রাণাঘাটের স্টেশন থেকে শুরু হয়েছিল কাহিনী। অবিকল লতা মঙ্গেশকরের কণ্ঠ করে গান গাইতেন রাণূ মণ্ডল। গান শুনে কেউ খুশি হয়ে কিছু দিলে সেই দিয়েই দুবেলা চলে যেত কোনও রকমে। তারপর একদিন ম্যাজিক হল। ফেসবুকে তাঁর গান রেকর্ড করে আপলোড করেন এক ইউজার। ব্যস। আর কী। রাতারাতি ভাইরাল হয়ে গেল সেই গান। রাণাঘাটের ভিখারি রাণু মণ্ডল (Ranu mondal viral) সারা ভারতের হৃদয় জয় করে নিলেন। তাঁর কণ্ঠ শুনে অভিভূত হল সবাই। ডাক এল মুম্বাই থেকে। বিভিন্ন রিয়ালিটি শোতে অতিথি হয়ে এসে গানের পাশাপাশি নিজের কাহিনী শোনাতেন রাণু মণ্ডল। সেখানেই একদিন গায়ক-সঙ্গীত পরিচালক হিমেশ রেশমিয়া কথা দিলেন, রাণু মণ্ডলকে দিয়ে গান গাওয়াবেন। একটি গানে সুযোগও দিলেন। ভালোই গেয়েছিলেন রাণু। গল্প কাহিনীর মতো সেই সফর তারপর যেমনটা এগোনোর কথা ছিল, তেমনটা হল কই ?
ফিরতে হল সেই স্টেশনে
বাংলায় ফিরে দুই একটি গান গাইলেও সেভাবে সুযোগ পেলেন না। অনেকেই বলেন, মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন রাণু মণ্ডল। বর্তমানে ভাঙাচোড়া বাড়িতেই থাকেন। যা উপার্জন করেছিলেন তা মেয়ে এসে নিয়ে গিয়েছে। যে মেয়ে কোনওদিন খবর নিতেন না মায়ের। বিখ্যাত হওয়ার পর সেই মা হলেন পরম আপনার। উপার্জিত টাকা গুছিয়ে নিয়ে গিয়েছেন সেই মেয়ে। এখন প্রায় স্বহায়- সম্বল হীন অবস্থা রাণু মণ্ডলের। কেউ তেমন খবর রাখে না। এতটাই খারাপ অবস্থা যে একবেলা জুটলে অন্যবেলা আর খাবার জোটে না। এরজন্য মানসিক দিক থেকেও ভেঙে পড়েছেন তিনি।সোশ্যাল মিডিয়ায় মাঝে মাঝে অদ্ভূত সাজে ভিডিও করতে দেখা যায় রাণু মণ্ডলকে। কোনওদিন কনের সাজে রিল বানাচ্ছেন। কখনও বিশ্রী সাজ। এসব দেখে অনেকেই কমেন্ট করেন মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন তিনি। অনেকেই মনে করেন, এইভাবে টাকা রোজগার করছেন তিনি। বাস্তব সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখন তাঁর কোনও স্থায়ী রোজগারের মাধ্যম নেই। মাঝে মাঝে কিছু ইউটিউবার আসেন, তাঁদের অনুরোধে অদ্ভূত সাজ সাজেন রাণু মণ্ডল। এই সব কাজ করে বদলে রাণু মণ্ডলকে কেউ খাবার দেয়, কেউ বা টাকা। কারও কাছেই বিশেষ কিছু দাবী করেন না। অল্পতেই খুশি হয়ে যান। আর তাঁর ভিডিও ভাইরাল করে মোটা টাকা রোজগার করেন ইউটিউবাররা।
No comments:
please do not enter any spam link in the comment box