Uttam Kumar movie: কেওড়াতলা মহাশ্মশানে পড়ে থাকা রজনীগন্ধার মালা গলায় শ্যুটিং উত্তমকুমারের, ভয়ে কাঁটা ইউনিট

Uttam Kumar movie: কেওড়াতলা মহাশ্মশানে পড়ে থাকা রজনীগন্ধার মালা গলায় শ্যুটিং উত্তমকুমারের, ভয়ে কাঁটা ইউনিট
আজ ২৪ জুলাই। মহানায়ক উত্তমকুমারের প্রয়াণ দিবস। প্রায় ৪০ বছরের বেশি হয়ে গেল তিনি সশরীরে আমাদের মধ্যে নেই। তবে তিনি আছেন তাঁর অভিনীত সিনেমার মধ্য দিয়ে। অমর হয়ে আছেন তিনি। বাংলা সিনেমা কেন বিশ্বের ইতিহাসে এই দৃষ্টান্ত বিরল। কত যে হিট ছবি তার হিসেব নেই। তারই মধ্যে অন্যতম ‘হারানো সুর’। এই সিনেমার শ্যুটিংয়ে ঘটেছিল মারাত্মক ঘটনা। এই ছবি বিখ্যাত গান ‘তুমি যে আমার, ওগো তুমি যে আমার’। চিরদিনের হিট গান। এই গানে অভিনয় করেন চিরদিনের জুটি উত্তম কুমার ও সুচিত্রা সেন। শ্যুটিং হয়েছিল নিউ থিয়েটার স্টুডিওতে। সেই গানের শ্যুটিংয়ে ঘটেছিল মারাত্মক ঘটনা। যা উত্তম কুমার জীবত অবস্থায় কোনও জানতে পারেননি। জানতেন শুধু পরিচালক অজয় কর। আর ইউনিটের কয়েকজন। কী সেই ঘটনা ? জানব এই প্রতিবেদনে।
Uttam Kumar movie: কেওড়াতলা মহাশ্মশানে পড়ে থাকা রজনীগন্ধার মালা গলায় শ্যুটিং উত্তমকুমারের, ভয়ে কাঁটা ইউনিট

১৯৫৬ সাল। ‘ওগো তুমি যে আমার’ গানের শ্যুটিং হবে। ইন্ডোরে বেশ কিছু শট নেওয়া হয়েছে। একদিন আউটডোরে লং শর্ট দরকার। সন্ধেবেলার দৃশ্য। চাঁদের মায়াবী আলোয় ফুলে ঘেরা বাগানে বসে গান গাইছেন উত্তম- সুচিত্রা। আউটডোর বলতে নিউ থিয়েটার স্টুডিওর ভিতরেই সেট তৈরি করা হল। পাঁচের দশকের টালিগঞ্জের সঙ্গে আজকের ব্যস্ত টালিগঞ্জের মিল খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। চারিদিকে বড় বড় গাছ গাছালি। ফাঁকা জমি। ঘর বাড়ি বলতে তখনও সে অঞ্চলে তেমন বসতি গড়ে ওঠেনি। একটাই বাস চলত। ৬ নম্বর। তাও সন্ধের পর অমিল। তাই রাত হয়ে গেলে শুনশান টালিগঞ্জে রীতিমতো গা ছমছম করত।
Uttam Kumar movie: কেওড়াতলা মহাশ্মশানে পড়ে থাকা রজনীগন্ধার মালা গলায় শ্যুটিং উত্তমকুমারের, ভয়ে কাঁটা ইউনিট

এইরকম অবস্থায় সন্ধে বেলায় শ্যুটিং। ইউনিটের সবাইকে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরানোর চিন্তা। খুব উত্তেজিত পরিচালক অজয় কর। শট নেওয়ার আগে শ্যুটিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী খতিয়ে দেখছেন। সব ঠিক আছে। হঠাৎ খেয়াল হল, আরে মালা তো একটা। চাই তো দুটো। কী হবে এখন ? আশেপাশে ফুলের দোকান তো দূরঅস্ত, বাজার পর্যন্ত নেই। কাছের বাজার বলতে সেই লেক মার্কেট। কিন্তু সেখানও রাতে মালা পাওয়া যাবে, তার কোনও গ্যারিন্টি নেই। এখন একটা মালা কাকে ছেড়ে কাকে দেবেন ? শুধু উত্তম কুমারকে মালা পড়ালে মিসেস সেন রেগে যাবেন। শ্যুটিং ভণ্ডুল হয়ে যেতে পারে। আবার শুধু সুচিত্রাকে দিলে উত্তমও মনোক্ষুন্ন হতে পারে। আর তা ছাড়া চিত্রনাট্য অনুযায়ী চাই দুটি মালা। যেমন ভাবে হোক মালা জোগাড় করার পরামর্শ দিলেন পরিচালক। ইউনিটের একটি ছেলে রওনা হয়ে গেল। এদিকে শট দেওয়ার জন্য তৈরি উত্তম-সুচিত্রা। মেকআপ করে বসে আছেন।

কিছুক্ষণ পর সেই ছেলেটি ফিরে এল। হাতে রজনীগন্ধার মালা। পরিচালকের কানে কানে কিছু কথা জানালেন। সব শুনে অজয় করের চোখ দাঁড়িয়ে গিয়েছে। কিন্তু এদিকে কিছু করার নেই। শট না নিলেই নয়। তাই মুখ বন্ধ রেখে শট নিলেন। উত্তম-সুচিত্রা গলায় মালা পরে শট দিলেন। ভালোই হল। উত্তম কুমার মারা যাওয়ার অনেক বছর পরে পরিচালক এক সাক্ষাৎকারে ফাঁস করেছিলেন, সেদিন সেই ছেলেটি কী বলেছিল ? সে জানিয়েছিল, কোথাও মালা না পেয়ে কেওড়াতলা শ্মশান থেকে মালা কুড়িয়ে এনে উত্তম কুমারকে পরানো হয়েছিল। খুব ভয়ে ছিলেন সেদিন তিনি। উত্তম কুমারের কোনও ক্ষতি না হয়। তাই শট ভালো রাখার জন্য মুখ বন্ধ রেখেছিলেন। অবশ্য উত্তম কুমার জানতে পারলেও শট দিতে অস্বীকার করতেন না। এতটাই পেশাদার ছিলেন মহানায়ক উত্তম কুমার।

No comments:

please do not enter any spam link in the comment box

Powered by Blogger.