Mithun Chakraborty first film payment: মেক আপ আর্টিস্ট আমার থেকে বেশি পেতেন ! মিঠুন চক্রবর্তীর প্রথম দিকের পারিশ্রমিক শুনলে অবাক হবেন

মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। আজ তিনি নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এই সাফল্য, প্রতিপত্তি একদিনে অর্জন করেননি তিনি। পরিশ্রম যেমন ছিল, তেমনই ছিল অনেক কষ্ট, অপমান আর চোখের জল। তবে বাংলার ‘টাইগার’ হার স্বীকার করেননি। নিজের জেদ ধরে রেখেছিলেন। আর সেই জেদ আর হাড় ভাঙা পরিশ্রম মিঠুন চক্রবর্তীকে (Mithun Chakraborty) সাফল্যের শীর্ষে নিয়ে গিয়েছে। প্রথম ছবি ছিল মৃণাল সেনের ‘মৃগয়া’। প্রথম ছবিতেই জাতীয় পুরস্কার। মিঠুন চক্রবর্তী ভেবেছিলেন, জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পর বম্বেতে প্রবেশ করা অনেক সহজ হবে। সেই ধারনা ছিল পুরো ভ্রান্ত। বম্বে তখনও বলিউড হয়নি। হিন্দি সিনেমায় রাজত্ব করছেন ধর্মেন্দ্র, রাজেশ খান্না, অমিতাভ বচ্চন। সেই রকম একটি সময়ে কলকাতা থেকে অনেক স্বপ্ন নিয়ে বম্বে যান মিঠুন। প্রথম থেকেই ঘাড় ধাক্কা খেতে শুরু করেন। জিতেন্দ্রের মতো নায়ক তাঁকে দেখে হেসে বলেছিলেন, এ যদি নায়ক হয়, তাহলে আমি অভিনয় ছেড়ে দেব। মাথা নিচু সেই অপমান গিলে ছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। আড়ালে চোখের জলও ফেলেছিলেন। তবে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, কাজ করে এই অপমানের জবাব দেবেন একদিন। প্রকাশ মেহেরার মতো পরিচালকও তাঁকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছিলেন। পরে তিনি মিঠুনকে নিয়ে তৈরি করেছিলেন, গঙ্গা- যমুনা-সরস্বতী (Gangaa Jamunaa Saraswati)। মিঠুন ভক্তরা জানেন, সেই ছবি কত হিট ছিল। কথায় নয়, মিঠুন চক্রবর্তী কাজ করে জবাব দিয়েছিলেন।

READ MOREঅল্পের জন্য রক্ষা পেলেন অভিনেত্রী কাঞ্চনা মৈত্র, ঘটতে পারত ভয়ঙ্কর ঘটনা     

প্রথম পারিশ্রমিক কত ছিল ?

শূন্য থেকে শুরু করেছিলেন। তারপর সদূর এই যাত্রাপথটা মোটেই সুখকর ছিল না। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে আটের দশকে নিজের লড়াইয়ের কথা জানিয়েছেন মিঠুন চক্রবর্তী। কত রাত আধপেটা খেয়ে নিদ্রাহীন কাটিয়েছিলেন তিনি। ১৯৭৯ সালে বসু চট্টোপাধ্যায়ের ‘প্রেম বিবাহ’ ছবিতে প্রথম অভিনয় করেছিলেন। কত পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন ? মিঠুন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, মেক আপ আর্টিস্ট আমার থেকে বেশি পেয়েছিলেন। ওই ছবির জন্য আমি পেয়েছিলাম ৫ হাজার টাকা। আর ওরা পেয়েছিল ৮ হাজারের মতো। টাকা বাঁচাতে তখন ৭৫ টাকার ভাড়ায় একটি বস্তি বাড়িতে থাকতেন। দুটো জামা আর একটা ট্রাউজার ছিল। চেয়েচিন্তে এর ওর কাছ থেকে জুতো জোগাড় করতে পেরেছিলেন। গাড়ির কথা তখন ভাবতে পারতেন না। বাসে যাতায়াত করতেন। তবু হিম্মত হারেননি। লড়াই চালিয়ে যান।

মৃগয়া-এর জন্য জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পর ১৯৭৬ সালে বম্বেতে প্রথম অভিনয় করেন ‘দো আনজানে’ ছবিতে। রেখা আর অমিতাভ বচ্চন অভিনীত এই ছবি ছিল সুপারহিট। ছোট একটি চরিত্র করলেও সবার নজরে পড়েছিলেন মিঠুন। ১৯৭৮ সালে কম বাজেটের ছবি ‘সুরক্ষা’তে নায়ক হিসেবে পর্দায় আসেন মিঠুন চক্রবর্তী। ছবি হিট হয়। তারপর অনেক ছবির অফার পেতে শুরু করেন। কিন্তু পারিশ্রমিক তখন খুব কম ছিল। এইভাবে কয়েক বছর কাটার পর ১৯৮২ সালে ‘ডিস্কো ডান্সার’ মিঠুনকে সুপারস্টার বানিয়েছিল। প্রথম সারীর হিরোদের তালিকায় বসেন তিনি। প্রায় দুবছর চলেছিল ‘ডিস্কো ডান্সার’ (Disco Dancer)। ভারতের পাশাপাশি রাশিয়াতেও তিনি পরিচিতি পান। বক্স অফিসে ১০০ কোটির বেশি আয় করে ‘ডিস্কো ডান্সার’। যেসব পরিচালক- প্রযোজক এতদিন পাত্তা দিতেন না, তাঁরাই তখন বাড়ির বাইরে লাইন দিতে লাগলেন। তবে বাংলাকে কোনদিন ভোলেননি মিঠুন। হিন্দির পাশাপাশি বাংলাতেও অনেক ছবি করেছেন। যার মধ্যে ‘অন্যায় অবিচার’ সিলভার জুবলি করেছিল।

এখনও বুড়ো হাড়ে মুম্বাই এবং কলকাতায় ভেল্কি দেখাচ্ছেন মিঠুন চক্রবর্তী। গত বছরের শেষের দিকে রিলিজ করে ‘প্রজাপতি’। সুপারহিট হয়েছে এই ছবি। ছোট পর্দায় ডান্সের বিচারক হওয়ার পাশাপাশি বড় পর্দায় একাধিক ছবি এখন তাঁর হাতে। বহু বছর পর বাংলাদেশে কাজ করবেন তিনি।

No comments:

please do not enter any spam link in the comment box

Powered by Blogger.