৯০-এর দশকের শেষের দিক। তখন টালিগঞ্জে প্রসেনজিৎ, রঞ্জিত মল্লিকদের দাপট চলছে রীতিমতো। নতুন হিরো জিত তখনও পা রাখেননি বাংলা সিনেমায়। ঠিক সেই সময় বাংলা ফিল্মের জগতে প্রবেশ করেন এক হিরো। বিখ্যাত পরিচালক দেবেশ ঘোষের ছেলে লোকেশ ঘোষ (Lokesh ghosh)। খুব অল্প সময়ের মধ্যে বিরাট সাফল্য পেয়েছিলেন। তাঁর আরও এক পরিচয় আছে তিনি প্রয়াত পরিচালক অঞ্জন চৌধুরীর বড় জামাই। যদিও সে পরিচয় এখন আর নেই। অনেক দিন আগেই চুমকি চৌধুরীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। ১৯৯৭ সালে অঞ্জন চৌধুরীর ‘নাচ নাগিনী নাচ রে’ ছিল তাঁর প্রথম সিনেমা। যদিও দর্শক তাঁকে মনে রেখেছে ‘লোফার’ হিসেবে। বিখ্যাত বাবার ছেলে হওয়ার কোনও সুবিধা তিনি পাননি। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে লোকেশ জানিয়েছেন, বাবা ফোন করে প্রযোজকদের জানিয়ে দিতেন, তাঁকে যেন কাস্ট করা না হয় ! নিজের চেষ্টায় তিনি এতদূর আসতে পেরেছেন। কিন্তু এখন কোথায় হারিয়ে গেলেন বাংলা সিনেমার হিরো (Lost actor) লোকেশ ঘোষ ?
৯০-এর দশকের শেষ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত টানা কাজ করেছেন লোকেশ। তবে তাঁর প্রতিপত্তি সবকিছুর পিছনে বড় অবদান ছিল অঞ্জন চৌধুরীর। নিজেও সেকথা স্বীকার করেন, টলিউডে তিনি যত টুকু বড় হতে পেরেছিলেন সেটা অঞ্জন চৌধুরী না থাকলে সম্ভব হত না। লোকেশকে তিনি খুব ভালোবাসতেন। তাই তো নিজের বড় আদরের মেয়ে চুমকি চৌধুরীর সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন লোকেশের। কিন্তু অভিনেতার ব্যক্তিগত জীবন মোটেই সুখের হয়নি। ২০০৪ সালে বাবা মারা যান। বাবার সম্পত্তির কানাকড়িও তিনি পাননি। পুরোটাই ঠকিয়ে নিয়েছিলেন দিদি। এদিকে চুমকি চৌধুরীর সঙ্গেও দূরত্ব বাড়তে থাকে। জানা যায়, লোকেশের অতিরিক্ত মদ্যপানের জন্য তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন চুমকি। তাঁদের একটা মেয়েও আছে। তিনি মায়ের সঙ্গেই থাকেন।
লোকেশের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর চুমকি আবার বিয়ে করেছেন। স্ত্রী-কন্যা হারিয়ে এখন নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন। ২০০৪ সাল থেকে ধীরে ধীরে হারিয়ে যান লোকেশ। তাঁকে আর কোনও সিনেমায় দেখা যায়নি। এখন যাত্রা করেন। তিনি জানিয়েছেন, জীবনে লরির দালালি থেকে হোটেল ব্যবসা সবকিছু করেছেন। কিন্তু তাঁর প্রকৃত ভালোবাসা সিনেমা। আবার সিনেমায় ফিরতে চান তিনি। ইন্টারভিউয়ে তিনি জানান, কিছু সিনেমা তাঁর মুক্তি পাবে শীঘ্রই। বাংলা সিনেমা আবার ফিরে পাবে তার হারিয়ে যাওয়া নায়ককে।
No comments:
please do not enter any spam link in the comment box