দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জাঁয়েগে (Dilwale Dulhania Le Jayenge) -এর সময় শাহরুখ খানের বয়স কত ছিল ? ২৮ বছর আগের স্মৃতি ফিরছে বড় পর্দায়
হলুদ সর্ষের খেতে সাদা পোষাকে দৌড়ে আসছেন কাজল ওরফে সিমরান। হঠাৎ একটি গোরুর গলায় চেনা ঘণ্টার ধ্বনি শুনে থমকে যান । আর তখনই ভেসে আসে –‘তুঝে দেখা তো এ জানা সনম’। কুমার শানুর গলায় চির রোমান্টিক সেই গানে ঠোঁট মেলাচ্ছেন শাহরুখ খান। এতদূর বর্ণনা শুনে কারও বুঝতে বাকি নেই কোন ছবির কথা বলছি । ভারতীয় সিনেমার সর্বকালীন সেরা হিট ছবি ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জাঁয়েগে’(Dilwale Dulhania Le Jayenge )। সংক্ষেপে DDLG । হিন্দিতে রোমান্টিক সিনেমা অনেক তৈরি হয়েছে। কিন্তু টানা ২০ বছর ধরে একটি হলে চলেছে এমন উদাহরণ এদেশে কেন, বিদেশেও নেই। হিট ছবি আর চিরকালীন ক্লাসিক সিনেমার মধ্যে অনেক তফাৎ । দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জাঁয়েগে- ক্লাসিক সিনেমার তকমা পেয়েছে। দু’দিন পরে ভ্যালেন্টাইন ডে । মানে ভালোবাসার দিন। সারাবছর বেজায় ব্যস্ত বিদেশীরা এই একটি দিনে ভালোবাসা উদযাপন করেন । বিশ্বায়নের যুগে সেই উদযাপনের ঢেউ এদেশের কিশোর-কিশোরী বা প্রেমিক-প্রেমিকাদের মনেও লেগেছে। ফাল্গুন মাসের প্রথম দিনে যখন আকাশে-বাতাসে বসন্তের আগমণ ঘটে। তখন পলাশের গৈরিক বর্ণে প্রেমের ছোঁয়া লাগে। ফাল্গুনের সেই প্রথম দিনেই উদযাপিত হয় ভ্যালেন্টাইন ডে। এমন একটি দিনকে বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহারে কোন খামতি থাকে না। রেস্তরাঁ থেকে গয়নার দোকান- প্রত্যকেই উঠে পড়ে লাগে। পিছিয়ে থাকবে কেন সিনেমা শিল্প। ভ্যালেন্টাইন ডে’র কথা মাথায় রেখে যশরাজ ফিল্ম মাঠে নামল । তাদের ‘পাঠান’ বক্সঅফিসে ঝড় তুলেছে। রেকর্ড সৃষ্টি করেই চলেছে । ইতিমধ্যেই কয়েকশো কোটি টাকা ঘরে তুলে ফেলেছে যশরাজ। লাভের উপর এক্সট্রা লাভ হলে ক্ষতি কি ? সেই কথা মাথায় রেখেই ২৮ বছর পর নতুন করে রিলিজ হল- দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জাঁয়েগে। গত শুক্রবার রিলিজ হয়েছে দেশের কয়েকটি নির্দিষ্ট মাল্টিপ্লেক্সে। ব্যবসার দিক থেকে ফের একবার যশরাজের মুখে হাসি ফুটিয়েছে ডিডিএলজি।
·
Shooting- ১৯৯৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৯৫-এর আগস্ট পর্যন্ত ছবির শ্যুটিং চলে । শ্যুটিং হয়েছিল ইংল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড এবং ভারতে। ‘তুঝে দেখা তো ইয়ে... গানের শ্যুটিং হয় রাজধানী দিল্লির কাছে একটি সরষের ক্ষেতে । শাহরুখ -কাজলকে দেখার জন্য এত ভীড় হয়েছিল যে শ্যুটিং করতে খুব সমস্যা হয় । ছবির শেষ দৃশ্য যেখানে কাজল দৌড়ে গিয়ে শাহরুখের হাত ধরবে ট্রেনে-সেই দৃশ্যের শ্যুটিং করতেও গিয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। কারণ, প্রচণ্ড গরম । অনেকবার রিটেক হয় । আর প্রত্যেক রিটেকে ট্রেন আবার নিজের জায়গায় ফিরতে ২০ মিনিট করে সময় লাগায়। যার ফলে শ্যুটিংয়ে অনেক দেরি হয় । সিনেমার অধিকাংশ গান কোরিওগ্রাফি করেছিলেন সরোজ খান। কিন্তু শেষের দিকে নানা কারণে পরিচালকের সঙ্গে ঝামেলা হয় । তিনি সিনেমা ছেড়ে বেরিয়ে যান । বদলে ফারহা খান কোরিওগ্রাফি করেন । অনেকেই জানে না, ছবির নাম ‘Dilwale Dulhania Le Jayenge’ রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন কিরণ খের। অনুপম খেরের স্ত্রী। ১৯৭৪ সালের ‘ চোর মাচায়ে শোর’ ছবির গানের লাইন ছিল দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জাঁয়েগে। প্রথম কোন ভারতীয় ছবিতে টাইটেল ক্রেডিট দেওয়া হয়েছিল।
· Release- সিনেমা রিলিজ করে ২০ অক্টোবর , দীপাবলি আগে। সেই সময় শাহরুখ খানের বয়স ছিল মাত্র ৩০। পরিচালক আদিত্য চোপড়া ঠিক করেন হলিউডের মতো এই সিনেমার মেকিং আলাদা করে তথ্যচিত্র আকারে ধরে রাখবেন। বন্ধু করণ জোহরের সাহায্যে ছবির মেকিং নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি হয় । রিলিজের দুদিন আগে ১৮ অক্টোবর সেই তথ্যচিত্র দূরদর্শনের পর্দায় দেখানো হয়।
·
Box office- রিলিজের এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যাপক সাড়া মেলে। তখন ইন্টারনেটের যুগ ছিল না। প্রচারের এত মাধ্যমও তৈরি হয়নি । রিলিজের পর মুখে মুখে প্রচার হতো। আর দূরদর্শনে ‘সুপারহিট মোকাবিলা’ গানের অনুষ্ঠানে ২ মিনিট গান সম্প্রচারিত হত । তা সত্ত্বেও দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জাঁয়েগে ছিল ১৯৯০ দশকে দ্বিতীয় বৃহত্তম উপার্জনকারী সিনেমা। প্রথম অবশ্যই ‘হাম আপকে হ্যায় কৌন’। তবে ভারতের মধ্যে এখনও পর্যন্ত সবথেকে বেশি আয় করেছে Dilwale Dulhania Le Jayenge। সারা বিশ্বে এই ছবির বক্স অফিস কালেকশন ছিল ২ বিলিয়ন ডলার। মানে ২০০ কোটি ডলার। ১৯৯৫ সালে রিলিজের পর থেকে মুম্বাইয়ের ‘মারাঠা মন্দির’ সিনেমা হলে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ডিডিএলজি চলেছিল। এর পরই গিনেশ বুকে নাম ওঠে Dilwale Dulhania Le Jayenge-এর। এই সিনেমা ১০ টি ফিল্ম ফেয়ার এবং সেরা বিনোদনমূলক ছবি হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিল।
Unknown facts about Dilwale Dulhania Le Jayenge
· Script- আদিত্য চোপড়া পরিচালনায় আসার আগে বাবা যশ চোপড়ার সহকারী ছিলেন। চাঁদনী , লমহে বা ডর (১৯৯৩) ছবিতে অ্যাস্টিট করেছিলেন । তখনই তিনি Dilwale Dulhania Le Jayenge -এর চিত্রনাট্য লিখেছিলেন। লিখতে প্রায় তিন বছর সময় লাগে। একদিন বাবাকে নিজের স্ক্রিপ্ট পড়ে শোনান। সব শুনে বাবা যশ চোপড়া পরামর্শ দেন, লেখার পাশাপাশি পরিচালনাতেও নামুন আদিত্য। একই সঙ্গে বলেন , শেষে কিছুটা পরিবর্তন করতে। নায়ক রাজ নায়িকাকে পালিয়ে নিয়ে গিয়ে বিয়ে নয় বরং বাবার অনুমতি নিয়ে বিয়ে করুক । কারণ এটাই ভারতীয় সংস্কৃতি । বাধ্য ছেলের মতো চিত্রনাট্যে পরিবর্তন করেছিলেন আদিত্য। আর ছবির শেষের সেই দৃশ্য আজও দর্শকদের আবেগতাড়িত করে।· Casting-চিত্রনাট্য তো তৈরি কিন্তু অভিনয় কারা করবেন ? এই নিয়ে বিস্তর মাথা ঘামাতে হয় পরিচালক আদিত্যকে। তিনি নায়ক হিসেবে চেয়েছিলেন হলিউড অভিনেতা টম ক্রুজকে। কিন্তু বাবা যশ চোপড়া সরাসরি না বলেন । তাঁর যুক্তি ছিল, বিদেশী নয় ভারতীয় ছবিতে নায়ক হবে খাঁটি দেশী। প্রথম পচ্ছন্দ ছিল শাহরুখ খান। কিন্তু তিনি স্ক্রিপ্ট শুনে এককথায় ‘না’ বলেন । শাহরুখের যুক্তি ছিল, বাজিগর বা ডর ছবিতে তাঁর নেগেটিভ ইমেজ মানুষ পচ্ছন্দ করছে । এখন হঠাৎ করে রোমান্টিক ফিল্ম করলে দর্শক নাও নিতে পারে। তখন আদিত্য সইফ আলি খানের কাছে যান । কিন্তু কোন অজানা কারণে তিনি রাজি হননি । না বলেন আমির খানও। বাকি ছিলেন শুধু সালমান খান। কিন্তু তাঁর কাছে যাওয়ার আগে আদিত্য ফের একবার শাহরুখকে অ্যাপ্রোচ করেন । এক সপ্তাহে পরপর চারবার শাহরুখের সঙ্গে মিটিং করেন তিনি। শেষে যান যশ চোপড়া এবং আদিত্যর মা পামেলা চোপড়া। তাঁরা শাহরুখকে বলেন , যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি মেয়েদের স্বপ্নের প্রেমিক এবং প্রত্যেক মায়ের স্বপ্নের ছেলে হতে পারছ, ততক্ষণ পর্যন্ত সুপারস্টার হতে পারবে না। কথাটা শাহরুখের খুব মনে ধরে । তিনি রাজি হয়ে যান । নায়িকা সিমরনের চরিত্রে প্রথম পচ্ছন্দ ছিল কাজল। তিনি এক কথায় হ্যাঁ বলেন ।
·

Shooting- ১৯৯৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৯৫-এর আগস্ট পর্যন্ত ছবির শ্যুটিং চলে । শ্যুটিং হয়েছিল ইংল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড এবং ভারতে। ‘তুঝে দেখা তো ইয়ে... গানের শ্যুটিং হয় রাজধানী দিল্লির কাছে একটি সরষের ক্ষেতে । শাহরুখ -কাজলকে দেখার জন্য এত ভীড় হয়েছিল যে শ্যুটিং করতে খুব সমস্যা হয় । ছবির শেষ দৃশ্য যেখানে কাজল দৌড়ে গিয়ে শাহরুখের হাত ধরবে ট্রেনে-সেই দৃশ্যের শ্যুটিং করতেও গিয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। কারণ, প্রচণ্ড গরম । অনেকবার রিটেক হয় । আর প্রত্যেক রিটেকে ট্রেন আবার নিজের জায়গায় ফিরতে ২০ মিনিট করে সময় লাগায়। যার ফলে শ্যুটিংয়ে অনেক দেরি হয় । সিনেমার অধিকাংশ গান কোরিওগ্রাফি করেছিলেন সরোজ খান। কিন্তু শেষের দিকে নানা কারণে পরিচালকের সঙ্গে ঝামেলা হয় । তিনি সিনেমা ছেড়ে বেরিয়ে যান । বদলে ফারহা খান কোরিওগ্রাফি করেন । অনেকেই জানে না, ছবির নাম ‘Dilwale Dulhania Le Jayenge’ রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন কিরণ খের। অনুপম খেরের স্ত্রী। ১৯৭৪ সালের ‘ চোর মাচায়ে শোর’ ছবির গানের লাইন ছিল দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জাঁয়েগে। প্রথম কোন ভারতীয় ছবিতে টাইটেল ক্রেডিট দেওয়া হয়েছিল।
· Release- সিনেমা রিলিজ করে ২০ অক্টোবর , দীপাবলি আগে। সেই সময় শাহরুখ খানের বয়স ছিল মাত্র ৩০। পরিচালক আদিত্য চোপড়া ঠিক করেন হলিউডের মতো এই সিনেমার মেকিং আলাদা করে তথ্যচিত্র আকারে ধরে রাখবেন। বন্ধু করণ জোহরের সাহায্যে ছবির মেকিং নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি হয় । রিলিজের দুদিন আগে ১৮ অক্টোবর সেই তথ্যচিত্র দূরদর্শনের পর্দায় দেখানো হয়।
·

Box office- রিলিজের এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যাপক সাড়া মেলে। তখন ইন্টারনেটের যুগ ছিল না। প্রচারের এত মাধ্যমও তৈরি হয়নি । রিলিজের পর মুখে মুখে প্রচার হতো। আর দূরদর্শনে ‘সুপারহিট মোকাবিলা’ গানের অনুষ্ঠানে ২ মিনিট গান সম্প্রচারিত হত । তা সত্ত্বেও দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জাঁয়েগে ছিল ১৯৯০ দশকে দ্বিতীয় বৃহত্তম উপার্জনকারী সিনেমা। প্রথম অবশ্যই ‘হাম আপকে হ্যায় কৌন’। তবে ভারতের মধ্যে এখনও পর্যন্ত সবথেকে বেশি আয় করেছে Dilwale Dulhania Le Jayenge। সারা বিশ্বে এই ছবির বক্স অফিস কালেকশন ছিল ২ বিলিয়ন ডলার। মানে ২০০ কোটি ডলার। ১৯৯৫ সালে রিলিজের পর থেকে মুম্বাইয়ের ‘মারাঠা মন্দির’ সিনেমা হলে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ডিডিএলজি চলেছিল। এর পরই গিনেশ বুকে নাম ওঠে Dilwale Dulhania Le Jayenge-এর। এই সিনেমা ১০ টি ফিল্ম ফেয়ার এবং সেরা বিনোদনমূলক ছবি হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিল।
No comments:
please do not enter any spam link in the comment box