Actress-singer Vijeta pandit story: অকালে স্বামীর মৃত্যুর পর আর্থিক অনটনে পড়েন, কোন আঁধারে হারিয়ে গেলেন অমর সঙ্গীর ঝিলিক

‘চিরদিনই তুমি যে আমার, যুগে যুগে আমি তোমারই’। বাংলা সিনেমার গানের জগতে চির শ্বাশত একটি গান। আর এই গানের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা বাংলা ছবির দর্শকদের ‘অমর সঙ্গী’ হয়ে গিয়েছেন। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় আর বিজয়েতা পণ্ডিত (Vijeta pandit) । মিষ্টি মুখের এই নায়িকা আর বাংলা ছবি না করলেও দর্শকদের মনে ‘অমর’ হয়ে আছেন। গান ছিল প্রধান নেশা। কারণ পরিবারে গায়ক, সঙ্গীত পরিচালকদের ভীড়। সুরকার যতীন-ললিত জুটি সম্পর্কে বিজয়েতার ভাই। অভিনেত্রী-গায়িকা সুলক্ষ্মণা পণ্ডিত তাঁর দিদি। পণ্ডিত যশরাজ সম্পর্কে কাকা। এমন একটি পরিবারের মেয়ে বিজয়েতা ছোট থেকেই গানের জগতে মানুষ। নিজেও ভালো গান গাইতেন। কয়েকটি ছবিতে গানও গেয়েছিলেন। তবে গায়িকা-নায়িকা হিসেবে তিনি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন। কিন্তু দিদির মতো তাঁর ভাগ্য সঙ্গ দেয়নি। হারিয়ে গিয়েছেন গুমনামীর অন্ধকারে। আজ কোথায় আছেন তিনি ? কেমন আছেন ?

১৯৬৭ সালের ২৫ আগস্ট হরিয়ানার হিসার জেলার একটি গ্রামে জন্ম হয় বিজয়েতার। গ্রামে তাঁর পরিবার সঙ্গীত পরিবার নামে খ্যাত ছিল। ছোটতেই মুম্বাই চলে আসেন তিনি। তাঁর রূপ আর গুণে মুগ্ধ হয়ে অভিনেতা রাজেন্দ্র কুমার ১৯৮১ সালে তাঁর ‘লাভ স্টোরি’ ছবিতে ছেলে কুমার গৌরবের বিপরীতে কাস্ট করেন। ছবি বক্স অফিসে দারুণ হিট। একসঙ্গে অভিনয়ের পাশাপাশি কুমার গৌরবের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বিজয়েতার। তিনি তখন শুধুমাত্র কুমার গৌরব ছাড়া আর কারও সঙ্গে অভিনয় করবেন না বলে জানিয়ে দেন। প্রেমিককে হিরো না নিলে তিনি ছবির অফার ফেরাতে থাকেন। তবে সেই প্রেম টিকল না। রাজেন্দ্র কুমার ছেলের প্রেম মেনে নেননি। পারিবারিক কারণে ভেঙে যায় সম্পর্ক। বিজয়েতা আবার সিনেমায় মন দেন। তাঁর পরবর্তী সুপারহিট ছবি ছিল ‘মহব্বত’। নায়ক ছিলেন অনিল কাপুর।

১৯৮৬ সালে ফের প্রেমে পড়েন বিজয়েতা। বিয়ে করেন পরিচালক সমীর মালকানকে। তিনি ‘কার থিপ’ নামের একটি ফ্লপ ছবির ডিরেকশন দিয়েছিলেন। ১৯৮৮ তে সেই বিয়ে ভেঙে যায়। সঙ্গীত পরিচালক আদেশ শ্রীবাস্তবের সঙ্গে সম্পর্ক শুরু হয়। এদিকে পরপর ফ্লপ ছবির জন্য সিনেমার অফার আসা কমতে থাকে। অভিনয় ছেড়ে পুরোপুরি গানে মনোনিবেশ করেন। জো জিতা ওহি সিকেন্দার, কভি হাঁ কভি না, সাজিস, দেব, চিংগারি ইত্যাদি ছবিতে গান গেয়েছেন। হিন্দির পাশাপাশি বাংলায় ১৯৮৭ সালে সুজিত গুহর ‘অমর সঙ্গী’ ছবিতে অভিনয় করেন। সিনেমা ব্লক বাস্টার হিট। প্রসেনজিতের ‘বিয়ের ফুল’ ছবিতে গান গেয়েছিলেন তিনি।

১৯৯০ সালে বিজয়েতা পণ্ডিত বিয়ে করেন আদেশ শ্রীবাস্তবকে। তাঁদের দুই সন্তান অভিনেশ আর অভিতেশ। ২০১০ সালে ক্যান্সার আক্রান্ত হন আদেশ। পরপর দু’বার সুস্থ হলেও ২০১৫ তে ফের আক্রান্ত হন। দীর্ঘ একমাস কোমায় ছিলেন। ৫১তম জন্মদিনের পরদিন ৩১ আগস্ট কোমার মধ্যেই মারা যান সঙ্গীত পরিচালক আদেশ শ্রীবাস্তব। দুই নাবালক ছেলেকে নিয়ে তখন অথৈ জলে পড়েন বিজয়েতা পণ্ডিত। স্বামীর মৃত্যুর পর চরম অর্থকষ্ট গিয়েছে। তবে ধীরে ধীরে সব কিছু সামলে নিয়েছেন তিনি। দীর্ঘদিন তিনি গান বা সিনেমা জগতের বাইরে। শেষ দেখা গিয়েছিল গত বছর স্টার জলসায় জিতের শো ‘ইস্মার্ট জোড়ি’তে । তাঁর নায়ক প্রসেনজিৎ- এর সঙ্গে এসেছিলেন। দীর্ঘদিন পর তাঁকে দেখে নস্টালজিক হয়ে পড়েছিল বাংলা ছবির দর্শক। বলিউড তাঁকে মনে না রাখলেও বাংলা সিনেমায় চিরদিন ‘অমর সঙ্গী’ হয়ে থাকবেন বিজয়েতা পণ্ডিত (Vijeta pandit)

No comments:

please do not enter any spam link in the comment box

Powered by Blogger.