Coromandel train accident: বেজে যাচ্ছে ফোন, ভেসে উঠছে আপনজনের মুখ, এদিকে কেউ ধরছে না

ভাঙা চোড়া, দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া ট্রেনের কামরাগুলি থেকে ভেসে আসছে নানা ধরণের আওয়াজ। যখন থেকে টিভিতে জানানো শুরু হয়েছে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে coromandel express। তখন থেকেই সেই আওয়াজ আর থামছে না। সেই আওয়াজ মোবাইলের রিং টোনের। মৃত্যুপুরী বিভৎসতার মাঝে কখনও বাজছে চেনা কোনও হিন্দি গান। কোথাও কিশোর কুমার, তো কোথাও রবীন্দ্রসঙ্গীত। বেজে বেজে একটা স্ময় ক্লান্ত হয়ে থেমে যাচ্ছে সেই ফোন। কেউ ধরছে না। একসঙ্গে কয়েকশো ফোন চিৎকার করে ডাকছে আপনজনকে। ওপার থেকে বারবার ফোন করে জেনে নিতে চাইছেন, কেমন আছেন প্রিয় মানুষ বা ভাই বা দাদা। কিন্তু কেউ ধরছে না। বেজে বেজে যখন ফোন বলে উঠছে, ‘আপনি যাকে ফোন করেছেন তিনি উত্তর দিচ্ছেন না। দয়া করে কিছুক্ষণ পরে করুন’। কিন্তু এই ‘কিছুক্ষণ’ কী কোনও দিন শেষ হবে ? অপেক্ষা কী ফুরবে ? ওপারের উদ্বিগ্ন মুখগুলি কী খোঁজ পাবে আপনজনের ? উত্তর কেউ জানে না।

দুর্ঘটনাগ্রস্থ করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ভাঙা চোরা কামরাগুলির এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কয়েকশো ফোন। যেগুলি অনবরত বেজেই চলছে। কিছু কিছু ফোন তার মালিকের সঙ্গেই প্রাণত্যাগ করেছে। আবার কিছু ভেঙে গিয়েছে। আর যেগুলি জীবন্ত আছে, তারা চিৎকার করে খুঁজে চলেছে মালিককে। কিন্তু উদ্ধারকারীদের চেঁচামেচি, জখমদের আর্তনাদ ভেদ করে সেই আওয়াজ ফোনের প্রকৃত মালিকের কাছে যাচ্ছে না। ধীরে ধীরে ব্যাটারি শেষ হয়ে নীরব হয়ে যাচ্ছে ফোন। আর তার সঙ্গে সঙ্গে ওপারের মানুষের মনে চিন্তা, উদ্বেগ আর ভয় আরও বেশি করে চেপে বসছে। মনের ভিতর ক্ষীণ আশা ক্রমশ ফুরিয়ে আসছে। তবুও আশায় থাকে মন, হয়তো ভালো খবর আসবে।

শেষ কয়েক সেকেন্ড

ঘড়িতে তখন ৬ টা ৫০। হঠাৎ প্রচণ্ড আওয়াজ হয়ে বিরাট ঝাঁকুনি। যে যেখানে বসে ছিলেন ছিটকে পড়লেন...। দুর্ঘটনার এক সেকেন্ড আগের অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন এক যাত্রী। তিনি অভিশপ্ত ট্রেনের সি ৬ কামরায় ছিলেন। সবাই বসে গল্প করছিলেন। হঠাৎ সেই ঝাঁকুনি দিয়ে থমকে গেল ট্রেন। প্রচন্ড গতি থেমে যাওয়ায় সবাই ছিটকে পড়লেন। তবে তাঁর কামরা অল্প ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সবাই কমবেশি জখম হয়েছেন। বাড়িতে জানিয়েছেন, ভালো আছেন। এখন কবে কীভাবে বাড়ি ফিরতে পারবেন, সেই অপেক্ষায় ওই যাত্রী।

No comments:

please do not enter any spam link in the comment box

Powered by Blogger.