Musharraf Bengali girlfriend, who is she?: কিশোর বয়সে এক বাঙালি কন্যার প্রেম মৃত্যুর দিন পর্যন্ত ভোলেননি পারভেজ মোশারফ
"চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা,
মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য; অতিদূর সমুদ্রের’ পর
হাল ভেঙে যে -নাবিক হারায়েছে দিশা
সবুজ ঘাসের দেশ যখন সে চোখে দেখে দারুচিনি- দ্বীপের ভিতর ,
তেমনি দেখেছি তারে অন্ধকারে; বলেছে সে, ‘এতদিন কোথায় ছিলেন?’
পাখির নীড়ের মতো চোখ তুলে নাটোরের বনলতা সেন ।"
জীবনানন্দ দাসের ‘বনলতা সেন’ কবিতা তিনি কোনদিন শুনে ছিলেন কিনা জানা নেই। তবে, কিশোর বয়সে তাঁকে দুদণ্ড শান্তি দিয়েছিল কোন এক ‘বনলতা সেন’। তিনি পাকিস্তানের প্রাক্তন সেনাপ্রধান ও প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশারফ। রবিবার ৭৯ বছর বয়সে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন তিনি। পিছনে থেকে গিয়েছে অনেক যুদ্ধের ইতিহাস, কাশ্মীর নিয়ে ভারতের সঙ্গে দ্বন্দ্ব, রাতারাতি দেশে সেনা শাসন জারি করে ক্ষমতা দখল থেকে শুরু করে একাধিক বিতর্ক । একই সঙ্গে পড়ে রইল তাঁর প্রেম জীবনের কাহিনী। যা তিনি নিজের বায়োগ্রাফিতে উল্লেখ করে গিয়েছেন। স্বভাবে দোর্দণ্ড প্রতাপ সেনা প্রধান হলে কি হবে, আসলে তাঁর মনটা ছিল প্রেমিক। রোমান্সে ভরপুর । তাই তো বারবার প্রেমে পড়তেন পারভেজ মোশারফ। জানেন তিনি একবার এক বাঙালি কিশোরীর প্রেমে পাগল হয়েছিলেন । কিশোর বয়সের সেই প্রেম না টিকলেও পারভেজের মনে চিরদিন টিকে ছিলেন সেই বাঙালি কন্যা। যাঁকে তিনি শেষ বয়সে এসেও ভুলতে পারেননি । কথায় বলে , প্রথম প্রেম কখনো ভোলা যায় না। তবে এটা তাঁর দ্বিতীয় রোমান্স ছিল। কিন্তু সত্যিকারের ভালোবেসে ছিলেন সেই বঙ্গ তনয়াকে। যার চুল ছিল বিদিশার নিশা আর মুখশ্রী ছিল শ্রাবস্তীর কারুকার্য ! তবে তাঁর নাম কি ছিল কোনদিনই প্রকাশ করেননি পারভেজ মোশারফ। শুধু আত্মজীবনীতে লিখেছেন, সে এখন অন্য কারও ঘরণী । থাকেন বাংলাদেশে। অর্থাৎ প্রেমিকা দূরে সরে গেলেও তাঁর খবর সেনাপ্রধান মোশারফ ঠিকই রাখতেন। কিন্তু কেন ভেঙে গেল প্রেম ? কেন এক হতে পারল না বাংলাদেশ আর পাকিস্তানের দুই কিশোর-কিশোরী ?
২০০৬ সালে পারভেজ মোশারফের আত্মজীবনী ‘ইন দ্য লাইন অব ফায়ারঃ আ মেমোয়ার’ প্রকাশিত হয় । জীবনের নানা দিকের কথা তুলে ধরার পাশাপাশি প্রেমের কথাও অকপটে বলেছেন তিনি। সেখানেই প্রাক্তন পাক সেনাশাসক লিখেছিলেন, তাঁর দ্বিতীয় প্রেমিকা ছিলেন একজন বাঙালি মেয়ে। থাকতেন বাড়ি পাশেই। সেই মেয়ের অপরূপ সৌন্দর্য তাঁকে মুগ্ধ করেছিল। প্রেমে পড়তে বেশি সময় লাগেনি। অন্যদিক থেকেও সাড়া পেয়েছিলেন। ফলে প্রতিবেশিনীর সঙ্গে গোপনে প্রেম জমে উঠেছিল। প্রাক্তন পাক প্রেসিডেন্ট জানান, একদম কিশোর বয়সে প্রথম প্রেমে পড়েছিলেন তিনি। তবে সেটা প্রেম না শুধুই আকর্ষণ তা বোঝার আগেই সেই মেয়ে জীবন থেকে হারিয়ে যায় । এরপর ‘বাঙালি’ মেয়ে তাঁকে মোহিত করে । প্রথম ভালোবাসার থেকে অনেক বেশি গভীর ছিল দ্বিতীয় প্রেম। তাঁকে একবার দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকতেন। গোপনে চিঠি পাঠাতেন। সেই চিঠি অজান্তেই নিয়ে যেতেন মোশারফের নানি। তিনি নানিকে বলতেন , যাও পাশের বাড়ির খবর নিয়ে এস। আর লুকিয়ে নানির বোরখার পকেটে প্রেমপত্র ভরে রাখতেন। প্রেমিকাও আগে থেকেই জানতেন, কোথায় চিঠি রাখা আছে। তিনিও সেটি সংগ্রহ করে নিতেন। এইভাবে ভালোই চলছিল। কিন্তু কপালে সুখ বেশিদিন সইল না। মোশারফ পাকিস্তানের সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার পরও দেখা সাক্ষাৎ চলত। এমনকি সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট হওয়ার পরও যোগাযোগ ছিল। তিনি লিখেছেন, সেনা প্রশিক্ষণের জন্য করাচি বেছে নিয়েছিলেন। যাতে প্রেমিকার থেকে বেশি দূরে যেতে না হয়। সবসময় প্রেমিকার জন্য মন খারাপ করত । কিন্তু অস্ত্র প্রশিক্ষণ ছাড়া অ্যান্টি এয়ারক্যাফট রেজিমেন্টে যাওয়া যায় না। তাই মন খারাপ করা অনুভূতি নিয়েই প্রেমিকার থেকে অনেক দূরে যেতে হল তাঁকে । এরপর একদিন আকস্মিক একটি চিঠি এল, লিখেছিলেন সেই প্রেমিকা। তাঁর পরিবার পাকিস্তান ছেড়ে পূর্ব পাকিস্তান অর্থাৎ বাংলাদেশে চলে গেল। এর এভাবেই শেষ হয়ে গেল পারভেজ মোশারফের দ্বিতীয় ভালোবাসা। আত্মজীবনীতে তিনি লিখেছেন, সেই প্রেমিকা এখন বাংলাদেশে অন্য কারও সংসার করছেন । ভালো আছেন, সুখে আছেন।
লম্পটরা বার বার প্রেম করে কিন্তু মিডিয়া কে সতর্ক থাকতে হবে। শয়তান মরে ভগবান হয় না
ReplyDelete