Bonny Sengupta ott platform: চারিদিকে শনির দৃষ্টি, এবার বনিকে ব্যান করল ওটিটি প্ল্যাটফর্ম

প্রায় দশ বছরের সিনেমা কেরিয়ার। যদিও একটি ছবিও হিট নেই। তাতে ঠাঁটবাঁটে কিছু কমতি নেই। দামী গাড়ি। বাড়ি। সেসব কীভাবে হল এখন সেটাই প্রশ্নের মুখে। ইডির খাতায় নাম উঠেছে সুখেন দাসের নাতি বনি সেনগুপ্তের। পশ্চিমবঙ্গ তোলপাড় করা নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিজুক্ত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের সঙ্গে ওঠাবসা ছিল বনির। টাকাও লেনদেন হয়েছে। শুধু তিনি নন, মা পিয়া সেনগুপ্তের নামও জড়িয়ে গিয়েছে। যাই হোক সেসব প্রমাণ সাপেক্ষ। গত সপ্তাহে ন’ঘণ্টা জেরা ফেস করার পরার ফের মঙ্গলবার ইডির দপ্তরে গিয়েছেন বনি। এখন সময় মোটেই ভালো যাচ্ছে না তাঁর। গার্লফ্রেন্ড কৌশানী মুখোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে খুলেছিলেন নিজের প্রোডাকশন হাউস। প্রথম ছবি ক’দিন আগেই রিলিজ করেছিল। ‘ডাল, বাটি, চুরমা’। সুপার ফ্লপ। এখন প্রশ্ন উঠেছে, যে নায়কের তেমন বাজার নেই, সে কোন ভিত্তিতে নিজের হাউস খুলে ফেললেন ? টাকা এল কোথা থেকে ? কে দিল ? তাহলে কি... ? প্রশ্ন অনেক। উত্তর অধরা। এরই মধ্যে শোনা যাচ্ছে, প্রেমিকা মুখ ফেরাতে শুরু করেছেন। তিনি নাকি ওয়েবসিরিজে কাজ করতে চান। তাই এক পরিচালকের ‘বাহুলগ্না’ হয়েছেন। বনিকে আর ভালো লাগছে না। ধাক্কা আরও আছে, একটি নামী ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ঘোষণা করল, তারা আর বনির ছবি কিনবে না। বনিকে তারা ব্যান করল।

কেন ব্যান বনি ?

এমনিতে নায়ক হিসেবে বনির কোন বাজার নেই। একটিও ছবি বাজারে কাটেনি। ওটিটিতেও যেকটি ছবি আছে, সেগুলিও নাকি দর্শক দেখে না। এদিকে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। দুর্নীতিতে নাম জড়াল। যদিও তদন্ত চলছে। এই অবস্থায় রিস্ক নিচ্ছে না সেই সংস্থা। তারা আপাতত বনির কোন ছবি কিনবে না। আগামী ছ’মাস বনিকে ব্যান করল তারা। হাজার হোক বাজার আগে। ফলে জাত-মান-ভাত সবই গেল। এখন বনির সামনে একটাই রাস্তা খোলা। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করা।

টাকা ফেরাবেন বনি ? উত্তর স্পষ্ট নয়। কুন্তলের কাছ থেকে গাড়ি কেনার জন্য ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। পরে নাকি নানা শো করে সেই টাকা শোধ করে দিয়েছেন। এখন এত দামী গাড়ি কিনতে কেন কুন্তল ঘোষ টাকা দিয়েছিলেন ? প্রশ্ন উঠছে। শোনা যাচ্ছে, ইডির কাছে টাকা ফিরিয়ে দিতে পারেন বনি। কিন্তু তাতে কী কলঙ্ক মুছবে ?

দাদু সুখেন দাসকে সম্মান দেননি

যাঁর তৈরি করা ভিতের উপর দাঁড়িয়ে এত কিছু, সেই মানুষটার নাম ভুলেও কখনো উচ্চারণ করতেন না বনি সেনগুপ্ত। বাবা পরিচালক অনুপ সেনগুপ্ত প্রথম জীবনে ছিলেন সুখেন দাসের সহকারী। আর মা পিয়া অভিনেত্রী। যদিও বাবা সুখেন দাস ছাড়া তাঁকে কেউ কোনদিন তেমনভাবে সুযোগ দেননি। সুখেন দাস পিয়া আর জয় বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে তৈরি করেন ‘মিলন তিথি’। সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন তাঁর ভাই অজয় দাস। ছবি বিরাট হিট। ছবির গান তার থেকে বেশি হিট। আজও কিশোর কুমারের কণ্ঠে কালজয়ী সেইসব গান মানুষের মনে আছে। কিন্তু পিয়া আর নায়িকা হতে পারেননি। কারণ তাঁর মধ্যে সেই উপকরণ ছিল না। পরে স্বামী অনুপ সেনগুপ্তের একাধিক ছবিতে অভিনয় করেন।

অনাথ, দিশেহারা সুখেন দাস খুব ছোট থেকেই সিনেমা পাড়াতে পড়ে থেকে সিনেমাকে নিজের জীবন বানিয়েছিলেন। ছোট থেকেই শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করতেন। তারপর সহশিল্প। উত্তম কুমারের সঙ্গে একাধিক ছবিতে কাজ করেন। পরে হয়ে ওঠেন পরিচালক। প্রচুর হিট ছবির পরিচালক ছিলেন তিনি। সেগুলির গুণমান নিয়ে এখনকার ফিল্মি বোদ্ধারা অনেক জ্ঞান দিতে পারেন, কিন্তু এটা মাথায় রাখতে হবে সেইসব ছবি ব্যবসা দিয়েছিল। খেয়ে, না খেয়ে মেয়ে, নাতিনাতনিদের জন্য সিনেমাতে ভিতটা তৈরি করে দিয়ে গিয়েছিলেন সুখেন দাস। আজ বনি সেনগুপ্ত অভিনয় না জেনেও তার ফল পাচ্ছেন। কিন্তু সেই কৃতজ্ঞতাবোধ তাঁর নেই। দাদুর নাম বলতে তিনি লজ্জা পান। বরং মেন্টর হিসেবে উল্লেখ করেন পরিচালক রাজ চক্রবর্তীকে। সত্যি অদ্ভূত দুনিয়া।

No comments:

please do not enter any spam link in the comment box

Powered by Blogger.