বেশি দিন আগের কথা নয়। এন টি ওয়ান স্টুডিওতে তাঁর অফিসের বাইরে যারা লাইন দিত, আজ তারাই চিনতে পারে না। যারা দেখা হলেই পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করত। মুখে একরাশ হাসি নিয়ে বলত, দাদা একটু দেখবেন। আজ সেই সব মুখগুলো অপরিচিত হয়ে গিয়ে গিয়েছে। অথচ , তাঁর পরিচালনায় বাংলা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি উপহার পেয়েছে লাঠি, প্রতীক, প্রতিকার, প্রতিদান, শ্বেত পাথরের থালার মতো কালজয়ী সিনেমা। এতক্ষণে কারও বুঝতে কোন পরিচালকের কথা বলছি। প্রভাত রায়। তরুণ মজুমদারের পরে বাংলা বাণিজ্যিক ছবিকে অন্যমাত্রা দিয়েছিলেন যিনি। যাঁর ছবি একসঙ্গে হাউসফুল হয়েছে, আবার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিল। লাঠি এবং শ্বেত পাথরের থালা একদিকে সুপারহিট, আবার পাশাপাশি জাতীয় পুরস্কার জিতে বাংলা সিনেমাকে সমৃদ্ধ করেছে। যখন তিনি ব্যস্ত পরিচালক ছিলেন, তখন প্রসেনজিৎ থেকে জিত সবাই ভিড় করতেন। রূপা গঙ্গোপাধ্যায় থেকে শুভশ্রী কাকে না তিনি সুযোগ দিয়েছেন। এখন তাঁরা পরিচিত অভিনেতা-অভিনেত্রী। আর যাঁর হাত ধরে উত্থান, সেই মানুষটার খবর কেউ রাখে না। গুরুত্বর অসুস্থ প্রভাত রায়। বাঙ্গুর হাসপাতালে ভর্তি। শুধুমাত্র ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া কেউ দেখতে আসেননি। দেখতে আসা দূরের কথা, কেমন আছেন, সেই খবরটুকুও কেউ মনে করে নেয়নি।
গত বছর এপ্রিল মাসে স্ত্রী জয়শ্রী বন্দ্যোপাধ্যায় মারা যান। তারপর থেকে সম্পূর্ণ একা নিঃসন্তান প্রভাত রায়। ভাইপোরা খোঁজখবর রাখেন। স্ত্রীর মৃত্যুর ধাক্কা তিনি কাটিয়ে উঠতে পারেননি। মানসিকভাবে একা হয়ে পড়েন। এমনিতেই প্রায় ১০ বছর ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে কোন যোগাযোগ নেই। কাজ নেই। ৭৭ বছরের পরিচালক নিঃসঙ্গ একা হয়ে পড়েছিলেন। একসময় বাড়িতে নামীদামী শিল্পীদের আনাগোনা লেগেই থাকত। ‘বউদি’ জয়শ্রীর হাতে খাবার খেতে সবাই খুব ভালোবাসত। সেই ‘বউদি’র মৃত্যুর পর কেউ আসেনি। একমাত্র টোটা রায়চৌধুরী এসেছিলেন। পারলৌকিক কাজে এসেছিলেন রঞ্জিত মল্লিক।
স্ত্রীর মৃত্যু পর ফেসবুকে রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। লিখেছিলেন, “আমি প্রায় ১৫ জন নতুন ছেলেমেয়েকে সুযোগ দিয়েছিলাম। ঋতুপর্ণা, টোটা, রূপা গঙ্গোপাধ্যায় থেকে শুভশ্রী, সায়ন্তিকা। এর মধ্যে তিনজন আমাকে মনে রেখেছে। টোটা, ঋতুপর্ণা আর সায়ন্তিকা শুধুমাত্র খবর রাখে। বাকিরা অকৃতজ্ঞ”। তিনি আরও লেখেন, “জয়শ্রীর মৃত্যুর পর প্রসেনজিৎ আসবে বলেছিল। কিন্তু আসেনি। আসলে যতদিন কাজ ততদিন সবাই মনে রাখে, তারপর ভুলে যায়। অথচ জয়শ্রীকে বউদি বলত প্রসেনজিৎ। ঘর থেকে ওর জন্য খাবার রান্না করেও নিয়ে গিয়েছে জয়শ্রী। আজ সে সব ভুলে গিয়েছে। জিত তো খোঁজ পর্যন্ত নেয়নি ”।
বাড়িতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় প্রতিবেশীরা খবর দিয়েছিলেন আর পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তীকে। তিনি কিছুটা দূরেই থাকেন। হরনাথ চক্রবর্তী উদ্যোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেন। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এখন কিছুটা সুস্থ। তবে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাননি। মঙ্গলবার জন্মদিন ছিল প্রভাতবাবুর। তবে তাঁকে হাসপাতালের বেডে মনমরা হয়ে বসে থাকতে দেননি টলিউডের আর্ট ডিরেক্টর একতা ভট্টাচার্য। কেক হাতে হাসপাতালে পৌঁছে যান। কেক কেটে সকলকে খাইয়ে দিয়েছেন প্রভাত রায়। মুখের হাসি বলে দিয়েছে, বিশেষ দিনে কেউ অন্তত তাঁকে মনে রেখেছে দেখে তিনি খুশি।
Prabhat ray bangla cinema: স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকে একা
গত বছর এপ্রিল মাসে স্ত্রী জয়শ্রী বন্দ্যোপাধ্যায় মারা যান। তারপর থেকে সম্পূর্ণ একা নিঃসন্তান প্রভাত রায়। ভাইপোরা খোঁজখবর রাখেন। স্ত্রীর মৃত্যুর ধাক্কা তিনি কাটিয়ে উঠতে পারেননি। মানসিকভাবে একা হয়ে পড়েন। এমনিতেই প্রায় ১০ বছর ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে কোন যোগাযোগ নেই। কাজ নেই। ৭৭ বছরের পরিচালক নিঃসঙ্গ একা হয়ে পড়েছিলেন। একসময় বাড়িতে নামীদামী শিল্পীদের আনাগোনা লেগেই থাকত। ‘বউদি’ জয়শ্রীর হাতে খাবার খেতে সবাই খুব ভালোবাসত। সেই ‘বউদি’র মৃত্যুর পর কেউ আসেনি। একমাত্র টোটা রায়চৌধুরী এসেছিলেন। পারলৌকিক কাজে এসেছিলেন রঞ্জিত মল্লিক।
স্ত্রীর মৃত্যু পর ফেসবুকে রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। লিখেছিলেন, “আমি প্রায় ১৫ জন নতুন ছেলেমেয়েকে সুযোগ দিয়েছিলাম। ঋতুপর্ণা, টোটা, রূপা গঙ্গোপাধ্যায় থেকে শুভশ্রী, সায়ন্তিকা। এর মধ্যে তিনজন আমাকে মনে রেখেছে। টোটা, ঋতুপর্ণা আর সায়ন্তিকা শুধুমাত্র খবর রাখে। বাকিরা অকৃতজ্ঞ”। তিনি আরও লেখেন, “জয়শ্রীর মৃত্যুর পর প্রসেনজিৎ আসবে বলেছিল। কিন্তু আসেনি। আসলে যতদিন কাজ ততদিন সবাই মনে রাখে, তারপর ভুলে যায়। অথচ জয়শ্রীকে বউদি বলত প্রসেনজিৎ। ঘর থেকে ওর জন্য খাবার রান্না করেও নিয়ে গিয়েছে জয়শ্রী। আজ সে সব ভুলে গিয়েছে। জিত তো খোঁজ পর্যন্ত নেয়নি ”।
Prabhat ray bangla cinema: হাসপাতালেই জন্মদিন পালন
বাড়িতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় প্রতিবেশীরা খবর দিয়েছিলেন আর পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তীকে। তিনি কিছুটা দূরেই থাকেন। হরনাথ চক্রবর্তী উদ্যোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেন। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এখন কিছুটা সুস্থ। তবে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাননি। মঙ্গলবার জন্মদিন ছিল প্রভাতবাবুর। তবে তাঁকে হাসপাতালের বেডে মনমরা হয়ে বসে থাকতে দেননি টলিউডের আর্ট ডিরেক্টর একতা ভট্টাচার্য। কেক হাতে হাসপাতালে পৌঁছে যান। কেক কেটে সকলকে খাইয়ে দিয়েছেন প্রভাত রায়। মুখের হাসি বলে দিয়েছে, বিশেষ দিনে কেউ অন্তত তাঁকে মনে রেখেছে দেখে তিনি খুশি।
Prabhat ray filmography
প্রতিদান (১৯৮৩)
প্রতিকার (১৯৮৭)
প্রতীক (১৯৮৮)
পাপি (১৯৯০)
অনুতাপ (১৯৯২)
লাঠি (১৯৯৬)
সেদিন চৈত্রমাস (১৯৯৯)
শুধু একবার বলো (১৯৯৯)
খেলাঘর (২০০০)
শুভদৃষ্টি (২০০৫)
পিতৃভূমি (২০০৭)
হ্যাংওভার (২০১০)
No comments:
please do not enter any spam link in the comment box