কেন ছেলেকে কোনও দিন অভিনেতা হতে দেননি uttam kumar ? কারণ জানলে অবাক হবেন

তিনি অমর। মৃত্যুর ৪৩ বছর পরেও তিনি অমর হয়ে আছেন। শুধুমাত্র তাঁর কাজ তাঁকে ‘চিরদিনের’ করে রেখে দিয়েছে। সেই হাসি, তাকানো বা সংলাপ বলার ধরণ বাঙালি ভুলতে পারে না। বিশ্বের ইতিহাসে শুধুমাত্র সিনেমা দিয়ে কোনও ব্যক্তি এত দিন পরেও অমর হয়ে আছেন, তার উদাহরণ বিরল। প্রজন্মের পর প্রজন্ম পাল্টে গিয়েছে। কিন্তু বাঙালি তার মনে uttam kumar নামক অধ্যায়ের পরিবর্তন করেনি। কত নায়ক এসেছেন বা গিয়েছেন, কিন্তু কেউ উত্তম কুমারের মতো হয়ে উঠতে পারেনি। তাঁর নাতি গৌরব চট্টোপাধ্যায়ও সিনেমা জগতে পা রেখেছেন। সিরিয়াল করে তিনি ভালো সুনাম অর্জন করেছেন। কিন্তু সিনেমাতে তিনি তেমন পাত্তা করতে পারেননি। নাতি অভিনয়ে এলেও ছেলে গৌতম চট্টোপাধ্যায়কে কোনও দিন টালিগঞ্জ পাড়ায় যেতে দেননি উত্তম কুমার। এর পিছনে ছিল একটি গভীর তাত্ত্বিক বোধ।

কেন আপত্তি করে ছিলেন ?

পড়াশোনা শেষ করার পর বাবার মতো গৌতম চট্টোপাধ্যায় সিনেমায় আসার কথা ভেবেছিলেন। উত্তম কুমারের বিরাট স্টারডম দেখে নিজেও হিরো হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। ভেবেছিলেন বাবার পথেই এগিয়ে যাবেন। আসলে উত্তম কুমারের মতো নায়ক হওয়ার স্বপ্ন তখন অনেক যুবক দেখত। গৌতমও তাদের মধ্যে একজন। সেই ভাবনা নিয়ে বাবা উত্তম কুমারের কাছে গিয়েছিলেন তিনি। বাবার সঙ্গে আলোচনা করেই এগতে চেয়েছিলেন। সিনেমার অফার যে আসেনি তাও নয়। ‘অন্ধ অতীত’ নামের একটি ছবি দিয়ে ডেবিউ করার কথা ছিল গৌতমের। এই নিয়েই বাবার সঙ্গে পরামর্শ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাবার পরামর্শ তাঁকে হতাশ করে। সব কিছু শুনে বাবা উত্তম কুমার ছেলেকে সিনেমা থেকে সরে আসতে বলেন। বাবার কথা শুনে আকাশ থেকে পড়েন গৌতম।

অভিনেতার ছেলে অভিনেতা হবেন, এটাই স্বাভাবিক। বর্তমানে স্টারকিডদের বাজার। কিন্তু তখন সময়টা এমন ছিল না। বাঙালির মহানায়ক তাঁর ছেলেকে বুঝিয়ে ছিলেন, অভিনেতাদের জীবন আতসবাজির মতো। যতদিন জ্বলজ্বল করবে, আলো দিতে পারবে, ততদিন কদর। আলো একবার ফুরিয়ে গেলে সব শেষ। তখন আর কেউ জিজ্ঞাসা পর্যন্ত করবে না। প্রথমে বাবার কথা মানতে রাজি ছিলেন না গৌতম। দীর্ঘক্ষণ আলোচনার পর তিনি বাবার কথা বুঝতে পারেন। আর কোনওদিন অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন দেখেননি। উত্তম কুমার ছেলেকে ওসুধের দোকান খুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য বশত সেটাও তেমনভাবে চালাতে পারেননি গৌতম চট্টোপাধ্যায়। খুব অল্প বয়সেই তিনি পৃথিবী ছেড়ে চলে যান।

No comments:

please do not enter any spam link in the comment box

Powered by Blogger.