ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে শিল্পী শুভাপ্রসন্নের ‘ভাষা’ নিয়ে আপত্তি তোলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। ব্যস, তারপর থেকেই তাল-লয় সব কেমন যেন কেটে গিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ক্ষমতায় আসেনি, তখন থেকেই শুভাপ্রসন্ন তাঁর সঙ্গে। নন্দীগ্রাম বা সিঙ্গুর সর্বত্র পাশে ছিলেন। মুখে মমতা ভজন ছাড়া কিছুই শোনা যেত না। এমনকি সারদা-নারদা হোক বা সাম্প্রতিক শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারি, কোনদিন মুখে টুঁ শব্দটি করেননি। বীরভূমের বগটুইয়ে এত মানুষ জীবন্ত জ্বলে মরে যাওয়ার পরও তাঁর চোখে জল আসেনি। উল্টে বলেছিলেন, আমাদের কি কাজ নেই। সব জায়গায় কাঁদতে যাব ? অথচ নন্দীগ্রামের ঘটনায় তাঁর চোখের জল বাগ মানেনি। রাস্তায় নেমে কেঁদেছিলেন। দেখেছিল বঙ্গবাসী। এখন প্রশ্ন উঠছে, কি এমন ঘটে গেল ? শুভাপ্রসন্নের মোহ একেবারে কেটে গেল ? এও কি সম্ভব ? রামভক্ত হনুমানের মুখে বিরাগভাজন। গত মঙ্গলবার ভাষাদিবসের অনুষ্ঠানে বাংলা ভাষায় ‘পানি’ বা ‘দাওয়াত’-এর মতো শব্দের ‘অনুপ্রবেশ’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রবীণ শিল্পী শুভাপ্রসন্ন। যা শুনে খুব অপ্রসন্ন হন মুখ্যমন্ত্রী। কালবিলম্ব না করেই সেই মঞ্চ থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তিনি শিল্পীর সঙ্গে একমত নন। নানা ধরণের শব্দের প্রবেশে বাংলা ভাষা আরও সমৃদ্ধ হবে। কিন্তু শুভাপ্রসন্ন নিজের মন্তব্যে অনড়। তাঁর মতে, “মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা আছে। আমার নেই”। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরাসরি সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ ভালোভাবে একদম নেয়নি তৃণমূল।
মঞ্চের বিতর্ক মঞ্চেই শেষ হয়নি। বরং সম্মুখ সমরে শাসক দল। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ তো রীতিমতো তোপ দেগে বলেছেন , “পদ বা উপাধি কি লাগবে বলুন ? কুৎসা করবেন না”। যার জবাবে প্রবীণ শিল্পী বলেন, “৭৬ বছর বয়সে আমার আর কি চাই ? বরং কি কি ত্যাগ করেছি তা মানুষ মনে রাখবে”। ছাড়বার পাত্র নয় তৃণমূল। এবার সরকার থেকে শুভাপ্রসন্ন কোন কোন সুবিধা নিয়েছেন, তাই প্রকাশ্যে আনতে চাইছেন তাঁরা। শাসক দলের এক নেতা প্রকাশ্যে বলেছেন, “সুবিধাবাদী শুভাপ্রসন্ন বাম জামানায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ভক্ত ছিলেন। রাজারহাটে নিজের স্টুডিও তৈরির জন্য বাম সরকারের কাছ থেকে জলের দরে জমি নিয়েছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন সরকার বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন। তখন রেলের বিভিন্ন কমিটির সদস্য হয়েছিলেন। রেলকে নিজের ছবি বিক্রি করেছিলেন। তৃণমূল সরকারে আসার পর দুবার হেরিটেজ কমিটির প্রধান হয়েছিলেন। একাধিক সুবিধা ভোগ করেছেন। নির্দিষ্ট কয়েকজনকে সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিলেন বলে তাঁকে সেই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সেটাই প্রবীণ শিল্পীর রাগ”। তবে এই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শিল্পী। ১৪ কোটি টাকা দিয়ে জমি কিনেছিলেন, কোন দুর্নীতিতে তিনি যুক্ত নন বলে দাবী করেছেন। সাপের লেজে পা পড়েছে, সেকি সহজে ছাড়বে ? সারদা কর্তার সঙ্গে শুভাপ্রসন্নের সম্পর্ক থেকে চ্যানেল বিক্রির দুর্নীতি প্রকাশ্যে আনতে তৎপর শাসক দল। সব দেখে শুনে এটা আন্দাজ করা যায়, অদূর ভবিষ্যতে প্রবীণ শিল্পীকে জেলে যেতে দেখলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
পুরো নাম- শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য
জন্ম- ১৯৪৭ সালের ২০ অক্টোবর, কলকাতায়
শিক্ষা – ১৯৬৯ সালে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক
বিয়ে করেন শিল্পী শিপ্রা ভট্টাচার্যকে।
৬০ এবং ৭০-এর দশকে কলকাতায় ভয়াবহ হিংসা নিয়ে একাধিক ছবি এঁকেছিলেন।
ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশ, জার্মানি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড এবং সিঙ্গাপুরে তাঁর ছবির প্রদর্শনী হয়েছে।
২০০৭ সাল থেকে সক্রিয় রাজনীতিতে জড়ান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবে রাজ্যে পরিবর্তনের পক্ষে রাস্তায় নামেন।
রেলের নতুন কমিটি গঠন করে মোটা বেতনে তাঁকে নিযুক্ত করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Subhaprasanna vs Trinamool: শুভাপ্রসন্নের বিরুদ্ধে মাঠে তৃণমূল
মঞ্চের বিতর্ক মঞ্চেই শেষ হয়নি। বরং সম্মুখ সমরে শাসক দল। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ তো রীতিমতো তোপ দেগে বলেছেন , “পদ বা উপাধি কি লাগবে বলুন ? কুৎসা করবেন না”। যার জবাবে প্রবীণ শিল্পী বলেন, “৭৬ বছর বয়সে আমার আর কি চাই ? বরং কি কি ত্যাগ করেছি তা মানুষ মনে রাখবে”। ছাড়বার পাত্র নয় তৃণমূল। এবার সরকার থেকে শুভাপ্রসন্ন কোন কোন সুবিধা নিয়েছেন, তাই প্রকাশ্যে আনতে চাইছেন তাঁরা। শাসক দলের এক নেতা প্রকাশ্যে বলেছেন, “সুবিধাবাদী শুভাপ্রসন্ন বাম জামানায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ভক্ত ছিলেন। রাজারহাটে নিজের স্টুডিও তৈরির জন্য বাম সরকারের কাছ থেকে জলের দরে জমি নিয়েছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন সরকার বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন। তখন রেলের বিভিন্ন কমিটির সদস্য হয়েছিলেন। রেলকে নিজের ছবি বিক্রি করেছিলেন। তৃণমূল সরকারে আসার পর দুবার হেরিটেজ কমিটির প্রধান হয়েছিলেন। একাধিক সুবিধা ভোগ করেছেন। নির্দিষ্ট কয়েকজনকে সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিলেন বলে তাঁকে সেই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সেটাই প্রবীণ শিল্পীর রাগ”। তবে এই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শিল্পী। ১৪ কোটি টাকা দিয়ে জমি কিনেছিলেন, কোন দুর্নীতিতে তিনি যুক্ত নন বলে দাবী করেছেন। সাপের লেজে পা পড়েছে, সেকি সহজে ছাড়বে ? সারদা কর্তার সঙ্গে শুভাপ্রসন্নের সম্পর্ক থেকে চ্যানেল বিক্রির দুর্নীতি প্রকাশ্যে আনতে তৎপর শাসক দল। সব দেখে শুনে এটা আন্দাজ করা যায়, অদূর ভবিষ্যতে প্রবীণ শিল্পীকে জেলে যেতে দেখলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
এক নজরে শুভাপ্রসন্নের জীবন
পুরো নাম- শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য
জন্ম- ১৯৪৭ সালের ২০ অক্টোবর, কলকাতায়
শিক্ষা – ১৯৬৯ সালে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক
বিয়ে করেন শিল্পী শিপ্রা ভট্টাচার্যকে।
৬০ এবং ৭০-এর দশকে কলকাতায় ভয়াবহ হিংসা নিয়ে একাধিক ছবি এঁকেছিলেন।
ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশ, জার্মানি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড এবং সিঙ্গাপুরে তাঁর ছবির প্রদর্শনী হয়েছে।
২০০৭ সাল থেকে সক্রিয় রাজনীতিতে জড়ান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবে রাজ্যে পরিবর্তনের পক্ষে রাস্তায় নামেন।
রেলের নতুন কমিটি গঠন করে মোটা বেতনে তাঁকে নিযুক্ত করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
No comments:
please do not enter any spam link in the comment box