়েন্ট । এর পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি ।
· মণিরত্নমের ‘ রোজা’ ছবিতে গান গাওয়ার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার আফসোস আজও করেন অলকা । এ আর রহমান তখন নতুন । একজন আনকোরা সুরকারের গান গাইতে তিনি রাজি ছিলেন না। পরে ‘ রোজা’ গান কি বিশাল হিট হয়েছিল তা আর বলার প্রয়োজন পড়ে না।
১৯৮৯ সালে শিলংয়ের ব্যবসায়ী নীরজ কাপুরকে বিয়ে করেন অলকা। কিন্তু আর পাঁচটা গোছানো সংসারের মতো তিনি সবকিছু সাজিয়ে তুলতে পারেননি । কারণ ব্যবসার প্রয়োজনে নীরজ থাকতেন শিলংয়ে আর অলকা মুম্বাইয়ে। বিয়ের পর নিজের কাজের জগতের সঙ্গে কোন রকম কম্প্রোমাইজ করেননি তিনি। ব্যক্তিগত জীবনের ছায়া কাজের ক্ষেত্রে পড়তে দেননি । লং ডিস্টেন্স রিলেশনে সাধারণত সম্পর্ক ভেঙে যায় । কিন্তু অলকা- নীরজের ক্ষেত্রে তেমনটা হয়নি । এতটাই ভালো ছিল তাঁদের মধ্যে বোঝাপড়া। দুজনের প্রেমের শুরুটা অনেকটা রোমান্টিক ফিল্মের মতোই। একবার মায়ের সঙ্গে দিল্লি গিয়েছিলেন অলকা ইয়াগ্নিক। তাঁদের নিতে এসেছিলেন নীরজ। তিনি ছিলেন অলকার মায়ের বন্ধুর ছেলে। প্রথম দেখাতেই একটা ভালো লাগা তৈরি হয় । সেখান থেকে প্রেমে পৌঁছাতে সময় লাগেনি। ব্যবসার প্রয়োজনে নীরজ মুম্বাইয়ে এলে থাকতেন অলকার বাড়িতে। এইভাবেই প্রেম এগতে থাকে। বাড়িতে জানাজানি হয় । প্রবল আপত্তি ওঠে। কারণ, ব্যবসার প্রয়োজনে নীরজের পক্ষে মুম্বাই চলে আসা সম্ভব নয় । আবার গান ছেড়ে অলকার পক্ষে পাকাপাকি শিলং গিয়ে বসবাস করাও অসম্ভব । তাই এই বিয়ে টিকবে না। কিন্তু বাড়ির আপত্তি তাঁরা শোনেননি । সবাইকে ভুল প্রমাণিত করে ৩০ বছর ধরে স্বশরীরে পাশে না থেকেও পাশাপাশি আছেন নীরজ- অলকা ইয়াগ্নিক। তাঁদের একমাত্র মেয়ের নাম শ্রেশা কাপুর।
Some unknown facts about Alka Yagnik
জন্ম- ১৯৬৬ সালের ২০ মার্চ , কলকাতায়
বাবা- ধর্মেন্দ্র শংকর, মা- শুভা ইয়াগ্নিক, ভাই- সমীর ইয়াগ্নিক
· ছয় বছর বয়স থেকেই অলকা অল ইন্ডিয়া রেডিও কলকাতায় গান গাওয়া শুরু করেন । ১০ বছর বয়সে মা শুভা তাঁকে মুম্বাই নিয়ে আসেন গানের কেরিয়ার উন্নত করার জন্য। কিন্তু বিভিন্ন অডিশনে তিনি রিজেক্ট হয়েছেন । কারণ তখন তাঁর গলা ছিল ফিনফিনে। আরো পরিণত হওয়ার জন্য সঙ্গীত পরিচালকরা অপেক্ষা করতে বলেন ।
· মা শুভা ইয়াগ্নিকও একজন প্রশিক্ষিত শ্রাস্ত্রীয় সঙ্গীত গায়িকা। প্রথম তালিম মায়ের কাছেই।
· প্রথম স্টেজে অনুষ্ঠান কলকাতার কলা মন্দিরে ।
· প্রায় প্রত্যেক কিংবদন্তী সঙ্গীত পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছেন । যেমন রাহুল দেব বর্মণ , কল্যাণজি-আনন্দজি, লক্ষ্মীকান্ত-প্যায়্যারেলাল, অন্নু মালিক, রাজেশ রোশন , নদীম- শ্রবণ , যতীন- ললিত, এ আর রহমান , শংকর-ইশান- লয় ইত্যাদি।
· প্রায় দেড় হাজার হিন্দি ছবিতে দু’হাজারের বেশি গান গেয়েছেন অলকা ইয়াগ্নিক।
· হিন্দি ছাড়া প্রায় প্রতিটি ভাষায় গানের রেকর্ড আছে তাঁর ।
· দুবার জাতীয় পুরস্কার , সাতবার ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কার সহ একাধিক সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
· ‘ চোলি কে পিছে’ গানের জন্য অলকা এবং ইলা অরুণিকে যৌথভাবে ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল ।
· গায়িকা অনুরাধা পড়োয়ালের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে গান ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন অলকা । এই নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয় । অলকার দাবি, তিনি ইন্ড্রাস্ট্রিতে নোংরা রাজনীতির শিকার হয়েছেন ।
· ১৯৮৮ সালের ‘ তেজাব’ ছবির ‘এক দো তিন’ গানটি ছিল অলকা ইয়াগ্নিকের জীবনের টারনিং পয়েন্ট । এর পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি ।
READ MORE: জীতেন্দ্র কন্যা একতা কাপুরের জীবনের বিতর্কিত অধ্যায় (Ekta Kapoor known for controversy?)
What is the total net worth of Alka Yagnik in rupees?
২০২৩ সালে অলকা ইয়াগ্নিকের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১০ মিলিয়ন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় ৮১ কোটি টাকা।
Alka Yagnik first song
ছ’বছর বয়সে রেডিওতে প্রথম ভজন গেয়েছিলেন। তারপর ১৯৮০ সালে ‘ পায়েল কি ঝংকার’ ছবিতে প্রথম প্লেব্যাক। ১৯৮১ সালে বড় সুযোগ অমিতাভ বচ্চনের ‘লাওয়ারিস’ ছবিতে ‘ মেরে অঙ্গনে মে’ গানটি গেয়ে সুপারহিট হয়েছিলেন ।
FAQ
What is the total net worth of Alka Yagnik in rupees?
২০২৩ সালে অলকা ইয়াগ্নিকের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১০ মিলিয়ন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় ৮১ কোটি টাকা।
Alka Yagnik first song
ছ’বছর বয়সে রেডিওতে প্রথম ভজন গেয়েছিলেন। তারপর ১৯৮০ সালে ‘ পায়েল কি ঝংকার’ ছবিতে প্রথম প্লেব্যাক। ১৯৮১ সালে বড় সুযোগ অমিতাভ বচ্চনের ‘লাওয়ারিস’ ছবিতে ‘ মেরে অঙ্গনে মে’ গানটি গেয়ে সুপারহিট হয়েছিলেন ।
No comments:
please do not enter any spam link in the comment box