
গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার সংবাদের শিরোনামে নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি। স্ত্রীর সঙ্গে বচসা, পরিচারিকার বিস্ফোরক অভিযোগ , থানা-পুলিশ ইত্যাদি নানা ঝামেলায় জড়িয়েছেন তিনি। পারিবারিক বচসা যখন তুঙ্গে, তখন কবর খুঁড়ে বেরিয়ে আসছে পুরনো কলঙ্ক। ছোট থেকেই প্রেম, তারপর লিভ ইন, লিভ ইন পাটনারকে ছেড়ে প্রথম বিয়ে, কিছুদিনের মধ্যে মোহভঙ্গ, ফের লিভ ইন পারটানকে বিয়ে, আমেরিকায় গিয়ে হোটলের মহিলা কর্মীর সঙ্গে ওয়ান নাইট স্ট্যান্ড। জীবনে কি না করেননি জাতীয় পুরস্কার জয়ী অভিনেতা। জন্ম হয়েছিল উত্তরপ্রদেশের মজ্জফরনগর জেলার ছোট গ্রাম বুধানায় এক মুসলিম জমিদার পরিবারে। আট ভাইবোন। নওয়াজ ছিলেন সবার ছোট। ছোটবেলার অধিকাংশ সময় কেটেছে উত্তরাখণ্ডে । সেখানেই স্কুল-কলেজ। দিল্লিতে একটি নাটক দেখে মনে অভিনেতা হওয়ার বাসনা জাগে। ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামায় ভর্তি হন। সেই সময়ে একাধিক নাটকে অভিনয় করেছিলেন। ১৯৯৯ সালে মুম্বাইয়ে পা রাখেন। প্রথম সুযোগ পান আমির খানের ‘সারফোরশ’ ছবিতে। খুব ছোট রোল। এরপর রাম গোপাল বর্মার ‘শূল’, ‘জঙ্গল’, রাজ কুমার হিরানীর ‘মুন্নাভাই এম বি বি এস’ সহ বেশ কিছু সিনেমা ও সিরিয়ালে অভিনয় করেন। কিন্তু সাফল্য পাচ্ছিলেন না। ২০০২ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত খুব কষ্টে কাটে। টাকার অভাবে ভাড়ার ফ্ল্যাট ছেড়ে দিতে হয়। এক বন্ধু রান্না করার বিনিময়ে বাড়িতে থাকতে দিয়েছিলেন। ‘ব্ল্যাক ফ্রাই ডে’, ‘দেব ডি’, ‘নিউ ইয়ক’-এ অভিনয় করেন। ভাগ্য পাল্টায় ২০১০ এসে। আমির খান প্রোডাকশনের ‘পিপলি লাইভ’ সিনেমায় স্থানীয় সাংবাদিকের চরিত্রে তাঁর অভিনয় অনেকের নজরে পড়ে। ২০১২ সালে ‘কাহিনী’ বলিউডে নওয়াজকে অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে।
Nawazuddin Siddiqui gangs of women: ‘চরিত্রবান’ নওয়াজউদ্দিন
একদিকে যখন লড়াই চলছে, অন্যদিকে তখন দুবার বিয়ে করে ফেলেছেন নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি। খুব ছোট বয়স থেকেই এক হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবারের মেয়ে অঞ্জনা কিশোর পাণ্ডের সঙ্গে প্রেম ছিল বুধানায়। মুম্বাইয়ে পায়ের তলায় মাটি কিছুটা শক্ত হওয়ার পর সেই মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে আসেন। লিভ ইন করতে শুরু করেন। কিন্তু ২০১০-এ সেই রিলেশন খতম হয়ে যায়। নওয়াজ এরপর শিব্বা নামের একটি মহিলাকে বিয়ে করেন। দু’বছরের মধ্যেই বিয়ে ভেঙে যায়। কারণ ছিল নওয়াজের একাধিক সম্পর্ক। বিবাহিত নওয়াজ এক বিদেশী মহিলার সঙ্গে তখন ডেটিং করছিলেন। স্ত্রী সেটা মেনে নেননি। বিয়ে ভাঙার পর অভিনেত্রী নিহারিকা সিংয়ের সঙ্গে কিছুদিন প্রেম করেন। সেই প্রেমের ইতি ঘটার পর নওয়াজের প্রথম লিভ ইন সঙ্গী অঞ্জনার কথা মনে পড়ে। তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেন। অঞ্জনা মুসলিম ধর্ম নিয়ে নাম পালটে হন আলিয়া। দুটি সন্তান হয়। একটি মেয়ে ও একটি ছেলে। বিবাহিত নওয়াজ শুধরে যাওয়ার পাত্র নন। নিউ ইয়র্কের সোহো এলাকায় একটি রেস্টুরেন্টে এক মহিলা কর্মচারী তাঁর সঙ্গে আলাপ করেছিলেন। নওয়াজ সেই সুযোগ পূর্ণমাত্রায় ব্যবহার করেছিলেন। নিজের ইন্টারভিউয়ে সেদিনের ওয়ান নাইট স্ট্যান্ডের কথা স্বীকার করেছিলেন নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি।
Nawazuddin Siddiqui gangs of women: বিকৃত যৌনতায় বিশ্বাসী
দ্বিতীয় বিয়ের ১০ বছরের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু। ২০২০ সালে আলিয়া নিজের সোশ্যাল সাইটে বিবাহ বিচ্ছেদ চান বলে জানান। যদিও পরে তিনি নিজের বিবাহিত জীবনকে দ্বিতীয় সুযোগ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। গত জানুয়ারী মাসে নওয়াজের মা বউমার বিরুদ্ধে সম্পত্তি নিয়ে মামলা করেন। তারপর থেকেই জটিলতা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। আলিয়া দাবী করেন, নওয়াজ তাঁকে মানসিক ও শারীরিকভাবে হেনস্থা করেন। এমনকি নিজের দ্বিতীয় সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকার করেন। এদিকে পুরনো বান্ধবী নিহারিকা সিং অভিযোগ করেন, নওয়াজ আসলে বিকৃত যৌনতায় বিশ্বাসী। ফিজিক্যাল রিলেশনের সময় মারধরও করতেন। শুধু তাই নয়, কঠোরভাবে জাতপাত মেনে চলেন।
No comments:
please do not enter any spam link in the comment box